• ঢাকা
  • রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ২৮, ২০১৯, ১০:৩২ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ২৮, ২০১৯, ০৩:৪৮ পিএম

‍‍‘জয় শ্রী রাম‍‍’ না বলায় ট্রেন থেকে ধাক্কা মুসলিমদের

‍‍‘জয় শ্রী রাম‍‍’ না বলায় ট্রেন থেকে ধাক্কা মুসলিমদের

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতায় কয়েকজন মুসলিমকে মারধর করে ট্রেন থেকে ধাক্কা ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দেশটির এক উগ্রবাদী সংগঠন হিন্দু সংহতির বিরুদ্ধে।

হামলার শিকার মুসলিমদের দুজন 'বিবিসি বাংলা'কে বলেন, 'আমাদের মাথায় টুপি এবং মুখে দাড়ি নিয়ে চলন্ত ট্রেনের কয়েকজন তরুণ টিকা-টিপ্পনী কাটতে থাকে। ঘটনার এক পর্যায়ে তারা আমাদের 'জয় শ্রী রাম' শ্লোগান দিতে বললে আমরা তাতে অস্বীকৃতি জানাই। আর এতেই তারা চড়াও হয়ে মারধর শুরু করে।'

ট্রেনে উগ্রবাদীদের হামলার শিকার দু'জন আরও বলেন, 'ঘটনার পর থেকে আমরা আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছি।' এদের একজন জানান, ট্রেনে উঠার ভয়ে তিনি এখন আর কাজেও যাচ্ছেন না।

এ দিকে বৃহস্পতিবার (২৭ জুন)  'বিবিসি বাংলা'র এক প্রতিবেদনে জানায়, গত মঙ্গলবার (২৫ জুন) দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার ক্যানিং - শিয়ালদহ লোকাল ট্রেনে চেপে রোজকার মতো কাজে যাচ্ছিলেন এই মুসলিম যাত্রীরা। সে দিনই হিন্দু সংহতি নামে একটি কট্টর হিন্দু সংগঠনের জমায়েত ছিল কলকাতায়। যে কারণে তাদের সমর্থকরাও বিভিন্ন স্টেশন থেকে 'জয় শ্রী রাম' শ্লোগান দিতে দিতে ট্রেনে উঠছিলেন। এর কিছুক্ষণ পরেই হিন্দুত্ববাদীদের সংখ্যাটা ট্রেনের প্রতি বগিতে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ জনে গিয়ে পৌছায়।

ট্রেনে হামলার শিকার মুসলিমদের একজন মান্নান মোল্লা 'বিবিসি বাংলা'কে বলছিলেন, 'প্রথমে আমাদের 'জয় শ্রী রাম' শ্লোগানে গলা মেলাতে বলা হয়। এর সঙ্গেই চলতে থাকে পোশাক ও দাড়ি নিয়ে বিভিন্ন ধরণের কটূক্তি; তারা বলে যে এই সব পোশাক পরা যাবে না... ইত্যাদি। আর তারপরেই চলন্ত ট্রেনের মধ্যে শুরু হয় মারধর।'

শাহরুফ হালদার নামে হামলার শিকার আরও একজন বলছিলেন, 'পার্ক সার্কাস স্টেশনে ঢোকার পরে আমি ও আরও কয়েকজন মুসলমান যাত্রী নামার চেষ্টা করছিলাম; আর সেখানেই আমাদের সকলকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়। যদিও এর আগে আমাদের প্রায় সবাইকেই মারধর করা হয়েছিল। এ সময় সংগঠনটির কর্মীরা একজন হিন্দু ধর্মাবলম্বীকেও পিটিয়েছে।'

যদিও রেল পুলিশের দাবি, মারধর আর ধাক্কা মেরে ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার অভিযোগটি এরই মধ্যে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হবে। আহতদের চোট খুব একটা গুরুতর নয়, তবে বাইরে থেকে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে, এদের মধ্যে কারো কারো মাথায় সেলাই দিতে হয়েছে।

এ বিষয়ে হিন্দু সংহতির প্রধান মি. তপন ঘোষের সঙ্গে 'বিবিসি নিউজ' যোগাযোগ করলে তিনি এ প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। তবে সংগঠনটির কয়েকটি সূত্র গণমাধ্যমের কাছে দাবি করে যে, তাদের কোনো কর্মী সমর্থকই নিকৃষ্ট এমন ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন।