• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০১৯, ০৯:১০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ১৯, ২০১৯, ০৯:১০ পিএম

বাংলাদেশ লবণ মিল মালিক সমিতির সভায় বক্তারা

লবণশিল্পকে ধ্বংসের পাঁয়তারা চলছে

লবণশিল্পকে ধ্বংসের পাঁয়তারা চলছে
বাংলাদেশ লবণ মিল মালিক সমিতির সভায় উপস্থিত মালিকরা - ছবি : জাগরণ

দেশে লবণের কোনো ধরনের ঘাটতি নেই। বর্তমানে যে পরিমাণ লবণ উদ্বৃত্ত রয়েছে তা দিয়ে আরো অন্তত দুই মাস চলবে। একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী লবণের সংকট দেখিয়ে দাম বৃদ্ধির অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। একমাত্র স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশীয় লবণশিল্পকে ধ্বংসের পাঁয়তারা করে একটি মহল লবণ আমদানির অজুহাত তুলে বিদেশে দেশি মুদ্রা পাচারের ষড়যন্ত্র করছে।

ইতিমধ্যে একটি কুচক্রী মহল লবণের কেজি ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে অপপ্রচার চালিয়েছে। তারা মূলত এ শিল্পকে ধ্বংস করতে চাচ্ছে। অপপ্রচারকারীদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।

মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সকালে কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ লবণ মিল মালিক সমিতির সাধারণ সভায় মিল মালিকরা উপরোক্ত কথা বলেন।

কক্সবাজার শহরের একটি আবাসিক হোটেলের কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত সভায় মিল মালিক সমিতির সভাপতি নুরুল কবির বলেছেন, বর্তমানে তিন লাখ মেট্রিক টনের ওপরে লবণ উদ্বৃত্ত আছে। কিছু মিল মালিকের কারণে মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর সোডিয়াম সালফেট বাজারে সয়লাব হয়ে গেছে। বন্ড লাইসেন্স, কাস্টিং সল্ট ইত্যাদি নামে লবণ আমদানি করছিল একটা শ্রেণি। আমাদের কঠোরতায় ওই রকম লবণ আমদানি বন্ধ হয়েছে।

লবণ মিল মালিকদের ওই সভায় বক্তব্য দেন সমিতির সহসভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম, আফতাব হোসেন, মাস্টার আব্দুল কাদের, এম কায়সার ইদ্রিস, মো. ফজলুল হক, ওমর ফারুক মিঠু, সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী।

সভায় কার্যনির্বাহী সদস্য মো. আবু হানিফ ভূঁইয়া, মো. শহিদুজ্জামান শরিফ, আলহাজ মো. কামাল দেওয়ান, মো. আবুল কালাম আজাদ, হাজি এসএম ইজ্জত আলী, মীর আহম্মদ, সাদেক মোহাম্মদ, এম এ তাহের, গাজী সাব্বির আহমদ, অহিদুস সামাদ হেলাল, মো. কুতুব উদ্দিন, ফরিদুল ইসলাম, শেখ ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, অছিয়র রহমান চেয়ারম্যান, জাফর আহম্মদ, মো. মো. কামাল শরীফসহ সমিতির সদস্য ও দেড় শতাধিক মিল মালিক উপস্থিত ছিলেন।

সাধারণ সভায় মিল মালিকরা লবণশিল্প বাঁচানোর তাগিদ দিয়ে বলেন, কালোবাজারি, উৎপাদিত লবণের ন্যায্য মূল্য না পাওয়া ও বিষাক্ত সোডিয়াম সালফেটের কারণে ধ্বংস হচ্ছে দেশীয় লবণশিল্প। মাঠে ও মিলে পড়ে রয়েছে অন্তত ৬ লাখ মেট্রিক টন অবিক্রীত লবণ। কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে কালোবাজারিদের লবণ আমদানির কারণে দেশীয় লবণ খাত মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারছে না। পিছিয়ে যাচ্ছে দেশের এই গুরুত্বপূর্ণ খাত। চলমান দরপতন অব্যাহত থাকলে লবণশিল্পকে রক্ষা করা সম্ভব হবে না।

লবণ মিল মালিক, ব্যবসায়ী, চাষিসহ সংশ্লিষ্টদের দাবি, দেশীয় লবণশিল্প বাঁচাতে সব ধরনের লবণ আমদানি বন্ধ করতে হবে। ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে না পারলে মাঠে ফেরানো যাবে না চাষিদের। পরনির্ভর হবে দেশ। বাড়বে বেকারত্ব। সোডিয়াম সালফেটের আড়ালে যারা ইন্ডাস্ট্রিয়াল সল্ট, সোডিয়াম ক্লোরাইড, টেস্টিং সল্ট আমদানি করে তাদের কঠোর হস্তে দমন করতে হবে।

৮০ কেজির লবণের বস্তা মাঠপর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩৫০ টাকা দরে। সে হিসেবে কেজিতে পড়ছে মাত্র ৪ টাকা, যা দিয়ে মজুরি বা উৎপাদন খরচও সামাল দিতে পারছেন না চাষিরা। অথচ বাজারে প্যাকেটজাত লবণ কেজিতে বিক্রি করা হয় প্রায় ৪০ টাকা।

সভায় জানানো হয়, নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে শুরু হয়েছে লবণের মৌসুম। ইতোমধ্যে উপকূলীয় এলাকাগুলোতে লবণ উৎপাদন শুরু হয়েছে। গেল মৌসুমেও অন্তত ৬ লাখ মে. টন লবণ উদ্বৃত্ত ছিল। সব মিলিয়ে দেশে কোনো সংকট পড়বে না লবণের।

এনআই

আরও পড়ুন