• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৯, ০৭:৪৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৯, ০৭:৪৬ পিএম

সরিষাবাড়ীতে শ্রমিকদের সড়ক ও রেলপথ অবরোধ

সরিষাবাড়ীতে শ্রমিকদের সড়ক ও রেলপথ অবরোধ
জুট মিল চালু ও বকেয়া পরিশোধের দাবিতে শ্রমিকদের রেলপথ অবরোধ  -  ছবি : জাগরণ

জামালপুরের সরিষাবাড়ীর আলহাজ জুট মিল চালু ও বকেয়া পরিশোধের দাবিতে চার ঘণ্টা সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে রাখেন শ্রমিকরা। বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চলে এই অবরোধ কর্মসূচি।

কর্মসূচিতে যমুনা সার কারখানা, পপুলার, এআরএ জুট মিল সিবিএ, শ্রমিক লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, সরিষাবাড়ী অনার্স কলেজ ছাত্রসংসদসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেয়।

বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা সরিষাবাড়ী রেলস্টেশনে অবস্থান নিলে বঙ্গবন্ধু সেতু (পূর্ব) স্টেশন থেকে চট্টগ্রামগামী একটি লোকাল ট্রেন আটকা পড়ে। অন্যদিকে পৌরসভার প্রধান সড়কে গাছের গুড়ি ফেলে ও টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করলে বন্ধ হয়ে পড়ে উপজেলার স্বাভাবিক যান চলাচল।

জেলা প্রশাসক এনামুল হক মোবাইলে সিবিএ নেতাদের মিল চালু করার আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেন শ্রমিকরা।

প্রায় ১৫ কোটি টাকা ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে গত বছরের ২১ জুলাই মধ্যরাতে পূর্বঘোষণা ছাড়াই আলহাজ জুট মিল বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। ১৯৬৭ সালে স্থাপিত এই মিলে দৈনিক প্রায় ১৫ মে. টন পাটের বস্তা, ব্যাগ ও কার্পেটের সুতা তৈরি হতো। মিলটি হঠাৎ বন্ধ হওয়ায় বেকার হয়ে পড়ে প্রায় চার হাজার শ্রমিক ও কর্মচারী। মিল কর্তৃপক্ষের কাছে বকেয়া রয়ে যায় শ্রমিকদের ২ কোটি টাকা বেতন।

মিল চালু ও বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে বুধবার আলহাজ জুট মিল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন (সিবিএ) সড়ক ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচির ডাক দেয়। এ সময় খণ্ড খণ্ড বিক্ষোভ মিছিলসহ প্রধান সড়কের প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকার ২০টি স্থানে গাছের গুড়ি ফেলে ও টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করে রাখেন শ্রমিকরা। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ রেলক্রসিংয়ে শ্রমিকরা অবস্থান নিলে প্রায় ১ ঘণ্টা আটকে থাকে ২৫৪ নম্বর লোকাল ট্রেন।

বিক্ষোভ মিছিল শেষে আলহাজ জুট মিল সিবিএর সভাপতি তোফাজ্জল হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বক্তব্য দেন আলহাজ জুট মিল সিবিএর সাধারণ সম্পাদক জাহিদুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম সম্পাদক আব্দুল মান্নান, শ্রমিক লীগের সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন, টাউন বণিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা জিন্নাহ, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম বিদ্যুৎ, উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুল হাসান দুখু, পপুলার জুট মিল সিবিএর সভাপতি আলফাজ উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, অনার্স কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি নাজমুল হুদা বজলু প্রমুখ।

মিলের শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুর রহমান বলেন, ‘শ্রম আইন লংঘন করে কর্তৃপক্ষ পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই মিলটি বন্ধ করেছে। মালিকের কাছে শ্রমিকদের বকেয়া পড়ে আছে দুই কোটি টাকা। নতুন কর্মসংস্থান ও বকেয়া না দেওয়ায় একমাত্র মিলের ওপর নির্ভরশীল শ্রমিক-কর্মচারীরা বর্তমানে বেকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।’ দ্রুত বকেয়া পরিশোধ ও মিল চালু না হলে আরো বড় কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

সিবিএর সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন জানান, শ্রমিকদের দাবি নিয়ে মালিকের সাথে কথা বলতে জেলা প্রশাসক ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় চেয়েছেন। তাই আগামী ২৬ তারিখ পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত করা হয়েছে। সমাধান না হলে পুনরায় কর্মসূচি দেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক এনামুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘শ্রমিকদের সাথে আলোচনা করে তাদের দাবি পূরণে মালিকপক্ষকে একটি বৈঠকে ডাকব। মিলটি চালু করা সম্ভব না হলেও যেন অন্তত তাদের পাওনা পরিশোধ করা হয়, সে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বলা হবে।’

এনআই

আরও পড়ুন