• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৭, ২০১৯, ০৮:৩৩ এএম
সর্বশেষ আপডেট : ডিসেম্বর ৭, ২০১৯, ০৮:৩৩ এএম

মিয়ানমার নৌবাহিনীর হাতে আটক ১৭ বাংলাদেশি জেলেকে ফেরত 

মিয়ানমার নৌবাহিনীর হাতে আটক ১৭ বাংলাদেশি জেলেকে ফেরত 

গভীর বঙ্গোপসাগরে মিয়ানমার জলসীমা থেকে আটক হওয়া ১৭ বাংলাদেশি জেলেকে কোস্টগার্ডের কাছে হস্তান্তর করেছে মিয়ানমার নৌবাহিনী। 

শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে সেন্টমার্টিন দ্বীপের অদূরে গভীর সাগরে কোস্টগার্ডের তাজ উদ্দিন নামক জাহাজে তাদেরকে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করে মিয়ানমার নৌবাহিনী। মিয়ানমার নৌবাহিনীর দাবি গত ৫ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার বাংলাদেশি ১৭ জেলেকে নিজেদের জলসীমা থেকে উদ্ধার পূর্বক আটক করেছিল। 

এদিকে, কোস্টগার্ড সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশি মাছ ধরার ট্রলার ‘এফবি গোলতাজ-৪’ গত তিন দিন আগে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে সাগরে মাছ শিকারে যায়। দুই দিন পর ট্রলারটি ইঞ্জিন বিকল হয়ে সাগরে ভাসতে ভাসতে মিয়ানমার জলসীমায় এসে পৌঁছলে মিয়ানমার নৌবাহিনীর জাহাজ ‘ইন-লে’ ১৭ জন জেলেসহ বাংলাদেশি ট্রলারটি উদ্ধার করেন। পরে খবরটি জেনে মিয়ানমারে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস কোস্টগার্ডকে বিষয়টি অবহিত করে। এরপর আটক জেলেদের উদ্ধার করার জন্য কোস্টগার্ড উদ্যোগ নেয়। অবশেষে ১৭ জেলেকে উদ্ধার করার পর কোস্টগার্ড এক সংবাদ ব্রিফিংএর আয়োজন করে। 

উক্ত ব্রিফিংএ কোস্টগার্ড তাজউদ্দীন জাহাজের কর্তব্যরত কমান্ডার এসএম মেজবাহ উদ্দিন জানান, সরকার ও সংশ্লিষ্ট বাহিনীর প্রচেষ্টায় মিয়ানমার নৌবাহিনীর সাথে আলোচনার মাধ্যমে ফিশিং ট্রলারসহ ১৭ বাংলাদেশি জেলেকে ফেরত আনতে সক্ষম হয়েছি। 

তিনি আরো জানান, ইঞ্জিন বিকল হয়ে বাংলাদেশি ট্রলারটি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রাথিডং উপকূলের মাইও নদীর মোহনায় ঢুকে পড়েছিল এবং এই প্রথম গভীর সাগরের মাঝখানে দুই দেশের বাহিনী পর্যায়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আটক বাংলাদেশি জেলেদের দ্রুত সময়ে ফেরত আনতে সক্ষম হয়েছে কোস্টগার্ড।

উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশি জেলেরা হচ্ছে, ভোলা জেলার সদরের চুন্নাবাদ এলাকার মো. মিলনের ছেলে জাকির হোসাইন (৪৪), একই জেলার চরফ্যাশন উপজেলার নোরাবাদ এলাকার আব্দুল লতিফ ব্যাপারির ছেলে আবুল কালাম (৫৬), গোলদার হাট এলাকার মৃত খোরশেদ আলমের ছেলে কামাল সওদাগর (৪৯), উত্তর মাদ্রাজ এলাকার জয়নাল আবেদীনের ছেলে নুরুল ইসলাম (৫৯), নীলকমল এলাকার মৃত নজির আহমদের ছেলে মোতাহার (৫৫), একই এলাকার আব্দুল মালেকের ছেলে বেলাল হোছাইন (২৭), মৃত নজির আহমদের ছেলে মো. ফারুক (৪৩), আব্দুল বারেক চৌকিদারের ছেলে মো. ছলিম (৪০), চরফ্যাশন সদরের নুর মোহাম্মদ পাটোয়ারীর ছেলে মো. জসিম (৫১), চরফ্যাশন পৌর এলাকার আবি আব্দুল্লাহর ছেলে আবুল কালাম (৫৭), একই এলাকার মকবুল আহমদের ছেলে মো. নেছার (৪৬), দৌলতখান উপজেলার কলাখোপা এলাকার মো. আলমগীরের ছেলে মো. আলামীন (১৯),  চরখলিফা এলাকার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মো. জহিরুল ইসলাম (২৯), চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে মো. শাহ আলম (৬১),একই উপজেলার শোভনদন্দী এলাকার মৃত সোলায়মানের ছেলে মো. জসিম (৩৩), মুন্সীগঞ্জের টঙ্গী বাড়ি উপজেলার জাহের আলীর ছেলে আবু সায়েদ (৩৬) ও ঝালকাঠি রাজাপুর উপজেলার আব্দুল কাদেরের ছেলে মো. নুরুজ্জামান (৪৬)। 

ফেরত আসা জেলেরা জানান, গত ২৯ নভেম্বর ভোলা এলাকা থেকে গভীর সাগরের মাছ শিকার করার জন্য বের হয় তারা।
এরপর রাতের অন্ধকারে হঠাৎ ট্রলারের ইন্জিন বিকল হয়ে সাগরে ভাসতে ভাসতে গত ৩০ নভেম্বর মিয়ানমার জলসীমা ঢুকে পড়লে সেদেশের নৌবাহিনী তাদের আটক করে।

অবশেষে বাংলাদেশ সরকার ও কোস্টগার্ড সদস্যদের সার্বিক সহযোগিতা তৎপরতার কারণে আমরা খুব কম সময়ের মধ্যে স্বদেশে ফেরত আসতে সক্ষম হয়েছি।

কেএসটি