• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ২২, ২০১৯, ১২:৪৩ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ২২, ২০১৯, ১২:৫৩ পিএম

কান চলচ্চিত্র উৎসবে লিঙ্গসমতা

কান চলচ্চিত্র উৎসবে লিঙ্গসমতা

বিশ্ব চলচ্চিত্রের হৃদস্পন্দন কান উৎসব। দক্ষিণ ফ্রান্সের উপকূলে গত ১৪ মে পর্দা উঠেছে ৭২তম আসরের। কান চলচ্চিত্র উৎসবকে সামনে রেখে প্রতি বছরের জানুয়ারি থেকে ১০৯ জন কর্মী বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেন। তাদের মধ্যে ৬৬ জন নারী কর্মী। অর্থাৎ মোট কর্মীর ৬১ শতাংশ। আর চলচ্চিত্র উৎসব চলাকালে তাদের সঙ্গে যুক্ত হন ৮৬৫ জন। তাদের ৪৬ শতাংশও আবার নারী। এবারের আসরে ৫০৬ জন পুরুষ ও ৪৬৮ জন নারীসহ মোট ৯৭৪ জন কর্মী দিনরাত কাজ করে চলেছেন। অর্থাৎ মোট কর্মীর ৪৮ শতাংশই নারীকর্মী।

নির্বাচক কমিটি: চলতি বছরের শুরুতে উৎসব উপলক্ষে গঠিত নির্বাচক কমিটিতে চার জন পুরুষ (পল গ্র্যান্ডার্ড, লঁহা জ্যাকব, এরিক লিবিও, লুসিয়েন লোজেত) ও চার জন নারী (ভার্জিনি আপিউ, স্টেফানি লামোম, গিমেত অদিসিনো, মারি সোভিয়ন) দায়িত্ব পালন করেন। এরমধ্যে স্টেফানি লামোম আর্টিস্টিক পরামর্শদাতা এবং ফিল্ম ডিপার্টমেন্টের প্রধান ক্রিশ্চিয়ান জ্যেঁনের সঙ্গে কাজ করেছেন।

বিচারক: অফিসিয়াল সিলেকশনের চারটি বিভাগে বিচারকদের প্রধানদের মধ্যে লিঙ্গ সমতা আনা হয়েছে। অর্থাৎ দু’জন পুরুষ ও দু’জন নারী বিচারক রাখা হয়েছে। মূল প্রতিযোগিতায় মেক্সিকোর অস্কারজয়ী নির্মাতা আলেহান্দ্রো গঞ্জালেজ ইনারিতু, আঁ সার্তে রাগারে লেবানিজ পরিচালক নাদিন লাবাকি আর স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ও সিনেফঁদাসোতে ফরাসি নির্মাতা ক্লেয়ার ডেনিস, ক্যামেরা দ’র বিভাগে কম্বোডিয়ান পরিচালক বিচারকের দায়িত্ব পান।

মূল প্রতিযোগিতায় আট বিচারকের চারজন পুরুষ ও চারজন নারী দায়িত্ব পান। প্রথমবারের মতো তিনজন নারী নির্মাতাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে এই বিচারকার্যে। আঁ সার্তে রাগার ও ক্যামেরা দ’রে দুই জন করে নারী-পুরুষ, স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ও সিনেফঁদাসোতে তিনজন পুরুষ ও একজন নারী বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

অফিসিয়াল সিলেকশনে নারী
এবারই প্রথমবারের মতো কানের আয়োজকরা হিসাব করেছেন, অফিসিয়াল সিলেকশনের জন্য নারী নির্মাতাদের কয়টি চলচ্চিত্র জমা পড়েছে। এতে দেখা গেছে, নারীদের নির্মিত ২৬ শতাংশ পূর্ণদৈর্ঘ্য কাহিনিচিত্র, ৩২ শতাংশ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ও ৪৪ শতাংশ শিক্ষার্থীদের চলচ্চিত্র রয়েছে সিনেফঁদাসোতে।

নির্বাচিত নারী পরিচালক
২০১৯ সালে অফিসিয়াল সিলেকশনে জায়গা পাওয়া চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে ২০টি নির্মাণ করেছেন নারীরা। এর মধ্যে প্রতিযোগিতা বিভাগে চারটি, আঁ সার্তে রাগারে আটটি, স্পেশাল স্ক্রিনিংসে তিনটি ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে আছে পাঁচটি। গত বছর ছিল নারী পরিচালকদের মোট ১১টি চলচ্চিত্র। ২০১৭ সালে ১২টি, ২০১৬ সালে ৯টি ও ২০১৫ সালে তাদের নির্মিত ৬টি চলচ্চিত্র স্থান পায় কানের অফিসিয়াল সিলেকশনে।

৭২তম আসরের লক্ষণীয় বিষয়, অফিসিয়াল সিলেকশনের ওপরের সারির দুই বিভাগ মূল প্রতিযোগিতা ও আঁ সার্তে রাগারে লিঙ্গসমতা রেখেছেন আয়োজক ও নির্বাচকরা। আমেরিকান নির্মাতা জিম জারমাশের ‘দ্য ডেড ডোন্ট ডাই’ চলচ্চিত্রের ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ারের মধ্য দিয়ে পর্দা উঠেছে এবারের উৎসবের। অন্যদিকে আঁ সার্তে রাগারের উদ্বোধনী চলচ্চিত্র কানাডিয়ান নারী নির্মাতা মনিয়া শকরির ‘অ্যা ব্রাদারস লাভ’।

মূল প্রতিযোগিতায় ১৭ জন পুরুষের সঙ্গে চারজন নারী। অর্থাৎ ১৯ শতাংশ চলচ্চিত্রের নির্মাতা নারী। আঁ সার্তে রাগারে ১১ জন পুরুষের পাশাপাশি আটজন নারী নির্মাতার (৪২ শতাংশ) চলচ্চিত্র রয়েছে। স্পেশাল স্ক্রিনিংসে আটজন পুরুষের সঙ্গে তিনজন নারী। অর্থাৎ ২৭ শতাংশ চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন নারীরা। স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে সাতজন পুরুষের পাশাপাশি আছে পাঁচজন নারী নির্মতার (৪২ শতাংশ) চলচ্চিত্র।

ক্যামেরা দ’র পুরস্কারের জন্য বিবেচিত নবীন নির্মাতাদের মধ্যে ১৩ জন নারী (৫২ শতাংশ) ও ১২ জন পুরুষ। এই নারীদের মধ্যে আটজন আছেন অফিসিয়াল সিলেকশনে। অর্থাৎ ৬১ দশমিক ৫ শতাংশ। পূর্ণদৈর্ঘ্য কাহিনিচিত্র ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র মিলিয়ে ৬৯টি চলচ্চিত্রের মধ্যে ১৯টি নির্মাণ করেছেন নারীরা (২৭ দশমিক ৫ শতাংশ)।

এসজে