• ঢাকা
  • বুধবার, ১৫ মে, ২০২৪, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ১০, ২০১৯, ০১:৩৫ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ১০, ২০১৯, ০১:৩৫ পিএম

চীনা আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে লাখো হংকং বাসিন্দা

চীনা আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে লাখো হংকং বাসিন্দা

 

‌‘এক দেশ, দুই প্রশাসনিক ব্যাবস্থা’। সাবেক বৃটিশ কলোনি এবং বর্তমানে আধা শ্বায়ত্বশাসিত অঞ্চল হংকংয়ের জন্যই এই উক্তিটি প্রযোজ্য। ১৯৯৭ সালে এক চুক্তিতে বৃটেন হংকংকে ৫০ বছরের জন্য চীনা প্রশাসনের নিকট হস্তান্তর করে। এই চুক্তিতে হংকংয়ের স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা এবং জনগণের সামাজিক, রাজনৈতিক এবং আইনি অধিকার নিশ্চিত করার কথা বলা হলেও সাম্প্রতিক সময়ে চীন প্রশাসনের চাপিয়ে দেওয়া বহিঃসমর্পণ আইনের কারণে তাদের এই অধিকার হুমকির মুখে পড়েছে। হংকং ২০ টি দেশের সঙ্গে বহিঃসমর্পন আইনে চুক্তিবদ্ধ হলেও চীনের সাথে বিগত দুই দশক ধরে সমঝোতা না হওয়ার কারণে এই আইনে চুক্তিবদ্ধ হয় নি।

চীন প্রস্তাবিত এই বহিঃসমর্পণ আইন সংশোধনীর জন্য হংকংয়ের রাজপথে বিক্ষোভ করছেন কয়েক লক্ষ নাগরিক যা চীনকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসাবে প্রতিষ্ঠা করছে। এই বিক্ষোভে যোগ দিয়েছে ঐ প্রদেশের আইন প্রণেতা থেকে শুরু করে ছাত্র, শিক্ষক, ব্যবসায়ী এবং দিনমুজুরসহ সকল শ্রেণী পেশার মানুষ। বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী ৫৯ বছর বয়সী অধ্যাকপ রকি চ্যাং বলেছেন, “এটা ‘হংকং শেষ’ খেলা, এটা হংকংবাসীর জন্য জীবন-মৃত্যুর সিদ্ধান্ত। এই আইন নিকৃষ্ট আইন।’

চীন প্রস্তাবিত সমালোচিত ঐ আইনে বলা হয়েছে হংকংয়ের কোনো নাগরিকের নামে চীনের মূল ভূখণ্ড বা ম্যাকাও কিংবা তাইওয়ানে সংগঠিত কোনো হত্যাকাণ্ড এবং ধর্ষণের মামলা হলে অভিযুক্তকে সে অঞ্চলে বিচারের জন্য পাঠানো হবে। এই আইনের পক্ষে চীনাপন্থী আইনপ্রণেতাদের বক্তব্যের মূল বিষয় ছিল, কোনো অপরাধী এক ভূখণ্ডে অপরাধ করে অন্য ভূখণ্ডে পালিয়ে গেলেও যেন সহজেই বিচারের আওতাহীন হতে পারে এজন্য এই সংশোধনী। এই আইন সংশোধনী নিয়ে ১১ মে হংকং পার্লামেন্টে সংশোধনীর পক্ষে ও বিপক্ষের আইন প্রণেতাদের মধ্যে সংঘর্ষ ও হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে।

এই ঘটনার পরেও এই আইনের সংশোধনী না হওয়ায় কয়েক লাখ (কয়েকটি সংবাদ মাধ্যম অনুযায়ি প্রায় ১০ লাখ) হংকং বাসিন্দা বিক্ষোভ আন্দোলনে নেমেছে যা ২০১৪ সালের বিক্ষোভকেও হার মানিয়ে দিয়েছে। ফলে হংকংয়ের নেতা ক্যারি লাম জুলাই মাসে এই আইন পাশ হওয়ার আগেই এর সংশোধনের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু চীন সরকার ও স্থানীয় চীনাপন্থী প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এই আইন প্রত্যার্পণ করা হয়েছে যাতে কেও এক ভূখণ্ড থেকে অন্য ভূখণ্ডে গিয়ে হত্যাকান্ড এবং ধর্ষণের মত অপরাধ করে শাস্তির বাইরে থাকতে না পারে। ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক অভিযোগে অভিযুক্তরা এই আইনের আওতাধীন নয়।

তবে বিক্ষোভকারী ও সমালোচোকদের দাবী প্রস্তাবিত এই আইন পাশ হলে হংকং তার বিচারকি স্বাধীনতা হারাবে এবং হংকংয়ের যে কোনো মানুষকে অভিযুক্ত করে খুব সহজেই চীনের মূল ভূমিতে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে এবং অভিযুক্তদের ওপর নির্যাতন এবং যে কোনো ধরনের অভিযোগের অযৌক্তিক বিচার রায় চাপিয়ে দেওয়া সম্ভব হবে।

সূত্র : বিবিসি

এসজেড