• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ২১, ২০২১, ১২:০৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ২১, ২০২১, ১২:০৮ পিএম

হাওরের ধান দ্রুত কাটতে মাইকিং

হাওরের ধান দ্রুত কাটতে মাইকিং

বিরূপ আবহাওয়া থেকে বোরো ধান বাঁচাতে মৌলভীবাজারের হাকালুকি হাওরের বিভিন্ন এলাকায় দ্রুত ধান কাটতে মাইকিং করা হচ্ছে। এই প্রচারণা ধানকাটা শেষ না হওয়া পর্যন্ত চলবে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।

মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় হাকালুকি হাওর এলাকায় উপজেলা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে মাইকিং করতে দেখা যায়।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল মোমিন জানান, আবহাওয়া অফিস সূত্রে জেনেছি সামনের দিনগুলোতে ঘূর্ণিঝড়সহ ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ঝড়-বৃষ্টির কারণে বোরো ধানের ক্ষতি হতে পারে তাই প্রাকৃতিক দুর্যোগে পুরো ফসল যেন নষ্ট না হয়, সেজন্য মাইকিং চলছে।

মৌলভীবাজারের বিভিন্ন হাওরের মধ্যে হাকালুকি হাওর দেশের অন্যতম শীর্ষ শস্য ভাণ্ডার। এখানে সামান্য বৃষ্টিপাত হলেই তলিয়ে যায় এই হাওর। উজানে ভারত অংশে বৃষ্টি হলে সেই পানি দ্রুত নেমে আসে হাওরে। নিচু অঞ্চল হওয়ার কারণে প্রতি বছরই প্লাবিত হয় এই এলাকার ফসল। তাছাড়াও এ বছর করোনাকালে শ্রমিক সংকট এবং বিরূপ আবহাওয়ার কারণে যেন ফসল প্লাবিত না হয়, তাই সম্মিলিত চেষ্টা এবং অগ্রিম পরিকল্পনা করে যাচ্ছে কৃষক ও কৃষি বিভাগ।

হাকালুকি হাওরের কৃষক আব্দুল হালিম বলেন, “ধান পেকে গেছে কিন্তু আরও কয়েকদিন অপেক্ষা করেছিলাম, যেন আরও ভালো ভাবে ধানগুলো পাকে। তবে প্রায় রাতে বৃষ্টি হচ্ছে দেখে, এখন ভয় পাচ্ছি।” 

আগে ধান কাটবেন কিনা দ্বিধায় থাকলেও কৃষি বিভাগের মাইকিং এর কারণে তিনিসহ অনেকেই এখন বোরো ধান কাটতে উৎসাহিত হচ্ছেন বলে তিনি জানান।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কাজী লুৎফুল বারী জানান, “শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর মৌলভীবাজারে বোরো ধানের রেকর্ড উৎপাদন হবে। আবহাওয়ার কারণে যেন ধান নষ্ট না হয় তাই আমরা দ্রুত ধান কাটতে কৃষকদের উৎসাহ দিচ্ছি।”

এদিকে, হাকালুকির মতো জেলার হাইলহাওর, কাওয়াদিঘীসহ হাওরাঞ্চলের কৃষকদের গোলায় বোরো ধান ওঠা নির্ভর করে প্রাকৃতিক গতিপ্রকৃতির ওপর। কিন্তু ইতিমধ্যেই মৌলভীবাজারে প্রাকৃতিক দুর্যোগ কালবৈশাখী ঝড়, শিলাবৃষ্টি শুরু হয়েছে। প্রায় রাতে বৃষ্টি হচ্ছে। তাছাড়া করোনাকালে শ্রমিক সংকট ভাবিয়ে তুলছে কৃষকদের। তবে প্রশাসন বলছেন তারা এই বিষয়ে অবগত হয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছেন।

জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, “কৃষকরা যাতে সময়মতো পাকা ধান ঘরে তুলতে পারেন, সে জন্য জেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ তাদের পাশে আছে। করোনার কারণে শ্রমিক সংকট হতে পারে, তাই আমরা আগে থেকেই চা-শ্রমিকদের ধান কাটতে যুক্ত করতে উদ্যোগ নিয়েছি।”

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, মৌলভীবাজারে চলতি বছর বোরো আবাদ হয়েছে ৫৬ হাজার ৩শ ৪৫ হেক্টর। এতে ২ লাখ ১৭ হাজার মেট্রিক টন চাল উৎপাদন হবে।