‘আমরা সবাই তালেবান, বাংলা হবে আফগান’ এই স্লোগানের মধ্য দিয়েই মূলত বাংলাদেশে মৌলবাদী সংগঠনের উত্থান হয় ১৯৯২ সালে। আফগানিস্তানের তালেবানদের হয়ে যুদ্ধে যাওয়া আফগান ফেরত কতিপয় ব্যক্তিই জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে প্রথম হরকাতুল জিহাদ আল-ইসলামী বাংলাদেশ (হুজি)- নামে একটি দল গঠনের ঘোষণা দেয়। এই হুজির অর্থায়ন ও প্রশিক্ষণ-দুটোর পেছনেই কাজ করেছে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা- আইএসআই।
১৯৯৮ সালে হুজি থেকে বেরিয়ে এসে শায়খ আবদুর রহমান জামালপুরে জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি) গঠন করেন। শায়খ আবদুর রহমানের পরামর্শে সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলাভাই-এর নেতৃত্বে জেএমবির আরেকটি অংশ জাগ্রত মুসলিম জনতা বাংলাদেশ (জেএমজিবি) গঠন করে। পরের বছর কাওসার হুসাইন সিদ্দিকী নামে একজন গড়ে তোলেন আরেকটি জঙ্গি সংগঠন শাহাদাত-ই আল হিকমা। আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের অংশ হিসেবে ২০০১ সালে ‘হিযবুত তাহরীর’ ও ২০০৭-০৮ সালে ‘আনসারুল্লাহ বাংলা টিম’ (এবিটি) বাংলাদেশে আত্মপ্রকাশ করে।
এ সকল হামলায় দেশের সরকারপ্রধান হতে শুরু করে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের টার্গেটে পরিণত করা হয়। বিশেষ করে যারা স্বাধীনতার সপক্ষ শক্তি হিসেবে পরিচিত। এছাড়া দেশের সাংস্কৃতিক, কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টাও করা হয় জঙ্গি-হামলার মাধ্যমে দেশের অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করতে।
মহাজোট সরকারের আমলে ব্লগার, লেখক, প্রকাশক, হিন্দু-খ্রিস্টান-বৌদ্ধধর্মীয় পুরোহিত, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, মানবাধিকারকর্মী, ভিন্নমতের ইসলামি ভাবধারার অনুসারী, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তা ও বিদেশিদের ওপর একের পর এক চাপাতি, গুলি ও ধারালো অস্ত্রের হামলা বর্তমান সরকার তথা শেখ হাসিনার জঙ্গিবাদ দমনের অবদানকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছিলো। এমন ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক মহল। প্রশ্নবিদ্ধ হয় বাংলাদেশের সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি।
২০১৩ সালে ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার খুনের পর থেকে টাঙ্গাইলে হিন্দু দর্জি নিখিল জোয়ারদার হত্যাকাণ্ড পর্যন্ত ৩৭টি হামলার মধ্যে ২৫টি জেএমবি, আটটি আনসারুল্লাহ বাংলা টিম, জামা’আতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি), আনসার আল-ইসলাম, আনসারল্লাহ বাংলা টিম, হরকাতুল-জিহাদ-আল-ইসলাম (হুজি-বি), হিযবুত তাহরীর বাংলাদেশ এবং নতুন আবির্ভূত আল মুজাহিদ প্রভৃতি এসব হত্যাকাণ্ডে জড়িত। এসব হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদ্ঘাটিত করতে সফল হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে। গোয়েন্দাদের নিরলস প্রচেষ্টার ফলে জঙ্গিদের শিকড় উপড়ে ফেলতে সক্ষম হয়েছে সরকার।
বাংলাদেশে ১৯৯৯ সালের ৭ মার্চ যশোরে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর একটি অনুষ্ঠানে প্রথম বোমা হামলা হয়। ওই বোমা হামলায় ১০ জন নিহত এবং ১০৬ জন আহত হয়। একই বছরের ৮ অক্টোবর খুলনায় আহমদিয়া মুসলিম জামাতের (কাদিয়ানি) মসজিদে বোমা হামলায় মারা যায় আট জন এবং আহত হয় ৪০ জন।
২০০০ সালের ২২ জুলাই। গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার শেখ লুৎফর রহমান আদর্শ সরকারি কলেজ মাঠে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ জনসভাকে সামনে রেখে হুজি নেতা মুফতি হান্নান ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রেখে শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করে। তবে সেই চেষ্টা সফল হয়নি।
২০০১ সালের শুরুতেই রাজধানীর পল্টন ময়দানে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সমাবেশে বোমা হামলা হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ৪ জন এবং পরে একজন হাসপাতালে মারা যান। তিন মাস পার না হতেই রমনার বটমূলে বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলায় ১০ জন নিহত হন। সেই বছরই জুনে গোপালগঞ্জের বানিয়াচং গির্জায় প্রার্থনা চলাকালে বোমা হামলায় ১০ জন নিহত হন, আহত অর্ধশত।
একই বছরের সেপ্টেম্বরে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঠিক আগে বাগেরহাটের মোল্লারহাটে খলিলুর রহমান ডিগ্রি কলেজ মাঠে এক নির্বাচনি জনসভায় রিমোট কন্ট্রোল-নিয়ন্ত্রিত শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরণে ৮ জন নিহত ও ৫০ জন আহত হয়। এই সব হামলাতেই হুজি সদস্যরা জড়িত ছিল।
২০০২ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরায় দুটি বোমা হামলায় নিহত হয় ৩ জন এবং আহত হয় ১২৫ জনের বেশি। সে বছরের ৭ ডিসেম্বর সিরিয়াল বোমা হামলা চালানো হয় ময়মনসিংহ শহরে চারটি সিনেমা হলে (অজন্তা, ছায়াবাণী, অলকা ও পূরবী)। এতে নিহত হয় ১৮ জন, হামলায় আহতের সংখ্যা ছিল ৩০০। এ হামলার মধ্য দিয়ে জঙ্গিবাদী হিসেবে লাইমলাইটে আসে জেমএমবি। জঙ্গি এই সংগঠনটির সঙ্গে আইএসআই-এর সরাসরি সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠে তখনই।
২০০৩ সালে নারায়ণগঞ্জ শহরে এক মেলায় বোমা হামলা চালিয়ে হত্যা করা হয় ৮ জনকে।
২০০৪ সালের এপ্রিল মাসে রাজশাহীর বাগমারায় ও নওগাঁর আত্রাই-রানীনগর এলাকায় সর্বহারা দমনের নামে সিনেম্যাটিকভাবে আত্মপ্রকাশ করে বাংলাভাই-এর জেএমবি। বাগমারার গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের পলাশী গ্রামে মোনায়েম হোসেন বাবুকে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাভাই-এর তাণ্ডবলীলা শুরু হয়। আট-নয় মাসের মধ্যে একে একে সে ২৪ জনকে হত্যা করে এবং তিন শতাধিক লোকের ওপর বর্বর নির্যাতন চালায়। প্রথমদিকে নায়কোচিত মিডিয়া কভারেজ ও মদদ পেলেও ধীরে ধীরে তার মুখোশ জনগণের কাছে উন্মোচিত হয়ে যায়।
এর আগে ১২ জানুয়ারি সিলেটের হজরত শাহজালাল দরগা শরিফে এক বোমা হামলায় ১০ জন নিহত হয় এবং আহত হয় ১৩৮ জন। একই বছরের ২১ মে সিলেটে বাংলাদেশে নিযুক্ত তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীকে লক্ষ্য করে চালানো বোমা হামলায় হাইকমিশনার বেঁচে গেলেও মারা যায় অন্য দুজন, আহত হয় ২০ জন।
ওই বছরই ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়ানক গ্রেনেড হামলার ঘটনাটি ঘটে। এতে নিহত হয় ২৩ জন, আহত হয় পাঁচ শতাধিক। আওয়ামী লীগপ্রধান তৎকালীন বিরোধী দলের নেতা শেখ হাসিনা রক্ষা পেলেও মারা যান মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আইভী রহমান। এ হামলায় অংশ নেয় তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের একটি বৃহৎ অংশ। বিশেষ করে বিএনপির তৎকালীন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব তারেক রহমানের নির্দেশে এই হামলা চালানোর বিষয়টি এরই মধ্যে আদালতে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে এ হামলা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন।
২০০৫ সালে ১ জানুয়ারি বগুড়া ও নাটোরে বোমা হামলায় মারা যায় ৩ জন, আহত হয় সত্তরের অধিক। একই মাসে হবিগঞ্জের বৈদ্যের বাজারে আওয়ামী লীগের সমাবেশে বোমা হামলায় নিহত হন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়াসহ পাঁচ জন। আহত হন ১৫০ জন।
ওই বছর সবচেয়ে আলোচিত ইস্যুতে পরিণত হয় ১৭ আগস্ট সারা দেশে একযোগে ৬৩ জেলায় সিরিজ বোমা হামলার ঘটনা। এ হামলার মধ্য দিয়ে জঙ্গিরা তাদের অপারেশনাল সক্ষমতা ও শক্ত অবস্থানের কথা জানান দেয়। ওই হামলায় ২ জন নিহত ও শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়। এর দুই মাস পর নভেম্বরের ১৪ তারিখে ঝালকাঠিতে দুজন সহকারী জেলা জজকে বোমা মেরে হত্যা করে জঙ্গিরা। ২৯ নভেম্বরে চট্টগ্রাম, গাজীপুর ও টাঙ্গাইলে একসঙ্গে বোমা হামলা করা হয়। এ হামলায় নিহতের সংখ্যা ৯, আহতের হয় ৭৮ জন।
২০০৬ সালের ৮ ডিসেম্বর নেত্রকোনায় উদীচী কার্যালয়ের সামনে এক বোমা হামলায় নিহত হয় ৮ জন, আহত ৪৮ জন।
২০০৭ সালে জেএমবি কর্তৃক ঝালকাঠির পাবলিক প্রসিকিউটর হায়দার হোসেনকে গুলি করে হত্যা এবং এর দুই বছর পরে গাজীপুরের পুলিশ সুপারের সম্মেলনে গ্রেনেড হামলা ছাড়া দীর্ঘদিন বড় ধরনের জঙ্গি নাশকতা দেখা যায়নি।
মূলত এই সময় থেকেই জঙ্গি মদদ দাতারা ক্রমে কোণঠাসা হতে শুরু করে। সেই সঙ্গে কমতে থাকে তাদের বিচরণ। যার অন্যতম কারণ ছিল তৎকালীন জঙ্গি নেতা শায়খ আবদুর রহমান ও বাংলা ভাইয়ের গ্রেফতার ও দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে সাজা কার্যকর করা। তাই মানুষের মন থেকে জঙ্গিবাদ, বোমাতঙ্কও ধীরে ধীরে মুছতে থাকে।
প্রশাসনের তৎপরতার কারণে কিছু সময় বিরতির পর রাজধানীর শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ থেকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে সারাদেশ উত্তাল হয়ে উঠলে, সেই দেশদ্রোহীদের বাঁচাতে ফের তৎপর হয় জঙ্গিরা। আর এর মাধ্যমেই প্রকাশ পায় তাদের মূলহোতাদের পরিচয়।
এই ইস্যুতে বাংলাদেশে ২০১৩ সালে এবিটি, জেএমবি, হুজিদের হত্যা মিশনে নতুন সংযোজন হলো, নাস্তিকতার ব্যাখ্যায় টার্গেট কিলিং একের পর এক তাদের হামলার শিকার হন আসিফ মহিউদ্দীন, রাজিব হায়দার, জগতজ্যোতী তালুকদার, সানাউল রহমান, আরিফ রায়হান দ্বীপ, উম্মুল মোমিনিন তৈয়ুবুর রহমান ও তার পুত্র, তন্ময় আহমেদ, জাকারিয়া বাবু ও পীর লুৎফর রহমানসহ ৬ জন।
বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ‘টার্গেট কিলিং’ হয় ২০১৫ সালে। একে একে হামলার শিকার হন চট্টগ্রামে নার্সিং প্রতিষ্ঠানের শিক্ষিকা অঞ্জনা দেবী, ব্লগ সাইট মুক্তমনার প্রতিষ্ঠাতা ও লেখক অভিজিৎ রায়, ওয়াশিকুর বাবু, অনন্ত বিজয় দাস, নীলয় নীল, শিক্ষক মানব চন্দ্র রায়, ইতালির নাগরিক তাবেলা, জাপানি নাগরিক হোসি কুনিও, আধ্যাত্মিক নেতা খিজির খান, প্রকাশক আরেফিন ফয়সাল দীপন, শুদ্ধস্বরের প্রকাশক টুটুল, বাহাই সেন্টারের ডিরেক্টর রুহুল আমিন এবং ইসকনের প্রেসিডেন্ট বীরেন্দ্র নাথ। এর বেশ কয়েকটি হত্যার দায় স্বীকার করে আইএস (ইসলামিক স্টেট)।
ওই বছর বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো শিয়া ও দ্বিতীয়বারের মতো আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হয়। অক্টোবরে শিয়াদের তাজিয়া মিছিলে গ্রেনেড হামলায়, পরের মাসে বগুড়ায় শিয়া মসজিদে ঢুকে গুলি, ডিসেম্বরে রাজশাহীর বাগমারায় আহমদিয়া সম্প্রদায়ের একটি মসজিদে জুমার নামাজের সময় আত্মঘাতী বোমা হামলা এবং একই মাসে দিনাজপুরে রাসমেলার যাত্রা প্যান্ডেলে বোমা বিস্ফোরণ। আর এই সব হামলাতেই আইএস ও জেএমবি উভয়ই দায় স্বীকার করে।
২০১৬ সালের শুরু থেকে একে একে যারা জঙ্গিবাদের শিকার হন, তারা হলেন- পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জের পুরোহিত যজ্ঞেশ্বর রায়, গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট নাজিমুদ্দিন সামাদ, ঝিনাইদহে শিয়া ধর্ম প্রচারক আবদুর রাজ্জাক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকী, ‘রূপবান’ পত্রিকার সম্পাদক জুলহাস মান্নান, নাট্য ও সমকামীদের অধিকার আন্দোলনের কর্মী মাহবুব তন্ময়, নিখিল চন্দ্র জোয়ারদার, রাজশাহীর তানোর উপজেলার ‘পীর সাহেব’ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ, বান্দরবানের বাইশারী ইউনিয়নের চাক পাড়ার বৌদ্ধ ভিক্ষু মংশৈ উ চাক, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের জুতা ব্যবসায়ী দেবেশ চন্দ্র প্রামাণিক, নাটোরে খ্রিস্টান ব্যবসায়ী সুনীল গোমেজ, ঝিনাইদহে পুরোহিত আনন্দ গোপাল গাঙ্গুলি, পাবনা সদর উপজেলার হেমায়েতপুরে শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র সৎসঙ্গ সেবাশ্রমের নিত্যরঞ্জন পাণ্ডে, ঝিনাইদহের শ্যামানন্দ দাস ও বান্দরবানের মংশৈনু মারমা। এ সব হত্যাকাণ্ডের কয়েকটিতে আনসার-আল-ইসলামের নাম এলেও অধিকাংশ হত্যার জন্য আইএস দায় স্বীকার করে।
২০১৬ সালের যে ঘটনা সারা বিশ্ব কাঁপিয়ে দেয়, তা হল রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গিদের সশস্ত্র হামলা। এদেশে চোরাগোপ্তা, আত্মঘাতী জঙ্গি হামলার ইতিহাস থাকলেও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীদের স্টাইলে জিম্মিকরণের মাধ্যমে এমন হত্যার ঘটনা এটাই প্রথম। এই জিম্মি ঘটনায় ১৭ বিদেশিসহ (৯ জন ইতালীয়, ৭ জন জাপানি, ১ জন ভারতীয়) ২০ জন, ৫ জঙ্গি ও এক সন্দেহভাজন এবং দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ মোট ২৮ জন নিহত হয়।
পুরো জাতিকে রীতিমত মৃত্যুমুখী আতঙ্কে ট্রমাটাইজড করা এ হামলার রেশ কাটতে না কাটতে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় দেশের সবচেয়ে বড় ঈদ জামাতের কাছে বিস্ফোরণ ও গুলির ঘটনা ঘটে। এতে দুই পুলিশসহ নিহতের সংখ্যা ৪। আহত হয় ১২ জন, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই পুলিশের সদস্য।
সর্বশেষ ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রাক্কালে বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সপরিবারে হত্যার পরিকল্পনায় একটি জঙ্গি হামলার নীলনকশা তৈরি করা হয়। যার সঙ্গে পাকিস্তানের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর প্রত্যক্ষ সম্পৃক্ততা এবং বাংলাদেশের একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের মদদের কথা উল্লেখ করে সংবাদ প্রকাশ করে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের একটি স্বনামধন্য পত্রিকা দ্য ইকোনমিস্ট।
ছবি ● সংগৃহীত
এসকে/এসএমএম