• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৪ মে, ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জানুয়ারি ১০, ২০২০, ১২:৩৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জানুয়ারি ১০, ২০২০, ১২:৩৭ পিএম

ফের পাল্টি খেলেন মমতা

ফের পাল্টি খেলেন মমতা
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

পশ্চিমবঙ্গে বুধবার বিরোধীদের ডাকা সভায় ব্যাপক সাড়া দেখে সম্ভবত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মনে নতুন আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। অদূর ভবিষ্যতে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের পায়ের তলার মাটিতে ব্যাপক ধস নামবে এবং তার বদলে সিপিআইএম তথা বাম দলগুলো এবং কংগ্রেসের জোট নতুন করে জনমনে প্রভাব বিস্তার করবে, যার পরিণতিতে পশ্চিমবঙ্গের মসনদ থেকে ক্ষমতাচ্যূত হতে পারেন তিনি। এই আতঙ্ক থেকেই তিনি আবার ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে বিজেপি-র দিকে যাওয়ারই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। 

আসলে তিনি নরেন্দ্র মোদীরই এজেন্ট। রাজ্যের বিরোধীরা বারবার এভাবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চালাকির রাজনীতিকে ব্যাখ্যা করে এসেছেন। এবার আর বুঝিয়ে বলার কোনও দরকার পড়লো না। মমতা বৃহস্পতিবার নিজেই জানিয়ে দিলেন, আগামী ১৩ জানুয়ারি দিল্লিতে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুরোর এনআরসি এবং নাগরিকত্ব আইনের বিরোধী সম্মেলনে থাকবেন না। থাকবেন না কোনও আন্দোলনেও।
এই নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় সর্বদলীয় প্রস্তাব আনার জন্য বারবার চাপ সৃষ্টি করেছে বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস। মমতার নির্দেশে স্পিকার বিরোধীদের দাবি অগ্রাহ্য করে গিয়েছেন। তৃণমূল কংগ্রেস নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে কোনও প্রস্তাব আনবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে তৃণমূল নেত্রী এতদিন ধরে এনআরসি নিয়ে রাজ্যের মাঠে-ময়দানে ভাষণ দিচ্ছেন কেন? আসলে সংখ্যালঘু ভোট ধরে রাখার প্রয়াসেই তার এই কায়দা। বস্তুতপক্ষে বুধবার ট্রেড ইউনিয়নগুলোর ডাকা ধর্মঘট ব্যর্থ করার ডাক দিয়ে তিনি নিজেই বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি আসলে কাদের এজেন্ট। 
বৃহস্পতিবার রাজ্য বিধানসভায় বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী এবং বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান যৌথ সাংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেছেন।

মমতা বৃহস্পতিবার টেলিফোনে এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ারের সঙ্গে কথা বলেন। সেখানে তিনি অনুযোগ করেন রাজ্যে নাকি ঘোলা জলে মাছ ধরতে চাইছে সিপিআইএম । রাজ্যে বাম-কংগ্রেসের আন্দোলনে গোঁসা হয়েছে বলে বর্ষীয়ান নেতাকে জানিয়েছেন তিনি। তিনি নাকি একাই আন্দোলন করবেন। বিরোধী শাসিত বহু রাজ্য তাদের বিধানসভায় নয়া নাগরিকত্ব আইন রাজ্যে কার্যকর করতে দেওয়া হবে না---এই প্রস্তাব পাশ করিয়ে নিয়েছে। ব্যাতিক্রম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিরোধী নেতারা বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও তিনি এ নিয়ে উচ্চবাক্য করেননি।

যিনি এতদিন ধরে নাগরিকত্ব আইন ও নাগরিকপঞ্জি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের নানা প্রান্তে মিছিল করেছেন।  তিনি বিধানসভায় প্রস্তাব পাশ করাবেন সেটাই ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু তিনি সে রাস্তায় হাঁটবেন না বলে বর্ষীয়ান নেতা শরদ পাওয়ারকে জানিয়ে দিয়েছেন। রাজ্যে বারবার বাম ও কংগ্রেস বিধানসভায় প্রস্তাব পাশ করানোর জন্য চাপ দিয়ে গেছে। বিরোধী বিধায়করা বিজেনেস কমিটিতে এ বিষয়ে প্রস্তাব আনতে চাইলেও স্পিকার তা খারিজ করে দিয়েছেন। তার এই পদক্ষেপে মোদি সরকারেরই যে সুবিধে হয়ে যাবে, তা বলাই বাহল্য।

এদিন সিপিআইএম পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম বলেছেন, নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছেন মমতা। আর কিছু আড়াল রইলো না। তিনি কোন পক্ষ তা আজ বোঝা গেল। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র বলেছেন, আসলে উনি মোদির চক্ষুশূল হতে চান না। এই সুযোগ নিয়ে বিন্দুমাত্র দেরি করেননি বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেছেন, মমতা বুঝতে পেরেছেন মানুষ আজ নরেন্দ্র মোদির পক্ষে। তাই তিনি বিরোধীদের সঙ্গে থাকতে অস্বীকার করছেন।

বিএস