মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার চেংগাড়া ডাক্তার পাড়ায় মানুষ চলাচলের রাস্তা দখল করে বালু রাখায় ভোগান্তিতে পড়েছে প্রায় ৫০টি পরিবার। এ বিষয়ে প্রশাসনকে বারবার জানানো হলেও সমস্যার সমাধান পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগী পরিবার।
রাস্তার ওপর থেকে দ্রুত বালু অপসারণ করে পরিবারগুলোর যাতায়াতের ব্যবস্থা করে দেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগীরা।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মালিকানা জমির দাবি করে রাস্তার ওপর বালু রাখায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, চেংগাড়া গ্রামের মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে তোফাজ্জেল হোসেন তার বাড়ির সামনের চলাচলের একটি রাস্তা দখল করে তামাকঘর নির্মাণ করছিলেন। এ বিষয়ে স্থানীয়রা আদালতে মামলা করেন। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী গাংনী থানায় আদেশ জারি করেন স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে।
গাংনী থানা-পুলিশ তোফাজ্জেল হোসেনের তামাক ঘর নির্মাণকাজ স্থগিত করেন এবং বালু অপসারণ করে স্থানীয়দের যাতায়াত নিশ্চিত করতে বলেন। কিন্তু দিনের পর দিন অতিবাহিত হলেও বালু অপসারণ করেনি তোফাজ্জেল হোসেন। বালু রাখার পর থেকেই আবদ্ধ হয়ে পড়ে অর্ধশত পরিবার।
শিশু-কিশোরসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষের যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। পরে গাংনী উপজেলা প্রশাসনকে কয়েকবার অবহিত করেন স্থানীয়রা। তবু কোনো সুরাহা না হওয়ায় মানববন্ধন করেন স্থানীয়রা।
আব্দুল গফুরের ছেলে এনামুল হক, ছহিরুদ্দীন, রফিজউদ্দিনের ছেলে আব্দুল বারিসহ উপস্থিত স্থানীয়রা জানান, এটি প্রায় শত বছর ধরে মানুষ চলাচল করে। প্রায় পঞ্চাশটি পরিবারের একমাত্র রাস্তা এটি।
এদিকে মালিকানা দাবি করা তোফাজ্জেল হোসেন জানান, সরকারি টাকায় কয়েকবার মাটি ভরাটের কাজ করে স্থানীয় শোলটাকা ইউনিয়ন পরিষদ। হঠাৎ রাস্তাটি বন্ধ করে যাতায়াত বন্ধ করে রেখেছে । এ নিয়ে কয়েকবার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।
তোফাজ্জেল হোসেনের মেয়ে পারুলা খাতুন বলেন, “জমিটি আমাদের নিজস্ব মালিকানা, তাই বালু রাখা হয়েছে। আমাদের নামে কাগজপত্র রয়েছে।”
তোফাজ্জেল হোসেনের সঙ্গে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কথা হলে তিনি বলেন, “আমি কয়েক দিন পর বালু অপসারণ করব। তবে জমি আমার নামে খতিয়ানভুক্ত হয়েছে। সরকারি খতিয়ানভুক্ত রাস্তা না।
এদিকে জনগণের রাস্তা হিসেবে সরকারি অর্থে মাটি ভরাটের কাজ করা হয়েছে এবং দীর্ঘদিন রাস্তা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে মর্তে প্রত্যয়ন দেন ষোলটাকা ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনি।
গাংনী থানার ওসি বজলুর রহমান বলেন, “এ বিষয়ে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
গাংনী উপজেলা ভুমি কর্মকর্তা নুর-ই- আলম সিদ্দিকী বলেন, “রাস্তা হিসেবে ব্যবহার হলেও সেটি মালিকানা খতিয়ানভুক্ত তাই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না।”
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরএম সেলিম শাহনেওয়াজ বলেন, “আমি বিভিন্ন মহল থেকে বিষয়টি জানতে পারি। এ বিষয়ে এসিল্যান্ড সাহেবকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।“