• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ২০, ২০২১, ০১:২০ এএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ২০, ২০২১, ১০:৫৮ এএম

দেশের মাটিতে বিদেশি রকমেলন

দেশের মাটিতে বিদেশি রকমেলন

বাংলাদেশে কেউ শখে কিংবা আবার কেউ বাণিজ্যিকভাবে বিদেশি ফলের চাষ করেন। প্রথমে পরীক্ষামূলক চাষাবাদে সফলতা পেয়ে শুরু করেন বাণিজ্যিকভাবে। তেমনই কয়েকটি বিদেশি ফলের মধ্যে স্ট্রবেরি, রামবুটান, মাল্টা, আঙুর ও ড্রাগন ফলের সফলতা পেয়েছেন নরসিংদী কৃষি বিভাগ। এসব ফল এখন কৃষক পর্যায়ে চাষাবাদ হচ্ছে।

এবার কৃষি বিভাগ নিবিড় পরীক্ষা চালিয়ে সফলতা পেয়েছেন রকমেলন উৎপাদন নিয়ে। এ ফলটি পরীক্ষামূলক চাষে সফলতার দাবিও করছেন নরসিংদী কৃষি বিভাগ।

নরসিংদী কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়, এই অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া রকমেলন চাষের জন্য খুবই উর্বর এবং উপযোগী। প্রথমবার পরীক্ষামূলক চাষেই রকমেলন ফলনে সফলতার মুখ দেখছেন। তাই ফলটির বাণিজ্যিক চাষাবাদ শুরু করতে চান কৃষকরা।

নরসিংদীতে বিদেশি ফলের চাষাবাদে সফলতা পেলেও সঠিক বাজারজাতের অভাবে কৃষকদের আগ্রহটা কিছুটা কম। তবে কিছু কিছু ফল স্থানীয় বাজারগুলোতে চাহিদা রয়েছে। এতে কৃককরা এই ফলগুলো এখনো আগ্রহ নিয়ে চাষাবাদ করছেন। এগুলো হলো মাল্টা, রামবুটান ও ড্রাগন।

কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা আশা করছেন, রকমেলন ফলটি চাষেও কৃষকরা আগ্রহী হয়ে উঠবেন সঠিক বাজারজাতকরণের সুযোগ পেলে। 

বিদেশি ফল রকমেলন নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন নরসিংদী সদর উপজেলা কৃষি উপসহকারী মোশারফ হোসেন।

তিনি জানান, ২০১৬ সালে সুজন নামে এক বন্ধুর সাহায্যে থাইল্যান্ড থেকে কুড়িয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে মাত্র ১০-১২টি রকমেলনের বীজ আনা হয়। এই বীজ সদর উপজেলার পাইকারচর গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমানকে দিয়ে রোপন করা হয়। এ থেকে ৮টি চারা অঙ্করোদগম হলে বৃষ্টির কারনে মাত্র ৫টি গাছে ফল ধরে। প্রতিটি ফলের ওজন দুইশ থেকে চারশ গ্রাম। ফলগুলো ভেতরে দুই রকমের হয়ে থাকে। একটি কমলা রঙের, অন্যটি হলুদে রঙের। 

কৃষি বিভাগ আরো জানায়, নরসিংদী সদর উপজেলার নুরালাপুর ইউনিয়নের শ্যামতলী গ্রামে কৃষক মো. নুরুল ইসলাম একশ শতক জমিতে রকমেলন চাষ করেন। কৃষি অফিসের তদারকি আর পরামর্শে কৃষক নুরুল ইসলাম প্রথম বছরেই সফলতা অর্জন করেন। গাছে গাছে ফল ঝুলে আছে। 

এরইমধ্যে নুরুল ইসলামের এই বাগান দেখতে প্রতিদিনই আশপাশের কৃষকরা ভিড় করছেন। ফলটি চাষের আগ্রহও প্রকাশ করছেন আশপাশের কৃষকরা। 

রকমেলন চাষি নুরুল ইসলাম জানান, কৃষি বিভাগের পরামর্শে নিয়মিত পরিচর্যায় জমিতে ফলন ভালোই হয়েছে। কিছু কিছু বিক্রির উপযোগী হয়েছে। আর সামনে কিছুদিনের মধ্যেই পুরোপুরি বিক্রি করা সম্ভব। তবে বর্তমান সময়ে লকডাউনের কারনে কিছুটা হতাশা দেখা দিচ্ছে। তাই কৃষি বিভাগ বাজারজাতের দায়িত্ব নিয়েছেন।

প্রথম বছরেই এর সফলতার দেখা যাবে বলে আশা করছেন তিনি।

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা হরিপদ ঘোষ বলেন, “রকমেলন চাষ করে ভালোই করেছেন। আশা করি লাভবান হবেন।”


নরসিংদী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিধ মহুয়া শারমীন মুনমুন জানান, রকমেলন ফলটি এ দেশে চাষাবাদের জন্য একটি উপযোগী এলাকা, যা নরসিংদী কৃষি বিভাগের পরিক্ষিত। কিন্তু এই ফসলটি এই এলাকায় একেবারে নতুন। এই ফলটি খেতে খুবই মিষ্টি এবং সুস্বাদু।”

“যদিও এই ফলটি এ দেশের বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যাচ্ছে না তবু ধারণা করা হচ্ছে ফলটি বাজারে ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি করবে। আশা করা যায় ফলটি চাষে দেশে একটি বাজার দখল করতে পারবে।”