• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ০৭ মে, ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২, ২০১৯, ০৩:২৩ পিএম

এইচআরডাব্লিউ প্রতিবেদনে মিয়ানমারে `নিপীড়ন আইন` প্রয়োগের তথ্য

এইচআরডাব্লিউ প্রতিবেদনে মিয়ানমারে `নিপীড়ন আইন` প্রয়োগের তথ্য
মিয়ানমারে আটক ২ রয়টার্স সাংবাদিক (ফাইল ফটো)

 

সরকারসহ ক্ষমতাসীন পর্যায়ের সাথে সম্পৃক্ত বিভিন্ন পর্যায়ে চলমান কর্মকাণ্ডের সমালোচকদের শায়েস্তা করার জন্য মিয়ানমারে নিপীড়নমূলক আইন প্রয়োগ করা হচ্ছে বলে এক প্রতিবেদনে তথ্য প্রকাশ করছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। শান্তিতে নোবেলজয়ী অং সান সু চির সরকারের কাছে মুক্তমতের পক্ষে অবস্থান নেয়ার যে প্রত্যাশা করা হয়েছিলো তা দুরাশায় পরিণত হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এ মত প্রকাশ করে মানবাধিকারবিষয়ক সংগঠনটি। সূত্র: রয়টার্স

প্রকাশিত সাওংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, ২০১৬ সালে সু চি দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই দেশটিতে মত প্রকাশের স্বাধীনতা মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হইয়ে আসছে। ‘আশাহরণ: মিয়ানমারে শান্তিপূর্ণ মত প্রকাশের অপরাধকরণ’ শিরোনামে সর্বশেষ প্রতিবেদনে এইচআরডব্লিউ জানায়, বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের কারণে সাংবাদিকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

প্রতিবেদনটির লেখক ও এইচআরডব্লিউর এশিয়াবিষয়ক আইন উপদেষ্টা লিন্ডা লাখধির এক বিবৃতিতে বলেন, ‘অং সান সু চি এবং ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) একটি নতুন মিয়ানমারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কিন্তু তাদের সরকার এখনো শান্তিপূর্ণ মত প্রকাশের ক্ষেত্রে শাস্তি দিচ্ছে এবং তারা নিপীড়নমূলক পুরনো আইন সংশোধনে ব্যর্থ হয়েছে।’

এইচআরডব্লিউর প্রতিবেদন নিয়ে সরকারের এক মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কোনো ম্নতব্য করতে রাজি হননি তিনি, এমন তথ্যই জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

কয়েক দশক ধরে মিয়ানমারের শাসনক্ষমতায় থাকা সেনাবাহিনী মত প্রকাশের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে রেখেছে। ২০১০ সালে ক্ষমতায় আসার পর আধাসামরিক সরকারটি সংস্কারের ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করে, যার মধ্যে ছিল সেন্সরশিপ আইন বাতিল করা।

মিয়ানমারে অ্যাক্টিভিস্ট, সাংবাদিক ও সাধারণ নাগরিকদের ওপর অস্পষ্ট সেসব আইনের প্রয়োগ ঘটাচ্ছে অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন এনএলডি সরকার। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও অনলাইনে কেউ সরকার, সেনাবাহিনী এবং রাখাইন ও কাচিন রাজ্যে নিপীড়নের সমালোচনা করলেই তাকে গ্রেফতার ও বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছে।

মুক্তমতের অধিকার আদায়ের স্থানীয় সংগঠন আথানের তথ্য অনুযায়ী, এনএলডি সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর এ পর্যন্ত ৪৩ জন সাংবাদিককে গ্রেফতার করা হয়েছে।

মিয়ানমারে ভুক্তভোগীদের সাক্ষাত্কার ও ২০১৬ সাল থেকে আইনি ও নীতিমালা পরিবর্তনজনিত বিষয়গুলো বিশ্লেষণের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে বলে জানা যায়। এর আওতায় মিয়ানমারে টেলিযোগাযোগ আইন, শান্তিপূর্ণ জমায়েত ও শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ আইন এবং পেনাল কোডের মতো আইনগুলোর ব্যবহার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমার সরকারের উচিত শান্তিপূর্ণ বক্তৃতা ও জমায়েতের বিরুদ্ধে আইনের ব্যবহার বন্ধ করা এবং স্বাধীন মত, জমায়েত ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার সুরক্ষায় আইনের সংস্কার করা।

রয়টার্সের দুই সাংবাদিক ওয়া লুন ও কিয়াও সু ওকে গত সেপ্টেম্বরে সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির আদালত। ঔপনিবেশিক যুগে প্রণীত সরকারি গোপনীয়তা আইনের আওতায় তাদের এ সাজা দেয়া হয়। রাখাইন প্রদেশে ১০ জন রোহিঙ্গা পুরুষ ও কিশোর হত্যা নিয়ে তদন্ত করছিলেন ওই দুজন সাংবাদিক।

এইচআরডব্লিউর লাখধির বলেন, অং সান সু চি সরকারের হাতে সামরিক জান্তাদের তৈরি আইন বাতিলের সত্যিকারের সুযোগ থাকলেও তিনি তা শান্তিপূর্ণ সমালোচক ও প্রতিবাদকারীদের ওপর ব্যবহার করছেন।

এস_খান