• ঢাকা
  • বুধবার, ০১ মে, ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৩, ২০১৯, ১০:০২ এএম

ঠাকুরগাঁওয়ে টমেটোর দাম না থাকায় কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত  

ঠাকুরগাঁওয়ে টমেটোর দাম না থাকায় কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত  
জমি থেকে সংগ্রহ করা টমেটো



অন্য জেলা থেকে টমেটো আমদানির কারণে বিপাকে পড়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের টমেটো চাষিরা। মওসুমের শুরুতে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি টমেটো ৪ দরে বিক্রি হচ্ছে।

রোববার (০৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে ঠাকুরগাঁওয়ের গোবিন্দনগর কাঁচাবাজরের আড়তে দেখা গেছে, প্রতি ক্যারেট ২৫ কেজি টমেটো ১শ টাকা দরে বিক্রি হতে। এতে স্থানীয় চাষীরা তাদের উৎপাদন খরচও তুলতে না পেরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ।  

কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে জেলায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে আগাম সবজির চাষ হয়েছিলো। স্থানীয় বাজারের চাহিদা অনুযায়ী চাষীরা টমেটোর চাষ করেছেন। অন্য জেলা থেকে টমেটো ঠাকুরগাঁওয়ের বাজারে আসার কারণে দাম অনেক কমেছে বলে দাবি স্থানীয় চাষীদের। তবে পাইকারি বাজারে দাম কমলেও খুচরা বাজারে এখনও ১২-১৫ টাকা দরে টমেটো বিক্রি হচ্ছে।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আখানগর এলাকার টমেটো চাষী আব্দুল হালিম বলেন, প্রতি বারের ন্যায় এবারও ২ একর জমিতে আগাম টমেটোর চাষ করেছি। মোট খরচ হয়েছে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা। এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৫ হাজার টাকা বিক্রি করে পেয়েছি। প্রথমে স্থানীয় বাজারে ৪০ টাকা প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি করলেও এখন আড়তে ৪ টাকা দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। শীতকালে আগাম টমেটো চাষ বেশি ঝুঁকি সেই সঙ্গে বেশি লাভের আশায় চাষ করি। তবে টমেটো পাকাতে কিছুটা ঝাঁমেলা আছে। গাছ থেকে পরিপক্ক কাঁচা টমেটো সংগ্রহ করে ২-১ দিন স্তুপ করে ঢেকে রাখতে হয়, না হলে ভাল রং আসে না। আর রং না আসলে বাজারে চাহিদা কম থাকে। বর্তমান বাজারে টমেটো বিক্রি করে আসল টাকা কোনো মতে তুলতে পারলেও লাভবান হতে পারবো না। 

                                                জমি থেকে সংগ্রহ করা টমেটো 
একই উপজেলার কচুবাড়ি মাটিগাড়া এলাকার টমেটো চাষী মোখলেসুর রহমান বলেন, ১ একর জমিতে টমেটোর চাষ করেছি ।প্রথমে ভাল দাম পেলেও এখন দাম অনেক কম। বর্তমান বাজারে বিক্রি করে আসল টাকা তুলতে পারবো না।

ঠাকুরগাঁও রোড বাজারে বাজারের ক্রেতা রিপু বলেন, বিক্রেতারা প্রতিকেজি টমেটো দাম হাঁকছে ২০ টাকা এবং ১৫ টাকা দরে কিনেছি। টমেটোর দাম কমেছে আমরা জানি না। সরকারি ভাবে বাজার মনিটরিং করা  হলে ব্যবসায়ীরা আমাদের কাছে যে কোনো পণ্য চড়া দামে বিক্রি করতে পারতো না।

ঠাকুরগাঁও কাঁচা বাজারের আড়ৎদার ফজলুর রহমান বলেন, বাজারে যখন শুধুমাত্র ঠাকুরগাঁওয়ের টমেটো বিক্রি হতো তখন দাম ভাল ছিল। এখন আড়তে রাজশাহী এলাকার টমেটো আসার কারণে দাম কমে গেছে। টমেটো বেশি দিন রাখা যায় না।যদি সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকতো তাহলে স্থানীয় চাষীরা লাভবান হতো। পাইকারি বাজারে দাম কমলেও খুচরা বাজারে না কমার বিষয়ে তিনি বলেন, ক্রেতারা বর্তমান বাজার না জানার কারণে খুচরা ব্যবসায়ীরা বেশি দাম নিতে পারে। তবে ক্রেতারা যদি দাম করে বাজার করে তা হলে ভাল হবে।

ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আফতাব হোসেন বলেন, বাজারে প্রথমে টমেটোর দাম থাকলেও বর্তমানে অন্য জেলা থেকে টমোটো আসার কারণে পাইকারি বাজারে দাম কিছুটা কমে গেছে। তাছাড়া টমেটো বাজারে একসঙ্গে আসার কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবে বাইরের জেলা থেকে টমেটো আসা বন্ধ হলে দাম কিছু বাড়তে পারে।
বিএস