• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২১, ০৮:২১ এএম
সর্বশেষ আপডেট : ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২১, ১১:১১ এএম

সিরাজগঞ্জে জমে উঠেছে ক্ষীরার হাট

সিরাজগঞ্জে জমে উঠেছে ক্ষীরার হাট

সিরাজগঞ্জ চলনবিলের ক্ষীরার হাট জমে উঠেছে। দিঘরিয়া ও চরবন্ধনগাছা ক্ষিরার আড়তগুলোতে পাইকার-বিক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। সকাল থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত বেচাকেনা হচ্ছে শত শত টন ক্ষীরা।

চলনবিলের তাড়াশ ও উল্লাপাড়ার উৎপাদিত ক্ষীরা স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে প্রতিদিন শতাধিক ট্রাকে চট্টগ্রাম, বগুড়া, পাবনা, ঢাকা ও সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

এখানকার ব্যবসায়ীদের সাথে আলাপকালে জানা গেছে, চলনবিলের উত্তর এলাকার তাড়াশ, নাটোরের সিংড়া ও বগুড়ার শেরপুরের ১টি ইউনিয়নের কৃষকদের উৎপাদিত ক্ষীরা বেচাকেনার জন্য দিঘরিয়া আড়তটি প্রায় ২০বছর আগে শুরু হয়েছে। সিরাজগঞ্জ, নাটোর ও বগুড়া জেলার চাষিরা এখানে ক্ষীরা বিক্রি করতে আসেন।

এখানে প্রায় ৪০ থেকে ৫০টি ট্রাক প্রস্তুত থাকে। প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে শুরু হয় বিক্রি। মহাজনরা ক্ষীরা কিনে ট্রাকে লোড দিতে থাকেন। এ কাজে নিয়োজিত রয়েছে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ জন শ্রমিক। কেনাবেচার মধ্যদিয়ে ১ থেকে ২ ঘণ্টার মধ্যে ভরে যায় মহাজনদের আড়ৎ।

দুটি হাটে প্রচুর ক্ষীরা আমদানি হওয়ায় ওজনের পরিবর্তে বস্তা চুক্তিতে বিক্রি করা হয়। প্রকারভেদে প্রতি ছোট বস্তা ক্ষীরা বিক্রি হয় ২৬০ থেকে ৩২০ টাকা এবং প্রতি বড় বস্তা বিক্রি হয় ৫৫০ থেকে ৬৫০ টাকা পর্যন্ত। এ হাটটি ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়ে চলে এপ্রিল পর্যন্ত।

কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে চলনবিলের অধ্যুষিত সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া, রায়গঞ্জ, নাটোরের সিংড়া, গুরুদাসপুর, পাবনার চাটমোহর ও ভাঙ্গুড়া উপজেলার মাঠে প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ক্ষীরা চাষ করা হয়েছে।

এ বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় ও বীজ সার এবং কীটনাশক সুলভমূল্যে পাওয়ায় ক্ষীরার বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতিবিঘা জমিতে ক্ষীরা চাষ করতে প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা ব্যয় হয়। ১ বিঘা থেকে উৎপাদিত ক্ষীরা বিক্রি হয় ২৫-৩০ হাজার টাকা।

এ আবাদে পোকা-মাকড়ের ঝামেলা কম, তাই ক্ষীরা চাষে কৃষকের আগ্রহ বেশি। তাড়াশ উপজেলার দিঘুরিয়া, রানীর হাট ও কোহিতসহ ১০টি গ্রামে প্রতিবছর গড়ে উঠে ক্ষীরা বিক্রির মৌসুমি হাট। প্রতি মণ ক্ষীরা ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকায় বিক্রি হয়।

উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের দিঘরীয়া গ্রামের কৃষক আহমেদ আলী জানান, এ বছর ১ বিঘা জমিতে ক্ষীরার আবাদ করতে খরচ হয়েছে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। খরচ বাদে আবাদে ৩০ হাজার থেকে ৩৫ হাজার টাকা লাভ হয়েছে।

ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, “তাড়াশ অঞ্চলের উৎপাদিত ক্ষীরার মান ভালো, দামও কম। ক্ষীরার মান ভালো হওয়ায় এর কদর সারাদেশে রয়েছে।”

তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ লুৎফুন্নাহার লুনা জানান, চলনবিলে ক্ষীরা চাষে কৃষকরা ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে। কৃষকেরা ক্ষীরা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। কৃষকেরা বিঘা প্রতি খরচ বাদে ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা করে লাভ করছেন। এভাবে আগামীতে কৃষকেরা ক্ষীরা চাষে আরো উদ্দ্যোগী হবেন।