• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ০৭ মে, ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৬, ২০১৯, ০৪:৫৩ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ১৬, ২০১৯, ০৪:৫৩ পিএম

কোটালীপাড়ায় সংখ্যালঘু পরিবারের জায়গা দখল, প্রাণনাশের হুমকি

কোটালীপাড়ায় সংখ্যালঘু পরিবারের জায়গা দখল, প্রাণনাশের হুমকি
রাতের আঁধারে সংখ্যালঘু পরিবারের জায়গা দখল করে ঘর নির্মাণ  -  ছবি : জাগরণ

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় প্রভাবশালী দখলদাররা রাতের আঁধারে একটি সংখ্যালঘু পরিবারের জায়গা দখল করে নিয়েছে। দখলদাররা ভুক্তভোগী ওই পরিবারটির সদস্যদের প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে।

এদিকে অবৈধভাবে জায়গা দখল, আদালতের নির্দেশ অমান্য ও ভবন নির্মাণসামগ্রী চুরির অপরাধে কোটালীপাড়া থানার পুলিশ দখলদারদের একজনকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে।

জানা গেছে, উপজেলার ডহরপাড়া গ্রামের খোকন চন্দ্র দাস ৬৯ নং মোক্ষকোটালী মৌজার ২৭৯, ২৮০, ৩২৫ দাগের ৭৩ শতাংশ জায়গা প্রায় ৪৫ বছর ধরে ভোগদখল করে আসছেন। ২০১৫ সালে খোকন চন্দ্র দাসের মৃত্যুর পর পৈতৃক সূত্রে এই জায়গার মালিক হন খোকন চন্দ্র দাসের দুই ছেলে বিমল দাস ও কালা চাঁদ দাস।

গত ৫ নভেম্বর ডহরপাড়া গ্রামের মৃত সেকেন্দার আলীর ছেলে বাচ্চু শেখ, মৃত কুব্বত আলীর ছেলে আলাউদ্দিন শেখ ও নুর মোহাম্মদ আলী শেখের ছেলে নজরুল ইসলাম শেখ তাদের সহযোগীদের নিয়ে রাতের আঁধারে ঘর তুলে জায়গাটি দখল করে নেয়। জায়গাটি দখল করে নেয়ার পর বিমল দাস বাচ্চু শেখ গংদের কাছে জায়গায় ঘর তোলার বিষয়ে জানতে চাইলে তাকে ও তাদের পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাশের হুমকি দেয় তারা।

বিমল দাস বলেন, ‘আমার বাবা প্রায় ৪৫ বছর ধরে এই জায়গা ভোগ-দখল করে আসছেন। বাবার মৃত্যুর পর জমিটি আমরা ভোগদখল করে আসছি। এই ৭৩ শতাংশের মধ্যে ৩২ শতাংশ জায়গা আমরা শেখ হাসিনা আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক আলাউদ্দিন হাওলাদারসহ ৪ জনের কাছে বিক্রি করেছি। বাকি জায়গাটি আমাদের ভোগদখলে রয়েছে। গত ৫ নভেম্বর হঠাৎ করে রাতের আঁধারে পুরো ৭৩ শতাংশ জায়গাই বাচ্চু শেখ, আলাউদ্দিন শেখ ও নজরুল শেখ গংরা দখল করে নেয়। আমরা জায়গায় গেলে আমাদের প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়।’

শেখ হাসিনা আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক আলাউদ্দিন হাওলাদার বলেন, ‘গত বছর বিমল দাস ও তার ভাই কালা চাঁদ দাসের কাছ থেকে আমিসহ ৪ জন মিলে ৩২ শতাংশ জায়গা ক্রয় করি। গত কয়েক দিন আগে ওই জায়গায় ভবন নির্মাণের জন্য ইট, বালু, সিমেন্ট এনে রাখি। কিন্তু রাতের আঁধারে সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে বাচ্চু গংরা আমার ভবন নির্মাণের প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার টাকার মালামাল ওখান থেকে নিয়ে যায় এবং ওই জায়গায় ঘর তুলে পুরো ৭৩ শতাংশ জায়গা দখল করে নেয়। ৫ নভেম্বর দিবাগত রাতে এ বিষয়ে আমি বাদী হয়ে কোটালীপাড়া থানায় ১১ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করি। পুলিশ রাতেই বাচ্চুকে আটক করে।’

স্থানীয় কাউন্সিলর নাসির উদ্দিন সরদার নান্না বলেন, ‘আমি জন্মের পর থেকেই দেখছি এই জায়গাটি বিমল দাসের পরিবার ভোগদখল করে আসছে। এখন বাচ্চু গংরা তাদের জায়গা বলে দাবি করছে। বাচ্চুরা কীভাবে নিজেদের জায়গা বলে দাবি করছে, সেটি আমার বোধগম্য নয়।’

এ বিষয়ে বাচ্চু শেখের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, জায়গাটির বৈধ কাগজপত্র তাদের কাছে আছে। তবে তিনি কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি।

কোটালীপাড়া থানার ওসি শেখ লুৎফর রহমান বলেন, ‘এই জায়গার ওপর আদালতের নিষেধাজ্ঞা আছে। বাচ্চু শেখ সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাতের আঁধারে লোকজন নিয়ে ঘর নির্মাণ করেছে। অন্যদিকে শেখ হাসিনা আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক আলাউদ্দিন হাওলাদার ভবন নির্মাণের মালামাল চুরির অভিযোগ এনে বাচ্চু শেখসহ ১১ জনকে আসামি করে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এই অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা বাচ্চু শেখকে গ্রেফতার করি। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিমল দাসের পরিবারকে জীবন ও জায়গাজমি রক্ষায় নিরাপত্তা দেয়া হবে।’

এনআই

আরও পড়ুন