• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৯, ১২:০১ পিএম

ঠাকুরগাঁও

মরে যাওয়া নদীর বুকে ধান চাষ

মরে যাওয়া নদীর বুকে ধান চাষ
ঠাকুরগাঁওয়ে মরে যাওয়া নদীর বুক জুড়ে শোভা পাচ্ছে রোরো ধানের চাষ -ফাইল ছবি

 

কর্তৃপক্ষের নজরদারীর অভাবে ঠাকুরগাঁওয়ের নদীগুলো মরে যেতে বসেছে। আর এই মৃত প্রায় নদীরগুলোর বুক জুড়ে শোভা পাচ্ছে ভূমিহীন চাষীদের রোরো ধানের চাষাবাদ। এসব ধানক্ষেতে কীটনাশক স্প্রে করায় মাছ শূন্য হয়ে পড়েছে জেলার নদীগুলো।

চলতি বছর ঠাকুরগাঁও জেলায় বোরো ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬২ হাজার ৩৬০ হেক্টর এবং উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লক্ষ ৯৭ হাজার ৫৭২ মে.টন চাল। এর মধ্যে প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমিই নদীর বুক। জেলার ১২টি নদীর মধ্যে রয়েছে- টাঙ্গন, তীরনই, লাছি, নাগর, শুক, সেনুয়া, ভুল্লী, ঢেঁপা, কুলিক,পাথরাজ,আমন-দামন ও লোনা।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, জেলার ১২টি নদীর দৈর্ঘ্য ৪৫৬ কিলোমিটার। এলাকার প্রবীণদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক সময় এ জেলার টাগংন নদীসহ কয়েকটি নদীতে নৌকা চলাচল করতো। সারাবছর নদীতে মাছ ধরে জীবন ধারন করতেন জেলে সম্প্রদায়। কিন্তু নদীর উৎস ভারতের উজানে হওয়ায় এবং ভারত একতরফা ভাবে বাঁধ নির্মাণের ফলে দিনদিন এসব নদীর নাব্যতা হারিয়ে গেছে। বর্ষাকালে কিছুদিন পানি থাকলেও বর্ষা শেষে নদী জলশূন্য হয়ে পড়ে। শুষ্ক মৌসুমে জেলার বেশির ভাগ নদী পরিণত হয় মরা সরু খালে। তাই এ মৌসুমে নদীর বুকে জেগে ওঠা চড়ে ভূমিহীন কৃষকরা বোরো ধান চাষ করে। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

কলেজপাড়া মহল্লার ভূমিহীন কৃষক শাহীন ফেরদৌস জানান, ধান লাগানোর মতো আমার কোন জমি জমা না থাকায় প্রতি বছর নদীর চরে ধান লাগাই। চাষ করে যা পাই তা দিয়ে সংসারের কিছুদিন চালের যোগান হয়।
 
আর্টগ্যালারি এলাকার নাজমুল হক বলেন, শহরের  হোটেল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ময়লা এনে টাগংন  নদীতে ফেলা হচ্ছে। ফলে ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধে অবসর সময়ে এখন নদীর পাড়ে বসা যায় না।

জেলা মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তা ড. মুহাম্মদ নিয়াজ উদ্দীন বলেন, জেলার নদীগুলো প্রাণীজ আমিজ সরবরাহের প্রধান উৎস্য। এগুলোতে মাছ চাষ করে একদিকে যেমন জেলার মাছের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব তেমনি সাসটেনেবল ডেভলাভমেন্ট গোল অর্জনে ক্ষুধামুক্ত, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত, উন্নত পুষ্টি এবং টেকসই কৃষি ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণে ভূমিকা রাখা সম্ভব।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৗশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, সংকট মোকাবেলায় কেন্দ্রীয়ভাবে কয়েকটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। সারা দেশের নাব্যতা হারানো নদীগুলো ড্রেজিংয়ের জন্য এই প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে নদীর পানি ধারন ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি কয়েকটি নদীতে রাবার ড্যাম স্থাপনের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। সেটা বাস্তবায়ন করা হলে পানি ধারন করে প্রাকৃতিক ভারসাম্য বৃদ্ধি সহ জীববৈচিত্র্য রক্ষায় অবদান রাখতে পারব।
 
এএস