• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মার্চ ৫, ২০২১, ০২:২৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মার্চ ৫, ২০২১, ০২:২৯ পিএম

খুপরি থেকে প্রধানমন্ত্রীর ঘরে ‘মুক্তিযোদ্ধা’

খুপরি থেকে প্রধানমন্ত্রীর ঘরে ‘মুক্তিযোদ্ধা’

ঘর পেলেন রাস্তার পাশে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে খুপরিতে বাস করা সেই ‘মুক্তিযোদ্ধা’ রতন কুমার বিশ্বাস। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বাগেরহাট সদর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ষাটগম্বুজ ইউনিয়নের রণভূমি আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকায় তাকে জমিসহ ঘর দেওয়া হয়।

তাকে নতুন ঘরের সঙ্গে সদর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি খাট, তোষক, বিছানা, বালিস, চুলা, হাড়ি-পাতিল দেওয়া হয়েছে। এ ঘরে বিদ্যুতের সংযোগ রয়েছে। আছে সুপেয় পানির ব্যবস্থা। মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার (ঘর) পেয়ে মহাখুশিতে আত্মহারা মুক্তিযোদ্ধা রতন ও তার সহধর্মিনী মনিরা রানী।

ঘর হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যন সরদার নাসির উদ্দিন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মোছাব্বেরুল ইসলাম, সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রিজিয়া পারভীন, বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের তন্ময়ের একান্ত সচিব এইচএম শাহিন, ষাটগম্বুজ ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আক্তারুজ্জামান বাচ্চু, বাগেরহাট পৌরসভার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফারুক তালুকদার প্রমুখ।

এর আগে গত ১৪ ডিসেম্বর ২০২০ রতন কুমার বিশ্বাসকে নিয়ে ‘মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সে সময় সংবাদটি নজরে আসে বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের তন্ময়ের। তিনি তাৎক্ষনিক খোঁজ খবর নিতে বলেন। এরপর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সরদার নাসির উদ্দিন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মোছাব্বেরুল ইসলাম, শেখ তন্ময়ের একান্ত সচিব এইচএম শাহিন তাকে দেখতে যান। তারা তাকে টাকা ও কম্বল দিয়ে সহায়তা করেন এবং জায়গা-সহ ঘর দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সরদার নাসির উদ্দিন বলেন, “মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছেন কোনো মানুষ ভূমিহীন ও গৃহহীন থাকবে না। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা আজ রতন কুমার বিশ্বাসকে ঘর দিয়েছি।” 

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মোছাব্বেরুল ইসলাম বলেন, “প্রধানমন্ত্রী মুজিববর্ষ উপলক্ষে ঘোষণা দিয়েছেন ভূমিহীন ও গৃহহীন কোনো পরিবার থাকবে না। এরই মধ্যে আমরা রতন কুমার বিশ্বসারের এর খবর পাই। আমরা সরোজমিনে গিয়ে দেখেছি তিনি রাস্তার পাশে একটি খুপরি ঘরে দীর্ঘদিন ধরে মানবেতর জীবন-যাপন করছিলেন। আমরা প্রধানমন্ত্রীর এই ঘর তাকে উপহার দিলাম। 

এছাড়া তিনি নিজেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে পরিচয় দিয়েছেন। এই বিষয়টি নিয়ে আমরা স্থানীয় অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে কথা বলছি। ইতোমধ্যে আমরা রতন বিশ্বাসকে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে যাচাই-বাছাই এর প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। পরবর্তীতে সে বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে সিদ্ধান্ত আসবে। এছাড়া তার পত্রিক সম্পত্তি জায়গা-জমি দখলের যে বিষয়টি তিনি আমাদের জানিয়েছেন সেটিও গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। প্রথমিক ভাবে আমরা যেটা জানতে পেরেছি, তার পত্রিক অনেক সম্পত্তি বিভিন্নজন দলিল করে নিয়েছেন এবং সর্বশেষ রেকর্ডে বিভিন্ন ব্যক্তির নামে রেকর্ড রয়েছে। সেই দলিল সঠিক না বেঠিক সেটি আদালতে প্রমাণের বিষয়। যার জন্য সে বিষয়টি নিয়ে আমরা তার সঙ্গে কথা বলব এবং তাকে আইনগত সহয়তা দেওয়া হবে।”

মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার “আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পে”র আওতায় বাগেরহাট জেলায় ৪৩৩টি ঘর বরাদ্ধ করা হয়েছে। এর মধ্যে বাগেরহাট সদর উপজেলায় ৫৪টি, কচুয়া ৩৬টি, রামপালে ১০টি, মোংলায় ৫০টি, মোল্লাহাটে ৩৫টি, চিতলমারীতে ১৭টি, ফকিরহাটে ৩০টি, মোরেলগঞ্জে ৬টি ও শরণখোলা উপজেলায় ১০০টি ঘর বরাদ্ধ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৩৮টি ঘর ইতিমধ্যেই অসহায় দুস্থ ভূমিহীনদের মধ্যে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং বাকি ৯৭টি ঘরের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের দিকে।