• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ৭, ২০২০, ০৮:১৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ৭, ২০২০, ০৮:১৪ পিএম

ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে শত পরিবারের

ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে শত পরিবারের

সুনামগঞ্জ’র দক্ষিণ সুনামগঞ্জে উপজেলার নাইন্দা নদীর তীরবর্তী মানুষের বর্তমান আতঙ্কের নাম নদী ভাঙন। এই ভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে তাদের সব স্বপ্ন। পরিবার নিয়ে নদীর পাশে সুখের নীড় তৈরী করলেও তাদের সুখে বাঁধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে নাইন্দা নদীর ভাঙন। দিনের বেলা সবার সাথে মিলে মিশে কাটালেও অন্ধকার নামা মাত্রই চলে আসে মরণ ভয়। নদী ভাঙনের তীব্রতা যে হারে বাড়ছে চিন্তা হয় তাদের কখন যেন ঘুমের মধ্যে পরিবারসহ স্বপ্নের নীড় চলে যায় নদী গর্ভে। আর তার সাথে তলিয়ে যায় পৃথিবীর আলো দেখার স্বপ্ন। 

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নের নাইন্দা নদীর তীরবর্তী সদরপুর গ্রামের হতদারিদ্র মুসলিম আলী ও তার ভাইয়েরা নদী ভাঙনের কারনে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। বাড়ির ভিটায় বড়বড় ফাটা দেখা দিয়েছে। প্রতিনিয়তই নদী ভাঙন অব্যাহত থাকায় কখন যেন তাদের ডাক আসে নদী গর্ভে চলে যাওয়ার। সামনে পিছনে পানি থাকায় নদী ভাঙনে বিলীন হওয়ার পথে এই অসহায় পরিবারগুলো। এই মুহুর্তে ছেলে মেয়ে নিয়ে চিন্তার শেষ নেই তাদের।  শুধু মুসলিম আলি না, নদী ভাঙন দুশ্চিন্তায় রয়েছেন নাইন্দা নদীর তীরবর্তী শতশত পরিবার। নদীর ভাঙনে এই পরিবারের এখন মাথাঘুজার ঠাঁই নেই। কেউ এসে তাদের দেখছে না বলেও অভিযোগ রয়েছে। 

অভিযোগ করে এসব পরিবার জানান, নদী ভাঙনের জন্য আমাদের সব স্বপ্ন তলিয়ে যাচ্ছে কিন্তু র্কতৃপক্ষ কেউ এসে আমাদের খোঁজ নিচ্ছে না। আমরা শুনেছি আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন এ দেশ কেউ গৃহহীন হয়ে থাকবে না। কিন্তু আমরা যে দিন দিন গৃহ হারা হচ্ছি তার খোঁজ তো কেউ নিচ্ছে না। এবং কেউ এসে আমাদের সান্তনাও দিচ্ছে না। 

জানা যায়, কয়েক বছর আগে ২ বিগা জমি ক্রয় করে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নের নাইন্দা নদীর তীরবর্তী সদরপুর গ্রামে বসতি শুরু করেছিলেন মুসলিম আলী ও তার ভাইয়েরা। প্রথম অবস্থায় জীবনযাপন সুন্দরভাবে চললেও পরবর্তীতে দেখা দেয় নদীর কাল ভাঙন। আর এতে প্রতিবছরই নদী ভাঙনে বিলীন হচ্ছে তাদের বসত ভিটা। বার বার স্থান পরিবর্তন করেও রক্ষা মিলচে না তাদের। বসত ভিটার চতুর্দিকে ঘিরে ফেলছে নদীর ভয়ানক ভাঙনে। তাছাড়া, নদী দিয়ে বড় বড় নৌকা চলাচল করার কারনে ঢেউয়ে আঘাতেও ভাঙন দুশ্চিন্তায় দিশেহারা হতে হচ্ছে তাদের।

এসময় ভুক্তভোগীদের মধ্যে মুসলিম আলী বলেন, ২ বিগা জমিতে বসবাস শুরু করেছিলাম নদী ভাঙনের কবলে পড়ে এখন সব শেষ হওয়ার পথে। ছেলে মেয়ে নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি কখন জানি সবকিছু নদীতে তলিয়ে যায়। আমরা সরকারের সাহায্য চাই।  সুত্র জানায়, গত দু’বছর যাবৎ এই নদী বিরামহীনভাবে ভাঙছে। এই ভাঙনরোধে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নেয়া হচ্ছে না যথাযথ কোনো ব্যবস্থা। আর এতে ধীরে ধীরে বিলীনের পথে যাচ্ছে তাদের আশ্রয়স্থল। তবে অনেকেই মনে করছেন এখনও যদি সরকার কর্তৃক সঠিক পদক্ষেপ নেয়া হয় তবে নদীর তীরের এসব মানুষেরা ফিরে পাবে বাঁচার নতুন স্বপ্ন। 

এ ব্যাপারে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ফারুক আল মামুন বলেন, আমি ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড দ্রুত প্রয়োজন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সুনামগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী (পওর-২) শফিকুল ইসলাম বলেন, ভাঙন কবলিত নাইন্দা নদীর তীরবর্তী সদরপুরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ব্যাপারে শাখা কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।