গাইবান্ধা জেলার সাদুল্যাপুরে এক মাসেই দুই সন্তানের জননীসহ ২৩ জন মেয়ে 'উধাও' হয়েছেন। তারা অষ্টম থেকে ডিগ্রি শ্রেণির শিক্ষার্থী। এসব ঘটনায় একজনের অভিভাবক থানায় অপহরণ মামলা করেছেন। অন্যদের অভিভাবক থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) অথবা পুলিশের কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছেন।
সাম্প্রতি উপজেলা পরিষদের মাসিক আইন-শৃঙ্খলা সভায় এ তথ্য তুলে ধরেন সাদুল্যাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা। তিনি বলেন, প্রেমঘটিত কারণে এই উপজেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে এখন বাড়তি চিন্তা করতে হচ্ছে।
সভায় উপজেলার মহিপুর কলেজের প্রভাষক রনজিত কুমার অধিকারী বলেন, অপ্রাপ্ত বয়সের শিশু-কিশোরদের হাতে অ্যানড্রয়েড মোবাইল ফোন তুলে দেওয়ায় সমাজে অপরাধ প্রবণতা বেড়েছে। অভিভাবক মহল সচেতন না হওয়ায় বিপদগামী হচ্ছে শিশু-কিশোররা। এই ফোনের মাধ্যমে তারা ফেসবুক ব্যবহার করে অথবা কথা বলে প্রেমে জড়িয়ে পড়ছে। আর এই বয়সের প্রেমের কারণে পরিবারের অজান্তে তারা বাড়ি ছাড়ছে।
সাদুল্যাপুর থানার ওসি মাসুদ রানা সভায় বলেন, এই মুহূর্তে এখানকান বড় আতঙ্কের বিষয় হচ্ছে মোবাইল প্রেম। অবুঝ শিশুরা কিছু বুঝে উঠার আগেই ফেসবুকে অথবা মোবাইল প্রেমে জড়িয়ে অজানার উদ্দেশে পাড়ি জমাচ্ছে। তারা বাবা-মাসহ বাড়ির অন্য কারো সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেনা। এই শিশুদের অনেকের পরিবার লোকলজ্জার ভয়ে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীকে পর্যন্ত জানাতে চান না। আবার কোনো অভিভাবক থানায় আসলেও সাধারণ ডায়েরি করেই চুপ থাকতে চান। এভাবে সেপ্টেম্বর মাসে এই উপজেলার ২৩ জন মেয়ে বাড়ি ছাড়া হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র একজনের অভিভাবক অপহরণ মামলা করেছেন। অন্যান্য অভিভাবক সাধারণ ডায়েরি অথবা মৌখিকভাবে বিষয়টি জানিয়েছেন।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাহারিয়া খাঁন বিপ্লব বলেন, সন্তানের হাতে মোবাইল ফোন তুলে দেওয়ার আগে অভিভাবকদের অনেক কিছুই ভাবতে হবে। সন্তান কোথায় যাচ্ছে, কার সঙ্গে ঘুড়ছে এসব বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। অভিভাবকরা সচেতন হলে সন্তানরা বিপথগামী হওয়া থেকে রক্ষা পাবে।
জাগরণ/এমআর