এইচএসসি পরীক্ষার ঠিক একদিন আগে 'অনেকটা জিম্মি করে' টাকার বিনিময়ে শিক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র দেয়ার অভিযোগ উঠেছে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামরী উপজেলার ভুরুঙ্গামারী মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ খালেকুজ্জামানের বিরুদ্ধে।
ফরম পূরণের সময় শিক্ষার্থীদের কাছে পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট সকল ফি নেয়া হলেও বিধি বহির্ভূতভাবে টাকার বিনিময়ে প্রবেশপত্র নিতে বাধ্য করছেন তিনি। টাকার বিনিময়ে প্রবেশপত্র দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন অধ্যক্ষ খালেকুজ্জামান।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানান, ফরম পূরণের সময় নির্ধারিত ফি দিয়ে তারা ফরম পূরণ করে জমা দিয়েছেন। এসময় বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত প্রবেশপত্র খরচও নেয়া হয়েছে। এরপরও পরীক্ষার আগের দিন তাদেরকে প্রবেশপত্র নেয়ার জন্য ৩শ থেকে ৪শ টাকা করে দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। অন্যথায় তাদের প্রবেশপত্র দেয়া হচ্ছে না। এটাকে এক প্রকার জিম্মি করে টাকা আদায় করার প্রক্রিয়া বলে অভিযোগ করছেন শিক্ষার্থীরা।
অধ্যক্ষের দাবি, কলেজ চালানোর খরচ মেটাতে এভাবেই উপজেলার সকল কলেজের অধ্যক্ষরা টাকার বিনিময়ে প্রবেশপত্র দিচ্ছেন। আর এ নিয়ে তার কাছে বোর্ডের চিঠিও আছে বলে দাবি করেন অধ্যক্ষ।
অধ্যক্ষ খালেকুজ্জামান বলেন, কলেজ চালাতে অনেক খরচ হয়। সেটা মেটাতে উপজেলার সব কলেজের অধ্যক্ষ এভাবে টাকা আদায় করছেন।
এভাবে টাকা আদায়ে আইনগত কোনও বৈধতা আছে কি না, জানতে চাইলে অধ্যক্ষ বলেন, 'আছে, আমার কাছে বোর্ডের চিঠি আছে। কেন্দ্র ফি মেটাতে এই টাকা নেয়া হচ্ছে।'
ফরম পূরণের সময় কেন্দ্র ফি নেয়া হলেও কেন আবার একই কারণ দেখিয়ে টাকা নেয়ার বৈধতা দিচ্ছেন, এমন প্রশ্নে অধ্যক্ষ বলেন, ' সে সময় আমরা কেন্দ্র ফি নেইনি।' তবে টাকা আদায়ের বিপরীতে কোনও রশিদ দেয়া হচ্ছে না বলে জানান তিনি।
প্রবেশপত্র বাবদ টাকা আদায়ে অধ্যক্ষের এমন দাবির আইনগত কোনও বৈধতা নেই বলে জানিয়েছেন ভূরুঙ্গামারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুর রহমান। তিনি বলেন, 'প্রবেশপত্র দেয়ার বিনিময়ে শিক্ষার্থীদের কাছে এভাবে টাকা আদায়ের কোনও বৈধতা নেই। আমি বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নেবো।'
অতীতে ওই অধ্যক্ষের এমন কর্মকান্ড নিয়েও উষ্মা প্রকাশ করেন এই শিক্ষা কর্মকর্তা।
জেলা শিক্ষা অফিসার (ডিইও) শামসুল আলম জানান, রশিদ ছাড়া এভাবে টাকা আদায়ে বিষয়ে কঠোরভাবে বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন ব্যবস্থা নিতে পারেন।
এ বিষয়ে জানতে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা পরীক্ষা কমিটির সভাপতি দীপক কুমার দেব শর্মার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। কেউ আমার কাছে অভিযোগও করেনি। আমি খোঁজ নিচ্ছি।'
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, 'বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নিতে ইউএনওকে নির্দেশ দিচ্ছি।'
কলেজ কর্তপক্ষের তথ্যমতে, এবছর এই কলেজ থেকে বিভিন্ন বিভাগে ২৩২ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। শিক্ষার্থী প্রতি প্রবেশপত্র বাবদ ৩শ' টাকা হারে আদায় করলে অতিরিক্ত ৬৯ হাজার ৬ শ' টাকা আদায় করবে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
এসকেএইচ//