• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ২, ২০২২, ০১:৪৫ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ২, ২০২২, ০১:৪৫ পিএম

মৌলভীবাজারে মধ্যরাতে জমজমাট ঈদবাজার

মৌলভীবাজারে মধ্যরাতে জমজমাট ঈদবাজার
ছবি- জাগরণ।

পুলক পুরকায়স্থ, মৌলভীবাজার// 
'রাতের ঈদ বাজার, এ এক অন্য রকমের অনুভূতি। দিনে প্রচন্ড গরম ও যানজট থাকায় বের হইনি। এখন স্ত্রীকে নিয়ে বেড়িয়েছি।' এমন মন্তব্য করেন ঈদের কেনাকাটা করতে আসা আব্দুর রব।

নতুন বিয়ে হয়েছে হাবিবার। ননদের নিয়ে এসেছেন শেষ মূহুর্তের ঈদ বাজারে। তিনি বলেন, 'শ্বশুর বাড়ির সবাই রাতে কেনাকাটা করতে পছন্দ করেন। এবার আমিও তাদের সাথে আসলাম, ভালো লাগলো।'

আব্দুর রব ও হাবিবার মতো অনেকেরই রাতের বেলায় ঈদের কেনাকাটা করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।

একদিন পর ঈদ। মৌলভীবাজারের ঈদবাজারে চলছে শেষ মূহুর্তের কেনাকাটা। সন্ধ্যার পর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত অভিজাত শপিংমল, ছোট বড় মার্কেটসহ ফুটপাতের দোকানগুলোতে দেখা যায় নানা বয়সী ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। বর্ণিল আলোয় রাঙানো এই শহরে রাতের বেলায় কেনাকাটা করছেন অনেক ক্রেতা।

গেলো দুই বছর করোনার প্রকোপে বিধিনিষেধের প্রভাব ছিলো ঈদের বাজারে। ব্যবসা হয়নি। এবার করোনার সংক্রমণ কমে আসায় বিধিনিষেধের বাইরে রয়েছে সবকিছু। ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনার ধাক্কা কাটিয়ে উঠে দুই বছর পর ব্যবসায় এসেছে স্বস্তি। বিগত দিনের ক্ষতিগুলো পুষিয়ে ওঠার স্বপ্ন দেখছেন তারা। ঈদের পূর্ব রাত পর্যন্ত ক্রেতার চাপ আরও বাড়বে বলে প্রত্যাশার কথা জানান বিক্রেতারা।

রবিবার (১ মে) রাত ১০টার পর জেলা শহরের সেন্ট্রালরোড়, কোর্টরোড, পশ্চিমবাজারসহ কুসুমবাগ এলাকায় বেশ কয়েকটি মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে মধ্যরাত পর্যন্ত প্রতিটা দোকানে ক্রেতাদের কেনাকাটা করতে।

উজ্জ্বল আলোয় আলোকিত এই শহরের প্রায় প্রতিটি শপিংমল আর মার্কেটের আঙিনা সাজানো হয়েছে লাল-সবুজ-নীল-হলুদ আলোয়।

শহরের বড় বড় শপিংমল ছাড়াও বিভিন্ন এলাকার ছোট-বড় দোকানেও বেড়েছে ক্রেতার চাপ। দাম আর মান দেখে ক্রেতারা কিনছেন তাদের পছন্দসই পণ্য।

রাতের বেলায় শহরের মার্কেটগুলো অনেক সুন্দর দেখায়। চারপাশের আলোকসজ্জা দেখতেও ভালো লাগে। যান্ত্রিক কোলাহল কম থাকায় এখন কেনাকাটা করতে আসলাম।' বলেন সৈয়ারপুরের ফয়সাল ও সাদিয়া দম্পতি।

শহরের সেন্ট্রালরোড এলাকায় কথা হয় গিয়াসনগর ইউনিয়নের নুরুল ইসলাম জামালের সাথে। তিনি বলেন, 'পরিবার নিয়ে কেনাকাটার সময় পাননি। আজ স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে এসেছি। প্রতি বছরেই ঈদে পরিবারের ছোটবড় সবাইকে নিয়ে একটু রাতেই বের হই।'

বর্ণিল আলোয় রাঙানো এই শহরে রাতের বেলায় কেনাকাটা করতে অনেকেই আসেন। এ সময় যানজট কম থাকে, জানান চাঁদনীঘাট এলাকার হাবিবুর রহমান রাজিব।

কোর্টরোডের জুতাবাজারের ব্যবসায়ী নান্টু দেব বলেন, দিনে ক্রেতারা কম আসছেন। তবে সন্ধ্যার পর থেকে পুরো মার্কেটে ক্রেতাদের ভিড় লেগে থাকে। রাত ৩টা পর্যন্ত ব্যবসা চলে।

আলাপকালে কয়েকজন ব্যবসায়ীরা জানান, দিনের চেয়ে সন্ধ্যারাতে ক্রেতাদের ভীড় একটু বেশি হয়। দিনে গরমের তিব্রতা ও যানজট এড়াতে অনেক ক্রেতা রাতে কেনাকাটা করতে আসেন।

এদিকে সোমবার (২ মে) সকালে মৌলভীবাজার শহরের চৌমোহনা থেকে কুসুমবাগ পর্যন্ত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অন্যদিনের চেয়ে দিনের বেলায় ক্রেতাদের তেমন একটা জনসমাগম নেই। যানজটও ছিলো কম।

শহরের পশ্চিমবাজার এলাকায় কয়েকজন ক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, করোনার কারণে গত দুই বছর তেমন কেনাকেটা করা হয়নি। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসায় এখন কেনাকাটা করতে এসেছেন তারা।

অফারের ছড়াছড়ি না থাকলেও নামিদামি শোরুমগুলোতে এরই মধ্যে বিক্রি বেড়েছে কয়েকগুণ। শহরের কয়েকটি শপিংমলের বিভিন্ন শোরুমের বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শেষ মূহুর্তে বেচাকেনা ভালো হচ্ছে। ক্রেতাসমাগমও সন্তোষজনক।