• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ১৫, ২০২০, ০৫:৪৫ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ১৫, ২০২০, ০৫:৪৮ পিএম

গাইবান্ধায় ভয়াবহ রুপে দ্বিতীয় দফা বন্যা

গাইবান্ধায় ভয়াবহ রুপে দ্বিতীয় দফা বন্যা

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢল ও অতি বর্ষনে গাইবান্ধায় দ্বিতীয় দফা বন্যায় অস্বাভাবিক হারে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রুপ নিয়েছে। আজ বুধবার (১৫ জুলাই) জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। জেলার সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ঘাঘট, করতোয়া নদী তীরবর্তী জেলার চারটি উপজেলার ২৬টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এসব ইউনিয়নের ৩০ হাজার ৮৭৬ পরিবারের ১ লাখ ২২ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

বন্যার্ত মানুষেরা ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছেন। এর আগে যেসব এলাকা থেকে পানি নেমে গিয়েছিল, সেসব এলাকা আবার বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। ঘাঘট নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় শহরের ডেভিট কোম্পানি পাড়া বাঁধ, সৈয়দপুর ঘাট, বাগুড়িয়া এলাকায় শহররক্ষা বাঁধ ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, আজ বুধবার সকাল ৬টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ফুলছড়িঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ১১৩ সেন্টিমিটার ও ঘাঘট নদীর পানি জেলা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৮৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত  হচ্ছে।

বন্যাকবলিত এলাকাগুলোয় বিশুদ্ধ পানি, খাদ্য, শিশু খাদ্য, গোখাদ্য, নারীদের ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সামগ্রী ও পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থার সংকট দেখা দিয়েছে। শুকনো খাবার ও জ্বালানির অভাবে খাদ্য সংকটে পড়েছে বন্যার্ত মানুষ। অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে গরু-ছাগল নিয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও উঁচু এলাকায় আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

সদর উপজেলার কামারজানি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম জাকির, শ্রীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম, ফুলছড়ি উপজেলার উড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহতাব উদ্দিন, কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. লিটন জানান, আগে যেসব এলাকা থেকে পানি নেমে গিয়েছিল, ওইসব এলাকা আবার নতুন করে বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। ফলে ঘরবাড়িতে বন্যার পানি ওঠায় পানিবন্দি পরিবারগুলো চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে। শুকনো খাবার ও জ্বালানির অভাবে খাদ্য সংকটে পড়েছে বন্যার্ত মানুষ। অনেকে ইতোমধ্যে বাড়িঘর ছেড়ে গরু-ছাগল নিয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও উঁচু এলাকায় আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক আব্দুল মতিন জানান, এজন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এবারের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত চার উপজেলার বন্যার্তদের মধ্যে বিতরণের জন্য নতুন করে ১০০ মে. টন চাল, চার লাখ টাকা, ১ হাজার ৮০০ প্যাকেট শুকনো খাবার এবং শিশুখাদ্যের জন্য দুই লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

গাইবান্ধার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোখলেছুর রহমান জানান, বন্যার পানি আরও দুদিন বাড়বে। এতে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার ১১০ সে.মি. ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বিভিন্ন পয়েন্টে জরুরি প্রতিরক্ষামূলক কাজ করা হচ্ছে। শহরের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কিছু কিছু জায়গায় ছোট ছোট গর্ত দিয়ে পানি প্রবাহিত হলে সেগুলো জরুরি ভিত্তিতে মেরামত করা হচ্ছে। ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের সৈয়দপুর ঘাটের বাঁধে পুরাতন একটি পানি নিষ্কাসনের ড্রেন দিয়ে পানি প্রবাহিত হলে বাঁধের  কিছু অংশ ক্ষতির মুখে পরেছে। সেটি মেরামতের জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি জানান।