• ঢাকা
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ২৪, ২০১৯, ০৯:৩৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ২৪, ২০১৯, ০৯:৩৭ পিএম

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন কমেছে ১০ হাজার কোটি টাকা

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন কমেছে ১০ হাজার কোটি টাকা

হঠাৎ করে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন কমেছে। এক মাসের ব্যবধানে লেনদেন কমেছে ১০ হাজার কোটি টাকা বা ২৪ দশমিক ৯ শতাংশ। যা গত ৭ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, বর্তমানে মোট ১৬টি ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিংয়ের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আলোচিত সময়ে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) লেনদেন কমলেও গ্রাহক সংখ্যা বেড়েছে। চলতি বছরের জুন শেষে এমএফএসে নিবন্ধিত গ্রাহক সংখ্যা ৭ কোটি ২০ লাখ ৫৪ হাজার, যা মে মাসে ছিল ৭ কোটি ৪ লাখ ৫৬ হাজার। অর্থাৎ ১ মাসে গ্রাহক বেড়েছে ২ দশমিক ৩ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, উৎসবকে কেন্দ্র করে মানুষ বিভিন্ন প্রয়োজনে টাকার লেনদেন করে। যে কারণে ঈদের আগে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের লেনদেন বেশি হয়। এ কারণে মে মাসে লেনদেন বেশি হয়েছিল। পরের মাস জুনে লেনদেন কিছুটা কমেছে। তবে এটা স্বাভাবিক। সামনে কোরবানির ঈদ। এ সময় আবারও লেনদেন বাড়বে বলে প্রত্যাশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। আর এমএফএসে নিয়ম অনুযায়ী, টানা তিন মাস একবারও লেনদেন না করলে তাদের হিসাবকে নিষ্ক্রিয় হিসাব বলে গণ্য করে মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। সেই হিসাবে জুন শেষে সক্রিয় গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ২৪ লাখ ৫৮ হাজার।

সূত্র আরো জানায়, এমএফএসে গত জুনে প্রতিদিন গড়ে ৬৬ লাখ ৫১ হাজার লেনদেন হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রতিদিন গড়ে আদান-প্রদান হয়েছে ১ হাজার ৫৬ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। জুনে মোট লেনদেন হয়েছে ৩১ হাজার ৭০৮ কোটি টাকা, যা আগের মাসের চেয়ে ১০ হাজার ৫২৭ কোটি টাকা বা ২৪ দশমিক ৯ শতাংশ কম। গত মে মাসে লেনদেন হয়েছিল ৪২ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা। আলোচিত সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ লাখ ৩৪ হাজার ১৯৫।

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে শুধু লেনদেন নয়, যুক্ত হচ্ছে অনেক নতুন নতুন সেবাও। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল অর্থাৎ সেবা মূল্য পরিশোধ, কেনাকাটার বিল পরিশোধ, বেতন-ভাতা প্রদান, বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো অর্থাৎ রেমিট্যান্স প্রেরণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সেবা দেয়া হচ্ছে। তবে জুনে রেমিট্যান্স ছাড়া সব ধরনের সেবায় লেনদেন কমেছে।

আলোচ্য সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবগুলোয় টাকা জমা পড়েছে ১১ হাজার ৭২ কোটি টাকা, যা আগের মাসের চেয়ে ৩২ শতাংশ কম। উত্তোলন করা হয়েছে ১১ হাজার ৪৫৫ কোটি টাকা, যা মে মাসের তুলনায় সাড়ে ২৪ শতাংশ কম। এমএফএসে রেমিট্যান্স এসেছে ২৭ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। ব্যক্তি হিসাব থেকে ব্যক্তি হিসাবে অর্থ স্থানান্তর হয়েছে ৭ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা বিতরণ প্রায় ৫৭ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৫৩৭ কোটি টাকায়। আগের মাসে যা ছিল ১ হাজার ২৪৩ কোটি টাকা। বিভিন্ন সেবার বিল পরিশোধ করা হয়েছে ৪৪৫ কোটি টাকা। কেনাকাটার বিল পরিশোধ করা হয়েছে ৩৮৬ কোটি টাকা। সরকারি পরিশোধ ১৩৪ কোটি টাকা। এছাড়া অন্যান্য হিসাবে লেনদেন হয়েছে ৫৮৪ কোটি টাকা।

প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিংসেবা চালুর মধ্য দিয়ে দেশে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের যাত্রা শুরু হয়। এর পরপরই ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে বিকাশ। বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার বাজারের সিংহভাগই বিকাশের দখলে।

এআই/ এফসি

আরও পড়ুন