কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থীরা সেশনজট নিরসন ও ৫ দফা দাবিতে আন্দোলন করেছে। নিজেদের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে সোমবার (১৮ নভেম্বর) সকালে প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ শুরু করে তারা।
আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা ‘দাবি মোদের একটাই, সেশনজট থেকে মুক্তি চাই’; ‘তিন বছরে তিন সেমিস্টার, ধিক্কার ধিক্কার’ ইত্যাদি শ্লোগান দিতে থাকে। এছাড়াও সেশনজটের কারণে যথা সময়ে শিক্ষা জীবন সমাপ্ত না হওয়ায় অনেকের স্বপ্ন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবিসমূহ হলো- দ্রুততম সময়ে সেশনজট নিরসন, ব্যাচভিত্তিক শিফট করে ক্লাস রুটিন, নির্দিষ্ট একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রণয়ন, আগামী ২৫ তারিখের মাঝে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আর্ট এন্ড হ্যারিটেজ সোসাইটির পূর্ণাঙ্গ কমিটির নির্বাচন এবং দায়িত্ব হস্তান্তর এবং প্রতি জোড় সেমিস্টার পরীক্ষা পরবর্তী ১ মাসের মাঝে ফিল্ড ওয়ার্ক এবং ভাইভা শেষ করা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, ‘আমরা বিভাগের বর্তমান ক্লাস রুটিন নিয়ে সন্তুষ্ট নই। আর শিক্ষকরা ক্লাসের তুলনার একাডেমিক মিটিং, সভা-সেমিনার নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকে। ফলে আমাদের সেমিস্টারের যাবতীয় কার্যক্রম দেরিতে হয়’।
প্রত্নতত্ত বিভাগের ২য় ব্যাচের এক শিক্ষার্থী জানান, ‘অন্যান্য বিভাগের সহপাঠীরা মাস্টার্সের ১ম সেমিস্টার ফাইনাল দিলেও আমরা এখনও ৭ম সেমিস্টারে রয়েছি। তাছাড়া অনার্স শেষের দিকে যেখানে একাডেমিকের পাশাপাশি চাকরির পড়াশোনা করার কথা, সেখানে শিক্ষকরা এমন সিডিউল করেছেন শহর থেকে সকাল ৮টার বাসে আসলে ৫টার বাসে রুমে যেতে হয়। এতে করে আমাদের পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে’।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ‘আমাদের এমনও শিক্ষক আছেন যিনি ক্লাসের প্রিপারেশন না নিয়ে আসলে শিক্ষার্থীদের হোম ওয়ার্কের উপর হোমওয়ার্ক দিয়ে দেন ঐ টপিকস সম্পর্কে কোনো ধারণা না দিয়েই। তাছাড়া শিক্ষার্থীদের সোস্যাল মিডিয়ায় নজরদারি করেন শিক্ষকরা’।
বিক্ষোভ চলাকালে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও শিক্ষকরা এসে শিক্ষার্থীদের বুঝানোর চেষ্টা করলেও তারা তাদের আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে চালিয়ে নেয়ার ঘোষণা দেন।
পরবর্তীতে সকাল সাড়ে দশটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফারেন্স রুমে শিক্ষার্থীদের এক প্রতিনিধি দলের সাথে আলোচনায় বসেন। এসময় শিক্ষার্থীরা ৫ দফা দাবি জানালে উপাচার্য দাবিগুলোর সাথে সহমত পোষণ করে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। আশ্বাস পেয়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন থেকে সরে আসে।
প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের বিভাগীয় প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) মো. সাদেকুজ্জামান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সাথে আমরাও একমত পোষণ করছি। শিক্ষার্থী এবং উপাচার্য স্যারের সাথে কথা বলে সেশনজট কিভাবে নিরসন করা যায় সেই ব্যাপারে কিছু যৌক্তিক আলোচনা হয়েছে। আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছি এবং আশা করছি বিভাগের সেশনজট ধীরে ধীরে কমে আসবে’।
কেএসটি