• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ২৬, ২০১৯, ১০:৫৮ এএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ২৬, ২০১৯, ১১:০০ এএম

নবাবগঞ্জে খাল দখলে চলছে রাঘববোয়ালদের অসৎ প্রতিযোগিতা

নবাবগঞ্জে খাল দখলে চলছে রাঘববোয়ালদের অসৎ প্রতিযোগিতা
নানাভাবে চলছে খাল দখলের প্রতিযোগিতা-ছবি : জাগরণ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেখানে খাল নদী ও ডোবা ভরাট বন্ধে নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন। সেই নির্দেশনাকে অমান্য করে রাজধানী ঢাকার নিকটবর্তী নবাবগঞ্জের কলাকোপা ইউনিয়নের মাধবপুর, বড়নগর ও রাজপাড়ার ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া খালের জমি দখল নিয়ে চলছে প্রতিযোগিতা।

শতকোটি টাকার সরকারি এই খালটি স্থানীয় প্রভাবশালী চক্র নানান কৌশলে হাতিয়ে নিলেও স্থানীয় ভূমি প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রভাবশালী দখলদার চত্রু খালের বিভিন্ন অংশে বাড়ি-ঘর ও  অবকাঠামো নির্মাণ করে খালটিতে নির্বিচারে ময়লা-আবর্জনা ফেলছেন। যা পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থাকে প্রতিনিয়ত বাধাগ্রস্ত করছে। এরই মধ্যে খালটি পানি পচে কালচে রং ধারণ করেছে এবং দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। মশার উপদ্রবসহ পানিবাহিত রোগবালাই বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই খালটি সংস্কারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণসহ দখল মুক্ত করার দাবি স্থানীয়দের। 

দখল ও দূষনের বিষয়ে মাধবপুর গ্রামের কৃষক শিবলু বলেন, ১০ থেকে ১২ বছর আগে এ খাল দিয়ে দোহার জয়পাড়া এলাকা থেকে বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা নবাবগঞ্জ, কোমরগঞ্জ ও পাড়াগ্রাম হাটে কৃষিপণ্য বিক্রি করতে আসতো। বর্তমানে ইছামতি নদীর সাথে খালটির সংযোগস্থলে অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলায় বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি খালটিতে প্রবেশ করতে পারছে না। বেশ কয়েক বছর হলো নৌপথ বন্ধ হয়ে গেছে। খালে পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় দিন দিন ছোট হয়ে আসছে খালটি এবং যে যার মতো ব্যবহার করছে।

রাজপাড়া গ্রামের কলেজ শিক্ষার্থী শুভ বলেন, খালে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও দখলদারদের হাত থেকে জমি দখল মুক্ত না করলে, মাধবপুর, বড়নগর ও রাজপাড়া এলাকার খালটি দ্রুত হারিয়ে যাবে।

সরেজমিনে দেখা যায়, খালের রাজপাড়া অংশে খালের অপর পাড়ে রাস্তায় যেতে বাড়ির সঙ্গে সংযোগ রেখে কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই অসংখ্য ঢালাই ও লোহার সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। স্থানীয় অধিবাসীগণ এমনভাবে ময়লা ও আবর্জনা খালে ফেলছেন হয়ত কয়েক বছর পর খালটির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়াই যাবে না।

খালের জমি, বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান  বিভিন্ন কৌশলে দখল করে নিচ্ছেন। কেউবা নিজ উদ্যোগে কালভার্ট তৈরি করে তার নিচে ময়লা ফেলছেন। ইটের প্রাচীর তৈরি করে জমি দখল করেছেন কেউ কেউ। বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের আড়ালে চালাচ্ছেন দখল প্রতিযোগিতা। এর মধ্যে বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি রয়েছেন যাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না। এরই মধ্যে মাধবপুর এলাকার বাদশা মিয়া তার বাড়ি সংলগ্ন খালের প্রায় ৬ শতাংশ জায়গা একাই দখলে নিয়েছেন বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন। এ বিষয়ে বাদশা মিয়ার সাথে কথা বলতে চাইলে তার স্বজনরা বলেন, তিনি বাড়িতে নেই, মোবাইল নম্বরও দেয়া যাবে না।

মাধবপুর গ্রামের ওয়াছেক মাতবরের বড় ছেলে রতনসহ বড়নগর  ও রাজপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংলগ্ন এলাকার প্রভাবশালীরা খালের জমি দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণসহ ইচ্ছেমতো ব্যবহার করছে বছরের পর বছর। উপজেলার কৈলাইল কাটাখালীর খাল, বাহ্রার কান্দামাত্রা এলাকায় মড়ানদী ও বান্দুরা বাজার সংলগ্ন ইছামতি নদীর বিরাট অংশজুড়ে দখল প্রক্রিয়া চলমান থাকলেও দখল উচ্ছেদে প্রশাসনের ভূমিকা রহস্যজনক বলে মনে করেন এলাকাবাসী।

পরিবেশ বাচাঁও আন্দোলনের চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেন, খাল, বিল ও নদী আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ। সকলকে সচেতনতার সাথে এ সম্পদ রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে তবেই প্রাকৃতিক পরিবেশ ও দেশ বাচঁবে। 

উপজেলা সহকারি কমিশনার(ভূমি) রাজিবুল ইসলাম বলেন, সরকারি খালের জমি কেউ দখল করে থাকলে তদন্ত করে দখলদারের ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

এসএমএম