• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৭ মে, ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ২৬, ২০১৯, ০৬:৪৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ২৬, ২০১৯, ০৬:৪৮ পিএম

অপর্নাদের চিঠির জবাব

মোদীকে সমর্থন করে পাল্টা চিঠি কঙ্গনাসহ ৬১ জনের

মোদীকে সমর্থন করে পাল্টা চিঠি কঙ্গনাসহ ৬১ জনের
নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কঙ্গনা রানাওয়াত ও প্রসুন যোশী।


দেশ জুড়ে চলতে থাকা গণপিটুনির ঘটনা ও ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান তুলে হাতে অস্ত্র তুলে নেওয়ার প্রবণতার প্রতিবাদে দেশের ৪৯ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে একটি চিঠি লেখেন। তিন দিন আগে লেখা ওই চিঠির জবাবে এবার ৬১ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব পাল্টা চিঠি লিখলেন। এই খোলা চিঠিতে আগের চিঠির প্রেরকদের আক্রমণ করা হয় ‘‘নির্দিষ্ট ক্ষোভ, মিথ্যা বর্ণনা এবং পরিষ্কার রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব”-এর অভিযোগ তুলে। এই নতুন চিঠিটি লিখেছেন সেন্সর বোর্ডের মুখ্য প্রসূন যোশী, বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওয়াত, চিত্র পরিচালক মধুর ভান্ডারকর, অভিনেতা বিবেক অগ্নিহোত্রী এবং ধ্রুপদী নর্তক ও রাজ্যসভার সদস্য সোনাল মানসিং।

চিঠিতে লেখা রয়েছে, ‘‘একটি খোলা চিঠি যেটি প্রকাশিত হয়েছিল ২০১৯ সালের ২৩ জুলাই এবং লেখা হয়েছে নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশে, সেটি আমাদের বিস্মিত করেছে। উনপঞ্চাশ জন স্বঘোষিত ‘অভিভাবক’ ও দেশের ‘চৈতন্যের রক্ষক’ তাদের নির্দিষ্ট উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং পরিষ্কার রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব ও উদ্দেশ্য দেখিয়েছেন। আমাদের মতে নীচে স্বাক্ষর করা এই পত্র একটি মিথ্যে বর্ণনা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অক্লান্ত প্রচেষ্টাকে নঞর্থক ভাবে দেখাতেই চেষ্টা। এই চিঠির স্বাক্ষরকারীরা অতীতে নীরব ছিল যখন উপজাতি এবং প্রান্তিক মানুষরা নকশাল সন্ত্রাসের শিকার হচ্ছিল। তখন তারা নীরব ছিল যখন ভারতকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করা হয়েছে।”

মঙ্গলবার, ৪৯ জন বিশিষ্ট জন যাঁদের মধ্যে রয়েছেন স্বনামধন্য পরিচালক অপর্ণা সেন ও মণি রত্নম এবং ঐতিহাসিক রামচন্দ্র গুহ। তারা প্রধানমন্ত্রীকে লেখা ওই চিঠিতে উদ্বেগ ‌প্রকাশ করেন দেশজুড়ে ঘৃণাজনিত অপরাধ ও সংখ্যালঘুদের প্রতি নৃশংসতার ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

নতুন চিঠির লেখকরা মঙ্গলবারের পত্রপ্রেরকদের কড়া সমালোচনা করেন সরকারের নিন্দা করার জন্য। তাঁরা ওই চিঠির বক্তব্যের বিরোধিতা করে দাবি করেন, মোদি জমানাতেই সবচেয়ে বেশি স্বাধীনতাসহ সরকারের নিন্দা করতে পারছে আমজনতা।

মঙ্গলবারের লেখা চিঠিতে লেখা হয়, ‘‘প্রিয় প্রধানমন্ত্রী... মুসলিম, দলিতসহ অন্যান্য সংখ্যালঘুদের পিটিয়ে মারার ঘটনা শীঘ্রই বন্ধ হওয়া দরকার। আমরা ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর তথ্য দেখে অবাক হয়েছি, সেখানে বলা হয়েছে, ২০১৬-এ নৃশংস এই ধরণের ঘটনার সংখ্যা ৮৪০-এর কম নয়। দোষীদের শাস্তি দেওয়ার হারও নির্দিষ্টহারে কম।”
অপর্ণা সেন বলেন, নির্দিষ্ট কোনও ধর্মের মানুষকে পিটিয়ে মারার ঘটনা নয়, ধর্মের ঊর্দ্ধে উঠে যে কোনও মানুষকেই পিটিয়ে মারার ঘটনা নিয়েই তিনি উদ্বগ্ন। তার কথায়, “মানুষকে পিটিয়ে মারার ঘটনা আমাদের কাছে উদ্বেগের। আমাদের আপত্তি পিটিয়ে মারার ঘটনায়, তিনি মুসলিম হোক বা হিন্দু”। বুধবার একটি সাংবাদি সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

জুন মাসেই ঝাড়খণ্ডে তবরেজ আনসারির হত্যার ঘটনার নিন্দা করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, এই ধরনের সমস্ত অপরাধকে একই ভাবে বিচার করা হবে। এরপর ১৯ জুলাই এক মুসলিম ব্যক্তিকে জোর করে ‘জয় শ্রী রাম’ বলাতে চেয়ে মারধর করা হয়। এক সপ্তাহ আগে উত্তরপ্রদেশের উন্নাও জেলার এক মাদ্রাসার ছাত্রদের ‘জয় শ্রী রাম’ বলতে বলে মারধর করার ঘটনা ঘটে।

৪৯ জনের লেখা ওই চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের তরফে এও বলা হয়েছিল, ‘‘আমাদের চিঠির কোনও রাজনৈতিক রং নেই। আমরা শুধু তার (প্রধানমন্ত্রী) হস্তক্ষেপ চাই।” মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ওই চিঠির বক্তব্যকে সমর্থন করে লেখেন, বক্তব্য ‘প্রায় সঠিক।’

সূত্র : এনডিটিভি

এসজেড

আরও পড়ুন