• ঢাকা
  • বুধবার, ১৫ মে, ২০২৪, ৩১ চৈত্র ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ১৫, ২০১৯, ০২:০৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ১৫, ২০১৯, ০২:১০ পিএম

প্রত্যর্পন বিল পাস ‘স্থগিত’ রাখার সিদ্ধান্তে হংকং!

প্রত্যর্পন বিল পাস ‘স্থগিত’ রাখার সিদ্ধান্তে হংকং!

গত সপ্তাহে লাখো মানুষের বিক্ষোভ ও সহিংস প্রতিবাদের পর শুক্রবার হংকংয়ের একদল জ্যেষ্ঠ রাজনীতিক ও শহরটির শীর্ষ নির্বাহী ক্যারি লামের এক উপদেষ্টার আইন পরিষদে বৈঠকে চীনের প্রত্যর্পন বিলটি ‘কিছু সময়ের জন্য’ স্থগিত রাখার পরিকল্পনা চলছে বলে জানা গেছে।

শনিবার (১৫ জুন) ক্যারি লামের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকশিত সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, বেইজিংপন্থিরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ায় আইন পরিষদে এটি সহজেই পাস হবে বলে অনুমান করা হচ্ছিল।

বিলটির আলোচনা ও ভোটাভুটি স্থগিত বিষয়ে শনিবার লাম সাংবাদিক সম্মেলন করতে পারেন বলে হংকংয়ের সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

প্রস্তাবিত ওই প্রত্যর্পন বিল নিয়ে হংকংয়ের বাসিন্দাদের পাশাপাশি মূলভূখণ্ড চীন কিংবা বিদেশের নাগরিক- যারা হংকংয়ে বসবাস করছেন অথবা যাওয়া-আসা করেন, তারাও উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

বিলে তাইওয়ান, ম্যাকাউ বা চীনের মূলভূখণ্ডে ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত হংকংয়ের বাসিন্দাদের আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে সেসব স্থানে বহিঃসমর্পণের সুযোগ রাখা হয়েছিল।

বেইজিংপন্থিদের মতে, বহিঃসমর্পণের সুযোগ না থাকায় হংকং চীনের অন্যান্য অংশের অপরাধীদের স্বর্গে পরিণত হয়েছে।

মানবাধিকার লংঘন যেন না হয়, সেজন্য প্রতিটি মামলা ধরে ধরে হংকংয়ের আদালতই বহিঃসমর্পণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবে- ‘রক্ষাকবচ’ হিসেবে বিলে এ বিধান যুক্ত আছে বলেও জানিয়েছে তারা।

বিরোধীদের আশঙ্কা, বিলটি পাস হলে হংকংয়ের বেইজিংবিরোধী হিসেবে পরিচিতরা কমিউনিস্ট পার্টি নিয়ন্ত্রণাধীন চীনের বিচারব্যবস্থার জালে আটকা পড়বেন।

গত সপ্তাহের রোববার শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, ধর্মীয় সংগঠনের সদস্য, শিক্ষকসহ লাখো বাসিন্দা বিলটি নিয়ে আপত্তি জানিয়ে হংকংজুড়ে বিক্ষোভ দেখায়।

গত মঙ্গলবার আইন পরিষদের বাইরে পুলিশ ও বিক্ষোভকারীরা সংঘর্ষেও জড়ায়। বিক্ষোভকারীদের সরাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়তে হয়।

লাম সেসময় বিলটি নিয়ে অগ্রসর হওয়ার ব্যাপারে দৃঢ়তা দেখালেও পরে জ্যেষ্ঠ রাজনীতিক ও উপদেষ্টাদের সঙ্গে কথা বলে পিছু হটার সিদ্ধান্ত নেন বলে জানিয়েছে হংকংয়ের সংবাদমাধ্যম আইকেবল ও সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।

বিলটি স্থগিত করা নিয়ে লাম শনিবার স্থানীয় সময় বিকালে সংবাদ সম্মেলন করবেন বলে ধারণা দিয়েছে টিভিবি ও আইকেবল।

 

এ বিষয়ে হংকংয়ের শীর্ষ নির্বাহীর কার্যালয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের কাছ থেকে সাড়া পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

১৯৯৭ সালে ব্রিটিশদের থেকে চীনের কাছে হস্তান্তরের পর হংকংয়ের ইতিহাসে গত সপ্তাহের ওই প্রতিবাদই সবচেয়ে বড় ছিল বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। যুক্তরাজ্যকে প্রতিশ্রুতি দিলেও নিজেদের ভূখণ্ডভুক্ত হওয়ার পর থেকেই বেইজিং হংকংয়ের গণতান্ত্রিক সংস্কারে বাধা, স্থানীয় নির্বাচনে হস্তক্ষেপ ও বিরোধীদের ওপর তুমুল দমন-নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ সমালোচকদের।

হংকংয়ের কারণেই চীনকে ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থাপনার’ নীতিতে চলতে হচ্ছে। হংকংয়ের গত সপ্তাহের বিক্ষোভ ও সহিংসতায় ‘বিদেশি শক্তির ইন্ধন’ও দেখছে চীনের গণমাধ্যমগুলো।