• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ৭, ২০১৯, ০৩:২১ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ৭, ২০১৯, ০৩:২১ পিএম

৬০ টাকায় পেঁয়াজ বিক্রির নির্দেশ মানছে না ব্যবসায়ীরা

৬০ টাকায় পেঁয়াজ বিক্রির নির্দেশ মানছে না ব্যবসায়ীরা

পাইকারি বাজারে সর্বোচ্চ ৬০ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ বিক্রির নির্দেশ দেয়া হলেও অসাধু ব্যবসায়ীরা এটি বিক্রি করছে ১২০ টাকায়। এর ফলে টানা দেড় মাস পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। আর এসবের পিছনে কাজ করছে একটি অসাধু চক্র। সাম্প্রতিক কালে অভিযান চালিয়ে পেঁয়াজের বাজার অস্থিতিশীল করার পেছনে ১৫ জনের একটি সিন্ডিকেট চক্র জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি টিম। অভিযানটি পরিচালনা করা হয় দেশের ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জ ও রিয়াজুদ্দিন বাজারে।  

অনুসন্ধানে জানা যায়, মিয়ানমার থেকে আমদানিকৃত পেঁয়াজের দামের কারসাজিতে যুক্ত আছে- টেকনাফ বন্দর, টেকনাফ উপজেলা, কক্সবাজার সদর এবং চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ ভিত্তিক পেঁয়াজ আমদানিকারক, সিএন্ডএফ, আড়তদার ও বিক্রেতারা। তাদের নাম ও ঠিকানা প্রশাসনের হাতে এসেছে।এছাড়া রাজধানীর শ্যামবাজার, কারওয়ান বাজারসহ বৃহত্তর কাঁচাবাজারে এমনই দাম পরিলক্ষিত হয়েছে।

পেঁয়াজের অস্বাভাবিক দাম বাড়িয়ে সাধারণ ক্রেতাদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার জন্য টেকনাফ-কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ ভিত্তিক ১৫ সদস্যের একটি সিন্ডিকেট চক্রের নাম-মোবাইল নম্বর পাওয়া গেছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে পাওয়া এই সিন্ডিকেট চক্রের সদস্যরা হলেন টেকনাফের আমদানিকারক সজিব, মম (মগ), জহির, সাদ্দাম, টেকনাফের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট কাদের, কমিশন এজেন্ট শফি, পেঁয়াজ বিক্রেতা ফোরকান, গফুর, মিন্টু, খালেক ও টিপু। চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মেসার্স আজমীর ভাণ্ডার, মেসার্স আল্লার দান স্টোর, স্টেশন রোডের মেসার্স সৌরভ এন্টারপ্রাইজ, এ হোসেন ব্রাদার্স এবং টেকনাফের মেসার্স আলীফ এন্টারপ্রাইজ।

বুধবার (৭ নভেম্বর) দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত নগরীর খাতুনগঞ্জ ও ২টা থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত রিয়াজুদ্দিন বাজারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সেলিম হোসেনের নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়। অভিযান থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি পাইকারি পর্যায়ে মিয়ানমারের পেঁয়াজের দাম ৫৫-৬০ টাকা দরে এবং খুচরা পর্যায়ে ৬৫-৭০ টাকা দরে বিক্রির নির্দেশনা দেন। এ সময় অতিরিক্ত মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি করায় খাতুনগঞ্জের গ্রামীণ বাণিজ্যালয়কে ৫০ হাজার টাকা ও রিয়াজুদ্দিন বাজারের রুহুল আমিন সওদাগরকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অভিযানে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলাম, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শাহিদা সুলতানা, মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান, র‌্যাব ও পুলিশ সদস্যরা অংশ নেন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. সেলিম হোসেন বলেন, বাজার অস্থিতিশীল করার পেছনে জড়িত সিন্ডিকেটের সদস্য পেঁয়াজ আমদানিকারক, সিএন্ডএফ এজেন্ট, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামস্থ কমিশন এজেন্ট এবং আড়তদারদের যোগসাজশে মিয়ানমার থেকে ৪২ টাকা দরে আমদানিকৃত পেঁয়াজ পাইকারি বাজার পর্যায়ে ৯০ থেকে ১১০ টাকা দরে বিক্রি করতে বাধ্য করছে। মিয়ানমার থেকে ৪২ টাকা দরে আমদানি করা পেঁয়াজ সব খরচ, লাভসহ ৬০ টাকার বেশি পাইকারি মূল্য হতে পারে না। খুচরা পর্যায়ে এটি ৭০ টাকা হওয়া উচিত। কিন্তু আড়তে ৯০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের কমতি নেই। অসাধু সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে, যারা পেঁয়াজের বাজার অস্থিতিশীল করছে। আমাদের হাতে দুই বাজার অস্থিতিশীল করা ১৫ জনের একটি সিন্ডিকেটের নাম ও ঠিকানা এসেছে। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

তৌহিদুল ইসলাম বলেন, অভিযানে দাউদকান্দিগামী একটি ট্রাকের চালান পরীক্ষা করে দেখা যায়, ৯০ টাকা বিক্রি করা হয়েছে। তাই আড়তদার জরিমানা করা হয়েছে। আমদানিকারক পর্যায়ে কেউ মূল্য বাড়িয়ে কিংবা দাম চাপিয়ে দিলে তাদের ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া জেলা প্রশাসনের স্টাফ অফিসারকে এ বিষয়ে জানাতে বলেছি। পাইকারিতে মিয়ানমারের পেঁয়াজ ৫৫-৬০ টাকার বেশি হলে জরিমানা-জেল করা হবে। তারপরও অসাধু ব্যবসায়ীরা বেশি দামেই বিক্রি করছে পেঁয়াজ। 

এইচএম/টিএফ

আরও পড়ুন