• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ৬, ২০১৯, ১২:২০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ৬, ২০১৯, ১২:২০ পিএম

আজ কাঁটাখালী গণহত্যা দিবস

আজ কাঁটাখালী গণহত্যা দিবস

আজ শনিবার (৬ জুলাই) শেরপুরের ঐতিহাসিক কাটাখালী গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার রাঙামাটি খাটুয়াপাড়া গ্রামে পাকবাহিনীর নারকীয় হত্যাযজ্ঞে শহীদ হন ৯ জন মুক্তিযোদ্ধা। কিন্তু স্বাধীনতার ৪৮ বছরেও শহীদদের স্মৃতিতে নির্মিত হয়নি কোন স্মৃতিস্তম্ভ বা নামের তালিকা। 

জানা যায়, ১৯৭১ সালের জুলাই মাসের ৪ তারিখ শনিবার ভোরে কোম্পানি কমান্ডার নাজমুল আহসানের নেতৃত্বে ৫৩ জনের মুক্তিযোদ্ধার দল অবস্থান নেন মালিঝি ইউনিয়নের রাঙামাটিয়া গ্রামে আতর আলীর বাড়িতে। পরিকল্পনামতে ৫ জুলাই রাতে সফলতার সাথে অপারেশন শেষ করে মুক্তিযোদ্ধারা দু’টি দলে বিভক্ত হয়ে আশ্রয় নেয় খাটুয়াপাড়ার হাজী নঈমদ্দিন ও হাজী শুকুর মামুনদের বাড়িতে। বাড়ির চারপাশে ছিল প্রশস্ত বিল। মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থান টের পেয়ে এলাকার রাজাকার জালালউদ্দিন মিস্ত্রি তার ছোট ভাই হক আলী শেরপুরের তৎকালীন ছাত্রসংঘের নেতা মুহাম্মদ কামারুজ্জামানসহ ঝিনাইগাতী আহম্মদ নগর পাকিস্তানী ক্যাম্পে খবর দেয়। 

৬ জুলাই সোমবার সকালে কেউ কিছু বুঝে উঠার আগেই গ্রামে প্রবেশের একটি মাত্র কাঁচা সড়কের দু’দিক থেকে ব্যারিকেড দেয় পাকসেনা ও রাজাকার আলবদররা। গ্রামবাসীদের অনুরোধে মুক্তিযোদ্ধারা বিলের পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মরক্ষার্থে গুলি করতে করতে পিছু হটে। ওই সময় পাক-হানাদারদের বেপরোয়া গোলা বর্ষণে কোম্পানি কমান্ডার ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অনুষদের শেষ বর্ষের মেধাবী ছাত্র নাজমুল আহসান, তার চাচাত ভাই মোফাজ্জল হোসেন ও ভাতিজা আলী হোসেন শহীদ হন। বাকি মুক্তিযোদ্ধারা নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধান পেলেও বর্বরোচিত হামলার শিকার হন খাটুয়াপাড়া রাঙ্গামাটিয়া গ্রামের বাসিন্দারা। তাদের ৬০/৭০ জনকে কোমরে দড়ি বেঁধে লাঠিপেটা করতে করতে নিয়ে যাওয়া হয় খাটুয়াপাড়া সরকারি রেজিষ্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে। পাক-হানাদার বাহিনীর দল আগুন লাগিয়ে দেয় ওই এলাকার বাড়িঘরে। সম্ভ্রমহানি করে কয়েকজন নারীর। ওইসময় অমানবিক নির্যাতন করে লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে গ্রামবাসী আয়াতুল্ল্যা, সামেছ মিস্ত্রি, মহেন্দ্র অধিকারী, আব্বাছ আলী, আমেজ উদ্দিন ও বাদশা আলীকে। ওইসময় আহত হন অনেকেই। দালালদের বাঁধার মুখে সেদিন লাশও দাফন করতে পারেননি শহীদদের স্বজনরা। কলার ভেলায় স্বজনরা সেই লাশ ভাসিয়ে দিয়েছিলেন নদীতে। স্বাধীনতার ৪৮ বছরেও শহীদদের স্মরণে নির্মিত হয়নি কোন স্মৃতিস্তম্ভ বা নামের তালিকা।

শেরপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার নুরুল ইসলাম হিরো বলেন, ঐতিহাসিক কাটাখালী গণহত্যা দিবসে কাঁটাখালী ব্রিজে ও শহীদ নাজমুল আহসান বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। শহীদদের স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ বা নামের তালিকা করা দরকার।

কেএসটি