অবসান হলো ভারতীয় বাংলা চলচ্চিত্রের আরেকটি অধ্যায়ের। মারা গেছেন প্রখ্যাত পরিচালক ও কবি বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত। আজ বৃহস্পতিবার ভোর ৬টার দিকে দক্ষিণ কলকাতার নিজ বাসভবনে অনন্তলোকের পথে পাড়ি জমান তিনি। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে টলিপাড়ায়।
অন্য অনেকের মতো কিংবদন্তি এই পরিচালকের মৃত্যুতে শোকাহত প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। বুদ্ধদেব দুশগুপ্তর জন্য আনন্দবাজার পত্রিকার জন্য লিখেছেন রচনা। সেই লেখায় তিনি তার সঙ্গে কাজের স্মৃতিচারণ করেছেন।
প্রসেনজিৎ লিখেছেন, “সবাই যেন কোথায় হারিয়ে যাচ্ছেন। এক এক করে। ভালো লাগছে না। আর একজন ‘মাস্টার’ চলে গেলেন। বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত। নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে হয়। দুবার বুদ্ধদার সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। ‘স্বপ্নের দিন’ এবং ‘আমি, ইয়াসিন আর আমার মধুবালা’ ছবিতে অভিনয় করেছি। ফলে তার কাজ করার শৈলীর সঙ্গে পরিচিত আমি। একদম অন্যভাবে ভাবতেন। সেই অভিজ্ঞতা আমার সারা জীবনের সঙ্গী।”
তিনি আরও লিখেছেন, “সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, বুদ্ধদাকে কেবল বাংলা ছবির পরিচালক বললে কম বলা হবে। ভারতীয় চলচ্চিত্রে তার অপরিসীম অবদান রয়েছে। একইসঙ্গে সারাবিশ্বে তিনি সমাদৃত। ওনার সঙ্গে টরন্টোর মতো বিখ্যাত চলচ্চিত্র উৎসবগুলোতে গিয়ে দেখেছি, বাংলা ছবি বলতে তারা ‘বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত’র নাম উচ্চারণ করেন। তার ছবি নিয়ে দেশের বাইরে মানুষের প্রতিক্রিয়া দেখার সুযোগ পেয়েছি আমি।”
প্রসেনজিৎ লিখেছেন, “ছোটবেলা থেকে বুদ্ধদার ছবি দেখছি। তার দেশের, তার ভাষার মানুষ হিসেবে গর্ববোধ করি। শিক্ষক মানুষ ছিলেন বুদ্ধদা। কবিও ছিলেন তিনি। সবথেকে উল্লেখযোগ্য, তার মতো ভালো মানুষ আমি কম দেখেছি।”
১৯৪৪ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি পুরুলিয়ার আনারা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বুদ্ধদেব। তার বাবা রেলে চাকরি করতেন। ১২ বছরে হাওড়ার স্কুলজীবন শুরু করেন। তারপর অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন স্কটিশ চার্চ কলেজ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। অর্থনীতির অধ্যাপক হিসেবেই কর্মজীবন শুরু করেছিলেন।
বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত পরিচালিত উল্লেখযোগ্য সিনেমা হলো—‘দূরত্ব’, ‘নিম’ ‘অন্নপূর্ণা’, ‘গৃহযুদ্ধ’, ‘ফেরা’, ‘বাঘ বাহাদুর’, ‘তাহাদের কথা’, ‘চরাচর’ ইত্যাদি।