বরিশালের উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্টোর কিপারের বিরুদ্ধে চিকিৎসাধীন রোগীদের জন্য বরাদ্দকৃত ওষুধের চাহিদাপত্র জালিয়াতি করে কয়েক লাখ টাকার ওষুধ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
সরকারি ওষুধ আত্মসাৎ ও ওষুধের হিসাবের গরমিলের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সাচী দাস সানি ও মেডিকেল অফিসার ডা. শওকত আলীর সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সিভিল সার্জন।
জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগের রোগীদের মাঝে ওষুধ বিতরণের জন্য নার্স ইনচার্জ ফাতেমা বেগম ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের গত ডিসেম্বর মাসে চাহিদাপত্র দাখিল করেন। ওই চাহিদাপত্রে তিনি রোগীদের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক ক্যাপসুল স্যাফিকজিন ৩শ পিচ, ব্যথা নাশক ইনজেক্টশন কিটোরোলাক ১শ ৮০ পিচ ও গ্যাস্টিকের ক্যাপসুল ওমিপ্রাজল ১শ পিচ ওষুধ চান।
স্টোর কিপার মনিরুজ্জামান চাহিদাপত্র অনুযায়ী ইনচার্জকে ওষুধ প্রদান করেন। কিন্তু নাসের দেয়া চাহিদাপত্রের থেকে রেজিস্ট্রার খাতায় জালিয়াতি (ওভারাইটিং) করে স্টোর কিপার মনির অ্যান্টিবায়োটিক ক্যাপসুল স্যাফিকজিন ৩শ স্থলে ৪ হাজার ৩শ পিচ, ব্যথা নাশক ইনজেক্টশন কিটোরোলাক ১শ ৮০ এর স্থলে ১ হাজার ৮শ পিচ ও গ্যাস্টিকের ক্যাপসুল ওমিপ্রাজল ১শ এর স্থলে ৫ হাজার ১শ পিচ ওষৃধ লিখেন এবং অতিরিক্ত প্রায় আড়াই লাখ টাকার ওষুধ নিজে আত্মসাৎ করেন।
যা রেজিস্টার খাতা দেখতে গিয়ে ওভাররাইটিং দেখে সিভিল সার্জনের কাছে সন্দেহজনক মনে হয়। পরে তিনি এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।
এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্য উজিরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক শওকত আলী জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে ওষুধ আত্মসাতের কিছুটা সত্যতা পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে এখনো তদন্ত চলছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. একেএম সামছউদ্দিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। ওষুধ আত্মসাতের বাইরে অন্য কোন অনিয়ম কিংবা দুর্নীতি হয়েছে কিনা এবং এর সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত কিনা সে বিষয়টিতে তদন্ত কমিটিকে গুরুত্ব দেয়ার জন্য বলা হয়েছে।
অপরদিকে অভিযুক্ত উজিরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্টোর কিপার মনিরুজ্জামান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কাজ-কর্মে ভুল ত্রুটির বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্যই স্যার (সিভিল সার্জন) তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। এর বাইরে কিছুই না।
উল্লেখ্য, গত ২৬ জানুয়ারি বরিশাল সিভিল সার্জন ডা. মনোয়ার হোসেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন কালে বহির্বিভাগের রোগীদের মাঝে ওষুধ বিতরণের রেজিস্ট্রার খতিয়ে দেখলে গিয়ে গত ডিসেম্বর মাসের প্রায় আড়াই লাখ টাকার ওষুধের গরমিল খুঁজে পান।
এএস/