• ঢাকা
  • সোমবার, ০৬ মে, ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৯, ১১:৪১ এএম

শিক্ষক-শিক্ষার্থী কিছু নেই, শুন্য পড়ে আছে বিদ্যালয় ভবন

শিক্ষক-শিক্ষার্থী কিছু নেই, শুন্য পড়ে আছে বিদ্যালয় ভবন
পাঠদান শুরু না হওয়া পূর্ব হোসনাবাদ মোহাম্মাদীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়- ছবি: জাগরণ।

 

বরগুনার বেতাগীতে শিক্ষক নিয়োগ না দেয়ায় শুরু হয়নি দু’টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কার্যক্রম। যদিও কার্যক্রম শুরু করার জন্য নতুন পাকা ভবন, সকল প্রকার নতুন আসবাবপত্র ও পৃথক দুটি শৌচাগার প্রস্তত রয়েছে। সুপেয় পানির জন্য বসানো হয়েছে গভীর নলকূপ। কিন্তু অযত্ন, অবহেলায় দু’টি বিদ্যালয়ের ২ কোটি ৫৭ লাখ টাকার সরকারি সম্পদ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

জানা যায়, সারাদেশে বিদ্যালয়বিহীন গ্রামে ১ হাজার ৫০০ বিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্পের আওতায় ২০১২-১৩ সালে ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে বিবিচিনি ইউনিয়নের সর্দারপাড়া হাবিবুর রহমান চান মিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২০১৩-১৪ সালে ৬১ লাখ টাকা ব্যয়ে হোসনাবাদ ইউনিয়নের পূর্ব হোসনাবাদ মোহাম্মাদীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং সাড়ে ৬৩ লাখ টাকা ব্যয়ে বিবিচিনি ইউনিয়নের এম এ খান আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ২০১৫-১৬ অর্থবছরের সাড়ে ৮৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে বিবিচিনি ইউনিয়নের দক্ষিণ ফুলতলা মোস্তফা কামাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ করা হয়। এসব বিদ্যালয়ে এখনো স্থায়ীভাবে কোনো শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়নি। ভর্তি করা হয়নি কোনো শিক্ষার্থী। ফলে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে বিদ্যালয় ভবনসহ অন্যান্য স্থাপনা।

তবে এম এ খান আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুজন এবং মোস্তফা কামাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একজন শিক্ষক ডেপুটেশনে বদলি করা হয়েছে। ফলে সীমিতভাবে চলছে বিদ্যালয় দুটির কাযর্ক্রম।

হোসনাবাদ ইউনিয়নের পূর্ব হোসনাবাদ গ্রামের শিক্ষক-শিক্ষার্থীবিহীন মোহাম্মদীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দৃষ্টিনন্দন নতুন ভবন দূর থেকেই দৃষ্টি কাড়ে। তবে ভবনের সব কক্ষে ঝুলছে তালা। এ এলাকার শিক্ষার্থীদের পার্শ্ববর্তী গ্রামের বিদ্যালয়ে গিয়ে পড়ালেখা করতে হচ্ছে।  গ্রামের বিদ্যালয়টি চালু না হওয়ায় অনেক ছেলেমেয়েরা দূরের বিদ্যালয়ে না গিয়ে সংসারের কাজকর্ম করছে ফলে তাদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

বিদ্যালয়ের জমিদাতা মো. এনছাব আলী জানান, তার ভাইদের সঙ্গে তিনিও বিদ্যালয়ের নামে ৩০ শতাংশ জমি দান করেছেন। এলাকার  ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার সুযোগ দেয়ার জন্য বাবার নামে এ বিদ্যালয়টি স্থাপন করা হয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত বিদ্যালয়টি চালু না হওয়ায় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।

এ নিয়ে কথা হয় এলাকার বাসিন্দা ও বেতাগী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক মো. শাহীন জানান, ৪ বছর আগে বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ার কারণে বিদ্যালয়টি চালু করা যাচ্ছেনা। বিদ্যালয়টি চালু হলে গ্রামের ছেলেমেয়েরা পড়ালেখায় আরও বেশি আগ্রহী হতো।

বেতাগী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কর্তৃপক্ষ শিক্ষক নিয়োগ না দেয়ায় এখনো বিদ্যালয়গুলো চালু করা যাচ্ছেনা। শিক্ষক পদায়ন হলেই এসব বিদ্যালয় চালু করা হবে।

উপজেলা নিবার্হী অফিসার মো. রাজীব আহসান বলেন, বিদ্যালয়গুলো চালু করার বিষয়ে শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বরগুনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এমএম মিজানুর রহমান বলেন, সরকার বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা সফল করতে বিশেষ প্রকল্পের আওতায় বিদ্যালয়বিহীন গ্রামে এসব বিদ্যালয় নির্মাণ করেছে। শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ায় পাঠদান কার্যক্রম শুরু করা যাচ্ছেনা। তবে এ বছর শিক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা করা হবে।


সাইসে