• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ৮, ২০১৯, ০৪:৪৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ৮, ২০১৯, ০৪:৫১ পিএম

পানিতে নিমজ্জিত সড়ক দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যান চলাচল!

পানিতে নিমজ্জিত সড়ক দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যান চলাচল!

ঋতুর পরিক্রমায় বাংলাদেশের প্রকৃতিতে চলছে বর্ষাকাল। একটু একটু করে বর্ষা সাজছে তার চিরচেনা রূপে। নদ-নদী, খাল বিল বর্ষার পানিতে টইটম্বুর। ডুবেছে মাঠ-ঘাট, এমনকি বর্ষার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে গ্রামীণ কাঁচা, আধা কাঁচা ও পাকা রাস্তাগুলো। আর এইসব ডুবে যাওয়া রাস্তা দিয়েই এক শ্রেণির লোভি প্রকৃতির অটোরিক্সা চালকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাত্রী আনা-নেওয়া করছেন। এতে যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। হবিগঞ্জ একটি হাওর অঞ্চলিয় জেলা। মাঠ-ঘাট ডুবে যাওয়ায় এখানে অধিকাংশ গ্রামগুলোতেই বর্ষা মৌসুমে ইঞ্জিনচালিত নৌকা দিয়ে আসা যাওয়া করতে হয়। তবে শুষ্ক মৌসুমে এইসব গ্রামে যাওয়ার জন্য মূলত তিন ধরনের রাস্তা ব্যবহার করা হয়। কোন কোন গ্রামে কাচা রাস্তা, কোন গ্রামে আধা কাঁচা আবার কোন গ্রামে পাঁকা রাস্তা রয়েছে। তবে সেগুলো ৬ মাসি রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করা হয়। অর্থাৎ বর্ষা মৌসুমে এই রাস্তাগুলো ডুবে যায়। তখন ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াতকারী লোকজনের নৌকাই একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়ায়।

এদিকে, ডুবে যাওয়া রাস্তা দিয়েই একশ্রেণির লোভি প্রকৃতির অটোরিক্সা চালকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাত্রী আনা-নেওয়া করছেন। সোমবার (৮ জুলাই) সকালে এমন দৃশ্য দেখা যায় জেলার লাখাই উপজেলার ডিসি সড়কে। লাখাই বাজার থেকে চিকনপুর ব্রিজ পর্যন্ত তিন কিলোমিটার রাস্তা পাঁকা করা। কিন্তু নিম্নাঞ্চলের হওয়ায় প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে পানিতে তলিয়ে যায় রাস্তাটি। কিন্তু অটোরিক্সা চালকরা বেশি ভাড়া আদায়ের লোভে পানিতে ডুবে যাওয়া রাস্তা দিয়েই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাত্রী আনা নেওয়া করছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, পানির নিচে তলিয়ে যাওয়া ৩ কিলোমিটার সড়কের কোন অংশই দৃশ্যমান নয়। স্থানীয়দের ভাষ্য এই রাস্তায় রয়েছে একাধিক ভাঙা। আর দীর্ঘদিন ধরে পানিতে তলিয়ে যাওয়ার কারণে পাকা অংশ ছাড়া রাস্তার দু’পাশের মাটি নরম হয় আছে। সেই সাথে রাস্তার দু’পাশে খাল-বিলসহ রয়েছে একাধিক কালভার্ট। ডুবে যাওয়া রাস্তা দিয়ে চলতে গিয়ে প্রায় সময়ই ঘটছে ছোট ছোট দুর্ঘটনা। তারপরও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিনই চলছে সিএনজি, টমটম অটোরিক্সাগুলো। আর সময় বাঁচাতে কোলের শিশুসহ বৃদ্ধ নারী পুরুষ সকলেই হাতের মুঠোয় জীবন নিয়ে চলছেন এই রাস্তা দিয়েই। বিষয়টি নিয়ে যাত্রীদের ভাষ্য- নৌকা চলাচল কম থাকায় বাধ্য হয়েই ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে।

এ ব্যাপারে সাইফুল ইসলাম নামের একযাত্রী বলেন, ‘এখান দিয়ে নৌকা চলাচল একদম কম। দুই/তিন ঘণ্টা পরপর একটি নৌকা ছাড়ে। তাই জীবনের ঝুঁকি আছে জেনেও এই টমটম/সিএনজির মতো অটোরিক্সা দিয়েই যেতে হচ্ছে।’

স্থানীয় বাসিন্দা সুমেরেন্দ্র দাস বলেন, ‘পানিতে তলিয়ে যাওয়া রাস্তা দিয়ে লাভের আশায় চালকরা যেন গাড়ি চালাচ্ছেন তেমনি যাত্রীদের মনেও ভয় নেই। ছেলে মেয়েদের নিয়ে দেখা যায় তারা এভাবেই ছোটে চলছেন।’

তিনি বলেন, ‘কয়েকদিন আগেও একটি সিএনটি রাস্তা টার (বুঝা) করতে না পারায় একদম খালে চলে যায়। তবে সেখানে কোন শিশু বা মহিলা না থাকায় তেমন কোন অঘটন ঘটেনি।’

এ ব্যাপারে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন চালক বলেন, ‘যাত্রীরা যদি যায় তাহলে আমাদের সমস্যা কি। যাত্রীরা না গেলেইতো আর আমরা গাড়ি চালাই না। তাছাড়া রাস্তা আমাদের ভালো করেই চেনা আছে। রাস্তার কোথায় ভাঙা আছে, আর কোথায় কালভার্ট আছে সব আমাদের জানা। সুতরাং দুর্ঘটনার ঘটার সম্ভাবনা নেই।’

কেএসটি