• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মার্চ ৩১, ২০২২, ১২:০৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মার্চ ৩১, ২০২২, ১২:০৭ পিএম

দুঃখের দৈর্ঘ্য ৩ কি.মি.

দুঃখের দৈর্ঘ্য ৩ কি.মি.

আব্দুর রউফ রিপন
নওগাঁর রাণীনগরের বড়গাছা ইউনিয়ন ধানসহ অন্যান্য কৃষিপণ্য উৎপাদনের জন্য প্রসিদ্ধ। এই ইউনিয়নের একটি জনগুরুত্বপূর্ন গ্রামীণ রাস্তা হচ্ছে গহেলাপুর থেকে কাটরাশইন হাটখলা যাওয়ার রাস্তাটি। বর্তমানে এই রাস্তার বেহাল দশার কারণে থমকে আছে এই অঞ্চলের কৃষকসহ হাজার হাজার মানুষের ভাগ্যের চাকা। মাত্র তিন কিলোমিটার সড়কটি এখন এই অঞ্চলের মানুষের দুঃখের কারণ হয়ে দাড়িয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কাটরাশইন, উমরপুর, পোঁওয়াতাপাড়াসহ ১০ গ্রামের হাজার হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র রাস্তা হচ্ছে গহেলাপুর-কাটরাশইন রাস্তা। নব্বইদশকে গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে গহেলাপুর বাজার থেকে কাটরাশইন হাটখোলায় যাওয়ার জন্য এই তিন কি.মি. রাস্তা নির্মাণ করা হয়। সেই সময় রাস্তাটির গহেলাপুর থেকে এক কি.মি. পর্যন্ত পাকা করা হয় আর অবশিষ্ট রাস্তায় ইট বিছানো হয়। কিন্তু পরবর্তিতে বছরের পর বছর রাস্তাটি সংস্কার কিংবা মেরামত না করায় বর্তমানে শুকনো মৌসুমেও চলাচল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ন হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে রাস্তার কিছু কিছু অংশ থেকে ইট উধাও হয়ে তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্তের, যা পায়ে হেটে পার হওয়াই অত্যন্ত কষ্টের। 

যার কারণে এই অঞ্চলের কৃষকসহ হাজার হাজার মানুষরা তাদের কৃষিপণ্যসহ অন্যান্য উপকরণ পরিবহন করতে পারছেন না। এমনকি ভ্যানগাড়িও চলাচল করতে পারছে না। যার কারণে কৃষকরা বাধ্য হয়েই ধানসহ অন্যান্য কৃষি উপকরনগুলো কম মূল্যে ফড়িয়াদের কাছে বিক্রি করছেন। এতে করে কৃষকরা নায্যমূল্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছেন বছরের পর বছর। 

এছাড়াও রাস্তাটির পাঁচবাড়িয়া নামক স্থানের একটি কালভার্ট ভেঙ্গে পড়ায় রাস্তার দুর্ভোগের মাত্রাকে আরো একধাপ বাড়িয়ে দিয়েছে। রাস্তাটি ভালো না হওয়ায় শুকনো ও বর্ষা মৌসুমে এই অঞ্চলের শত শত শিক্ষার্থীদের দীর্ঘপথ পায়ে হেটে পাড়ি দিয়ে নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে হয়। যার কারণে এই অঞ্চলের মানুষদের অর্থনীতির চাকা থমছে আছে মাত্র এই তিন কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তার কারণে।

কাটরাশইন গ্রামের মন্টু সেপাই, মিলন হোসেনসহ অনেকেই বলেন, দেশের প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে শহরের সুবিধা পৌছে দেওয়ার কথা থাকলেও আমরা এই সুবিধা থেকে অনেক দূরে আছি। আমরা এই অঞ্চলের মানুষরা এখনোও চরম ভাবে অবহেলিত। গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আধুনিকায়ন না করা পর্যন্ত শহরের সুবিধা কখনোই গ্রামে পৌছে দেওয়া সম্ভব নয়। তাই এই সামান্য গ্রামীণ রাস্তাটিকে দ্রুত আধুনিকায়ন করে এই অঞ্চলের কৃষকসহ হাজার হাজার মানুষের ভাগ্যের চাঁকা সচল করতে প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করছি।

বড়গাছা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন মাষ্টার বলেন এই রাস্তাটি বর্তমানে চলাচলে চরম দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে। আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর এই রাস্তাটি মেরামত করার বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করবো। বরাদ্দ পেলেই আপাতত মেরামতের কাজ শুরু করা হবে।

উপজেলা প্রকৌশলী শাহ মো. শহীদুল হক বলেন এই রাস্তাটি উপজেলা পরিষদ তৈরি করেছিলো। তাই উপজেলা প্রশাসন চাইলেই বরাদ্দ দিয়ে এই জনগুরুত্বপূর্ন গ্রামীণ রাস্তাটি মেরামত কিংবা সংস্কার করতে পারেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, আমি রাস্তাটি সরেজমিনে পরিদর্শন করে দ্রুত তা সংস্কার কিংবা মেরামত করার পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।

জাগরণ/আরকে