• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২১, ০১:০০ এএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২১, ০১:০০ এএম

ঠাঁইহারা দুই অনাথ শিশু পাচ্ছে কেএসআরএমের স্নেহের আশ্রয়

ঠাঁইহারা দুই অনাথ শিশু পাচ্ছে কেএসআরএমের স্নেহের আশ্রয়

চট্টগ্রাম ব্যুরো ।।

অন্যের হয়ে জেল খাটা মিনু আক্তারের দুই সন্তান ইয়াসিন (১২) ও গোলাপের (৯) পড়াশোনার ভরণপোষণের দায়িত্ব নিলো দেশের অন্যতম ইস্পাত নির্মাণ শিল্প প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর প্রতিষ্ঠানের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান রাহাত অনাথ দুই সন্তানের দায়িত্ব নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

জেলা প্রশাসন সূত্রে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

কেএসআরএমের মিডিয়া অ্যাডভাইজার মিজানুল ইসলাম জানান, ‘কোম্পানির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান রাহাতের আগ্রহের কথা এরই মধ্যে জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। মূলত জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা অনুযায়ী কেএসআরএম করণীয় নির্ধারণ করবে। কেএসআরএম চায় হতভাগ্য মিনু আক্তারের অনাথ দুই সন্তান যেনো সমাজের নিষ্ঠুরতার বলি না হয়। তারা যেনো পৃথিবীর আলো বাতাসে আর দশটা শিশুর মতো হেসে খেলে বড় হতে পারে। পৃথিবী ও জীবনের প্রতি যেনো তাদের বিরূপ মনোভাব সৃষ্টি না হয়।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, ‘মিনু আক্তারের অনাথ দুই সন্তানের সার্বিক দায়িত্ব নিতে চাই শিল্প গ্রুপ কেএসআরএম। এরই মধ্যে কেএসআরএমের পক্ষ থেকে আমার সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে একাধিকবার। কেএসআরএমকে আমরা কিছু করণীয় নির্ধারণ করে দিবো। সে অনুযায়ী সন্তান দুটির ভরণপোষণের দায়িত্ব নিবে শিল্প প্রতিষ্ঠানটি। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা তাদের সার্বক্ষণিক খবরা-খবর রাখবো’

মিনু আক্তারের আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ বলেন, কেএসআরএমের এমন উদারতা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। এর মাধ্যমে মিনুর দুই এতিম ছেলে বেঁচে থাকার নিরাপদ অবলম্বন খুঁজে পেলো। এর চেয়ে খুশির খবর আর কি হতে পারে? 

স্বামী পরিত্যক্ত হতভাগ্য মিনু আক্তার তার তিন সন্তানের ভরণপোষণের আশ্বাসে অন্যের হয়ে কারাগারে যায়। কথা ছিল অল্পদিনের মধ্যে মুক্তি পাবেন। কিন্তু প্রায় তিন বছর অতিবাহিত হলে বিষয়টি জানাজানি হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আইনজীবী সহ কিছু মহানুভব মানুষের প্রচেষ্টায় দীর্ঘ আইনী প্রক্রিয়া শেষে মিনু ১৬ জুন কারাগার থেকে মুক্তি পান। এর মধ্যে নানা অভাব অনটনে মারা যায় মিনুর কন্যসন্তান জান্নাত। কারামুক্তির ১৩ দিনের মাথায় রহস্যজনক সড়ক দুর্ঘটনায় জীবন থেকে মুক্তি পান মিনু।

গত ২৮ জুন দিবাগত রাতে চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ বোস্তামী ফৌজদারহাট সংযোগ সড়কের আরেফিন নগর এলাকায় মিনুকে গাড়ি চাপা দেয়া হয়। এতে গুরুতর আহত হন তিনি। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে ২৯ জুন ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মিনু। কোনও পরিচয় না পাওয়ায় এক দিন পরে অজ্ঞাত হিসেবে তার লাশ দাফন করে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম। ৩ জুলাই রাতে পুলিশ ও পরিবার নিশ্চিত হয় যে অজ্ঞাত হিসেবে দাফন করা লাশটি মিনুর। এরই মধ্যে মিনুর বড় ছেলে অর্থাভাবে চাকরি নেয় ষোলশহর চায়ের দোকানে। মিনুর মৃত্যুর পর রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয় বড় ছেলে ইয়াসিন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে ফলাও করে সংবাদ প্রকাশ হয়। এতে টনক নড়ে প্রশাসনের। পুলিশের তৎপরতায় খোঁজ মেলে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ শিশু কিশোর সংশোধনাগারে। ছোট ছেলে গোলাপ আছেন দিনমজুর মামার আশ্রয়ে। 

জাগরণ/এমএ