• ঢাকা
  • বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ২৪, ২০১৯, ০৮:৫৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ২৪, ২০১৯, ০৮:৫৬ পিএম

ব্রহ্মপুত্রের বাঁধে ভাঙন, তলিয়ে গেছে ঘরবাড়ি-ফসলি জমি

ব্রহ্মপুত্রের বাঁধে ভাঙন, তলিয়ে গেছে ঘরবাড়ি-ফসলি জমি
ব্রহ্মপুত্র নদের বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে ঢুকছে পানি  -  ছবি : জাগরণ

উজানে নদ-নদীর পানি কমলেও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় প্রতিদিনই প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। বুধবার (২৪ জুলাই) দুপুরে ময়মনসিংহ সদরের জেলখানার চর এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদের প্রবল স্রোতের তোড়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আকস্মিক ভাঙন দেখা দেয়।

বাঁধের প্রায় ৬০ থেকে ৭০ মিটার ভেঙে প্রবল বেগে পানি প্রবেশ করায় তলিয়ে যাচ্ছে সদর উপজেলার চর জেলাখানা, চর গোবিন্দপুর, দুর্গাপুর, বারেরচর, চরসিরতা, চরহাসাদিয়াসহ জনবসতিপূর্ণ বিস্তীর্ণ এলাকার কয়েক শ ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, আমন ধানের বীজতলা ও কয়েকটি মাছের খামার। ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে আরও বেশ কয়েকটি অংশ।

খবর পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ ও ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক একেএম গালিভ খান ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বিভিন্ন স্থানে গর্ত থেকে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে বলে ধারণা জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের। বাঁধটি নিয়ন্ত্রণে খুব দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তারা। বাঁধটির অন্যান্য অংশে নতুন করে যাতে আর ভাঙন দেখা দিতে না পারে, সেই লক্ষ্যে কাজ চলছে বলে জানান তারা।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম জানান, ব্রহ্মপুত্র নদের পশ্চিম তীরে প্রায় ২৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ২০০১ সালে নির্মাণ করা হয় বাঁধটি। এরপর বড় ধরনের বন্যা বা পানির চাপ না থাকায় ওই বাঁধে আর সংস্কার করা হয়নি। প্রতিবছরই বন্যা শুরুর আগে বাঁধের ডেঞ্জার পয়েন্টগুলোতে কিছু না কিছু কাজ করা হয়। এবার পাহাড়ি ঢল ও বন্যার পানির চাপ বেশি থাকায় বাঁধের পাড়ে লাগানো গাছের শিকড় দিয়ে অথবা ইঁদুরের গর্তে পানি ঢুকে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, বাঁধের ভাঙন ঠেকাতে বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) থেকে বালির বস্তা ফেলা হবে। তবে সময় যত যাচ্ছে বাঁধের ভাঙন এলাকা ততই বিস্তৃত হচ্ছে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক একেএম গালিভ খান বলেন, বাঁধটির অন্যান্য অংশে নতুন করে যাতে আর ভাঙন দেখা দিতে না পারে, সেই লক্ষ্যে কাজ চলছে। আর ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রণয়নেরও কাজ করা হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, বাঁধটি নির্মাণের পর আর সংস্কার করা হয়নি। প্রতিবছরই বর্ষা মৌসুমে বাঁধের কোথাও না কোথাও ভাঙন দেখা দেয়। এবার বড় ধরনের বন্যার কারণে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি অতিমাত্রায় বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং স্রোতের কারণে বাঁধটিতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। তারা জানায়, বাঁধ ভেঙে প্রবল বেগে পানি প্রবেশ করায় বিকাল পর্যন্ত চরাঞ্চলের প্রায় ৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে গেছে। ফলে সদর উপজেলার চর জেলাখানা, চর গোবিন্দপুর, দুর্গাপুর, বারেরচর, চরসিরতা ও চরহাসাদিয়া গ্রামে পানি প্রবেশ করছে। 

জনবসতিপূর্ণ বিস্তীর্ণ এলাকার কয়েক শ ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, আমন ধানের বীজতলা ও কয়েকটি মাছের খামার তলিয়ে গেছে। বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করায় গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো। আকস্মিক পানি ঢুকে পড়ায় আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার কয়েক হাজার মানুষ। ইতিমধ্যেই বসতভিটা ছেড়ে খোলা আকাশের নিচে বাস করছে অসংখ্য পরিবার। এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে আশপাশের আরও বেশ কিছু গ্রাম প্লাবিত হবে।

এনআই

আরও পড়ুন