• ঢাকা
  • রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ৪, ২০১৯, ০৯:৫৬ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ৪, ২০১৯, ০৯:৫৬ এএম

পশ্চিমবঙ্গের নাম বদল

প্রস্তাব খারিজে আবারো দ্বন্দ্বে কেন্দ্র ও রাজ্য

প্রস্তাব খারিজে আবারো দ্বন্দ্বে কেন্দ্র ও রাজ্য


ওপারে বাংলাদেশ, এপারে বাংলা, চেয়েছিলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু মমতার সেই চাওয়া, সেই দাবি কার্যত খারিজ করে দিয়েছে নরেন্দ্র মোদির সরকার। এর জেরে ফের সংঘাতে জড়িয়ে পরতে যাচ্ছে দুই সরকার। রাজ্যের আর্জিকে মেনে নিতে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন মমতা। কিন্তু তাতে বরফ গলার আশা যে কম, তা মনে করছে রাজনৈতিক মহল।  

দেশ ভাগের সময় থেকেই এই বঙ্গ গোটা বিশ্বে পশ্চিমবঙ্গ নাম পরিচিত, ইংরাজিতে ওয়েস্ট বেঙ্গল। ইংরাজি বর্ণমালায় ডবলু রয়েছে একেবারে শেষের দিকে। তাই সব রাজ্যকে নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার যখন বৈঠক ডাকেন, তখন বর্ণমালা অনুযায়ী ওয়েস্ট বেঙ্গলের প্রতিনিধির ভাষণ দেওয়ার ডাক পরে একেবারে শেষের দিকে। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রয়াত জ্যোতি বসু থেকে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়—সকালেরই যুক্তি, এত রাজ্যের শেষে বলতে ওঠায় সব কথা বলা যায় না। তা শোনার লোকও থাকে কম। বর্ণমালায় ওপরের দিকে থাকলে এই সমস্যা হয়তো হতো না। তাই নাম পরিবর্তন জরুরি।  

মূলত এই যুক্তিতেই ২০০১ সালে রাজ্যের নাম বদলে বঙ্গ করার প্রস্তাব রাখে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সরকার। প্রথমে বাজপেয়ী, পরে কংগ্রেস পরিচালিত ইউপিএ সরকার তাতে কর্ণপাত করেনি। রাজ্যে সরকার বদলায়, ক্ষমতায় এসে ২০১৬ সালে রাজ্যের নাম বাংলায় বাংলা, ইংরাজিতে বেঙ্গল এবং হিন্দিতে বঙ্গাল রাখার প্রস্তাব করেন মমতা। কেন্দ্রকে বলা হয় একটি নাম পাঠাতে। সেই মতো ২০১৮ সালে রাজ্যের নাম ‌‘বাংলা’ করার প্রস্তাব যায় কেন্দ্রের কাছে। এই নিয়ে বিস্তর টানাপড়েনের পর বুধবার (৩ জুলাই) সংসদে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জানিয়ে দেন, নাম বদলের জন্য নানা দিক বিবেচনা করে সংবিধান সংশোধন করতে হবে. অতএব... অতএব রাজ্যের নাম বদলের প্রস্তাব যে বিশ বাঁও জলে, তা একদম পরিষ্কার।

পশ্চিমবঙ্গের নাম বাদল নিয়ে এ রাজ্যের বিভিন্ন পেশার মানুষের মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। একটা অংশ নাম বদল চাইলেও আরেকটি আংশ এখনকার নামই ঠিক আছে বলে মনে করেন। আবার, বিজেপির মতো কংগ্রেসও মনে করে নাম বদলের দরকার নেই। সাধারণের মতও দ্বিধা বিভক্ত। বামেদের অবশ্য নাম বদলে আপত্তি নেই।

কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত রাজ্যের মানুষের পক্ষে অপমানজনক মনে করেন মমতা। প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে তিনি ১১ সাল থেকে ১৮ সাল পর্যন্ত ঘটনাক্রমের উল্লেখ করেন। লোকসভা ভোটের প্রচারেও নাম বদল নিয়ে মোদি সরকারের অনিহার অভিযোগ তুলেছিলেন মমতা। নাম বদলের প্রস্তাব মেনে নেওয়ার আর্জি জানানোর আড়ালে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে অসন্তোষ ব্যক্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্য প্রশাসনের একাংশের মতে, মোদী সরকার যে নাম বদলের প্রস্তাব মেনে নেবে না, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর কথায় তা স্পষ্ট।