• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ২২, ২০১৯, ১২:২৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ২২, ২০১৯, ১২:৫৬ পিএম

শয্যা সংখ্যায় ঢামেক হবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় হাসপাতাল

শয্যা সংখ্যায় ঢামেক হবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় হাসপাতাল
ঢামেক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালকে ৫ হাজার শয্যায় উন্নীত করার কাজ আগামী বছর থেকে পুরোদমে শুরুর সম্ভবনা রয়েছে।  কোন প্রতিষ্ঠান এই মহাযজ্ঞ বাস্তবায়নে কাজ করবে- বর্তমানে এই বিষয় ঠিকঠাক করছে সরকার।   

ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন দৈনিক জাগরণকে বলেন, আমাদের কাজ বিশাল।  এটা যাতে ভালভাবে সম্পন্ন করা যায়, সেজন্য প্রতিটি ধাপ নিয়ে ভালভাবে পরিকল্পনা করে সে অনুযায়ী অগ্রসর হচ্ছি।  ৫ বছরের মধ্যে কাজ শেষ করার পরিকল্পনা আছে বলে জানান তিনি।  

নির্মাণ কাজের জন্য উপযুক্ত প্রতিষ্ঠানের খোঁজে ৭টি দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েছিল সরকার।  এতে ১৭টি প্রতিষ্ঠান সাড়া দেয়।  এই ১৭টি থেকে ৫-৭টিকে নেয়া হবে।  এরপর পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে যাবে ডিপিপি অনুমোদনের জন্য।  এসবের পরই অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য কাজ শুরু করা হবে। 

মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী- ৫ হাজার শয্যার জন্য পৃথক ৫টি ভবন নির্মাণ করা, প্রতিটি ভবন হবে ১৮ তলা বিশিষ্ট।  ঢামেক হাসপাতাল এমন রূপ পেলে শয্যা সংখ্যার দিক থেকে এটি হবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় হাসপাতাল।  একইসঙ্গে অল্প খরচে চিকিৎসা প্রাপ্তির জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বড় হাসপাতালও। 

সরকার আরও চাচ্ছে- বিশ্বের সর্ববৃহৎ স্বাস্থ্যশিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শতভাগ বর্জ্য মুক্ত প্রতিষ্ঠান, পরিবেশ বান্ধব সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ও সৌর শক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঢাকা মেডিকেলকে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে। 

পরিবেশবান্ধব করতে সংস্কার করা ঢাকা মেডিকেলের ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ জমিতে ফুল-ফল-কাঠ গাছের সমন্বয়ে সবুজ রাখার পরিকল্পনাও সরকার করছে।

বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে বড় হাসপাতাল তাইওয়ানের গুইশান জেলার ফাক্সিং স্টেটে অবস্থিত। এর নাম চাং গাং মেমোরিয়াল হাসপাতাল। ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এই হাসপাতালে তিন হাজার ৭০০ শয্যা আছে। যদিও ১০ হাজার শয্যা বসানোর সক্ষমতা আছে হাসপাতালটির। এখানে এক হাজার ৭০০ চিকিৎসকের বিপরীতে পাঁচ হাজার ৩০০ নার্স রয়েছে। হাসপাতালটির অন্তঃবিভাগে বছরে ১১ লাখ রোগী ও বর্হিঃবিভাগ থেকে ৩৫ লাখ রোগী চিকিৎসা নেন।

অন্যদিকে, ১৯৪৬ সালে প্রতিষ্ঠিত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বর্তমান শয্যা সংখ্যা দুই হাজার ৬০০। কিন্তু প্রতিদিন ভর্তি থাকে (মেঝেসহ) সাড়ে চার হাজারেরও বেশি রোগী। বছরে আট লাখেরও বেশি রোগী বহিঃবিভাগ থেকে, প্রায় চার লাখ রোগী জরুরি বিভাগ থেকে, দেড় লাখেরও বেশি রোগী অন্তঃবিভাগ থেকে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ নেন।  প্রতি বছর সেবা গ্রহিতার সংখ্যা বেড়ে চলছে।

মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী- ১৮ তলা বিশিষ্ট পৃথক পাঁচটি ভবনের প্রতিটিতে এক হাজার শয্যা (মোট পাঁচ হাজার) রাখার পরিকল্পনা আছে। পাঁচটি ভবনে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা ব্যবস্থা রাখা হবে, যাতে কোনো সেবার জন্য এক ভবন থেকে অন্য ভবনে যেতে না হয় রোগীকে।  প্রতিটি ভবনই হবে- পূর্ণাঙ্গ হাসপাতালের মতন। এছাড়া কলেজ ভবন সংস্কার করে বহুতল ভবন নির্মাণ, নতুন করে গবেষণা ভবন, জরুরি বিভাগের জন্য পৃথক ভবন নির্মাণসহ আরও কিছু ভবন নির্মাণের পরিকল্পনাও আছে।

১৯৪৬ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত যেসব ভবন থেকে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে, সেসব ভবনের জমিতেই নির্মাণ করা হবে ওই পাঁচ ভবনসহ আরও বেশকিছু ভবন। 

নতুন ভবনগুলো নির্মাণের সময় রোগী সেবার কী হবে?- জানতে চাইলে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন দৈনিক জাগরণকে বলেন, ভবন নির্মাণ করা হবে বিটিং হার্ট সার্জারি পদ্ধতিতে।   অর্থাৎ হৃদপিণ্ডের স্পন্দনও থাকবে, অপারেশনও চলবে।  আমাদের ভবন নির্মাণ কাজও চলবে, রোগীদের সেবাও চলবে।  

হাসপাতাল সূত্র জানায়, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের মতন ইলেকট্রো মেডিকেল সেন্টার, মেডিকেল ইকোনমিক বিভাগ, অত্যাধুনিক পরিচ্ছন্ন ব্যবস্থাপনা, অত্যাধুনিক লন্ড্রি, জীবাণুমুক্ত করণে চিকিৎসকদের পোশাক-আশাক জীবাণুমুক্তকরণে খুবই উন্নত মানের মেশিন স্থাপন, উন্নত প্রক্রিয়ায় রোগীর পথ্য প্রস্তুত, হাসপাতালের অভ্যন্তরে অত্যাধুনিক ট্রাফিকিং ব্যবস্থা করা হবে।  এসবের বেশিরভাগই বাস্তবায়নে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালকে অনুসরণ করা হবে।

আরএম/বিএস