• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ৫, ২০১৯, ০৯:৩১ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ৫, ২০১৯, ০৯:৩১ এএম

লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌ-রুট

ঝুঁকি নিয়ে মাছ ধরার ট্রলারে যাত্রী পারাপার

ঝুঁকি নিয়ে মাছ ধরার ট্রলারে যাত্রী পারাপার

লক্ষ্মীপুর মজুচৌধুরীরহাট-ভোলা নৌ-রুট, মতিরহাট ও আলেকজান্ডার এলাকা থেকে মাছ ধরার ট্রলারে করে নদী পার হচ্ছেন যাত্রীরা। তিনটি ফেরির একটি বিকল হওয়ায় যাত্রীরা নিরুপায় হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রলারে করে বাড়ি ফিরছেন। ১৫ মার্চ থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত ট্রলারে চলাচল নিষেধাজ্ঞা জারি করে বিআইডব্লিউটিএ। কিন্তু কিছু অসাধু মালিকরা নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ট্রলার দিয়ে যাত্রী পারাপার করছেন। এতে করে যে কোন মুহুর্তে নৌ-দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।  

জানা গেছে, আষাঢ়-শ্রাবণ ২ মাস মেঘনা নদী থাকে চরম উত্তাল। বর্ষা মৌসুমে ট্রলারে করে যাত্রী পারাপার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কিন্তু ফেরি বন্ধ থাকায় এক শ্রেণির ট্রলার মালিকেরা লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌ-রুটে যাত্রী পারাপার করছে। ভোলা ও লক্ষ্মীপুরের রামগতির আলেকজান্ডার হয়ে-হাতিয়া, গজারিয়া, দৌলতদিয়াসহ বরিশাল যাতায়াত করছে হাজার হাজার মানুষ। 

অভিযোগ রয়েছে, বাঁশের ওপর দিয়ে যাত্রীদেরকে নৌকা ও ট্রলারে উঠা নামা করা হচ্ছে। ট্রলারে উঠতে গিয়ে অনেকে দুর্ঘটনার শিকারও হয়েছেন। মাছ ধরার ট্রলারে করে নদী পার হতে গিয়ে নৌকা উল্টে রমিজুল নামের এক যাত্রী ইতিপূর্বে মারা গেছেন। প্রতিটি যাত্রীবাহী ইঞ্জিন চালিত ট্রলার ও নৌকায় লাইফ জ্যাকেট থাকার নিয়ম থাকলে বাস্তবে দুই একটি ছাড়া অন্যগুলোতে নেই। পুলিশ এসব অনিয়ম দেখেও না দেখার ভান করে থাকেন। নৌ-পুলিশ প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এসব ট্রলার ও নৌকা চলাচল করছে বলে জানা গেছে।  

ট্রলারের যাত্রী ও ভোলা এলাকার বাসিন্দা মফিজুল ইসলাম জানান, তিনি চট্টগ্রাম থেকে ভোলায় যাচ্ছেন। সি ট্রাক ও ফেরি না পেয়ে বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে ছোট মাছ ধরার কাঠের ট্রলার করে ভোলার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন। 

ভোলার বাসিন্দা আবুল কাশেম বলেন, তিনি লক্ষ্মীপুরে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করছেন। তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করে সি ট্রাক না পেয়ে ট্রলারে করে লক্ষ্মীপুরে এসেছেন।  

স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি নাম প্রকাশ না করা শর্তে জানান, প্রশাসনকে নিয়মিত মাসোহারা দিয়েই প্রভাবশালী মহল অবৈধভাবে যাত্রী পারাপার করছেন। এতে যে কোন সময়ই বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশংকা রয়েছে।  

ট্রলার মালিক সহিদ জানান, প্রতি যাত্রীর কাছ থেকে দেড়শ থেকে ২শ টাকা করে ভাড়া নিয়ে ভোলার উদ্দেশ্যে মেঘনা পাড়ি দিচ্ছেন। প্রতি ট্রলারে ২০-৩০ জন করে যাত্রী বহন করছেন। 

রামগতি বড় খেরীর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আব্দুল্যাহ আল মামুন জানান, প্রশাসনের সাথে যোগসাজসের বিষয়টি সত্য নয়। এখন নদী উত্তাল, আমাদের অগোচরে কিছু ট্রলার যাত্রী পারপার করছে। অবৈধভাবে ট্রলার যেন চলতে না পারে সে ব্যাপারে আমরা সজাগ রয়েছি। 

বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তাদের বরাদ দিয়ে লক্ষ্মীপুরের দায়িত্বরত বিআইডব্লিউটিসির মজুচৌধুরীরহাট ফেরিঘাট এর সহকারী পরিচালক মো. কাউছার জানান, নৌপথে দুর্ঘটনা এড়াতে প্রতি বছর ১৫ মার্চ থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত মেঘনা নদীতে ছোট ছোট এমএল সাইজের সব ধরনের লঞ্চ ও মাছ ধরার ট্রলার চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বিআইডব্লিউটিএ। 

লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ সুপার আসম মাহাতাব উদ্দিন জানান, সময়ের চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক বেশি। ‘বর্ষা মৌসুমে ট্রলারে চলাচল করলে যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই সরকার অঘোষিত বাহনে না চলাচল করার পরামর্শ দেন তিনি। এছাড়া অসাধু মালিকরা যেন ট্রলারে যাত্রী পারাপার করতে না পারে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

কেএসটি