• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মার্চ ১৪, ২০১৯, ০৯:৩৫ এএম

৪৮ বছর ধরে অরক্ষিত গফরগাঁওয়ের বধ্যভূমি

৪৮ বছর ধরে অরক্ষিত গফরগাঁওয়ের বধ্যভূমি

 

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বর্বর পাকবাহিনী এবং তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনী দীর্ঘ ৯মাস মুক্তিকামী বাঙলিদের উপর চালায় ব্যাপক গণহত্যা। ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা মুক্তিযুদ্ধে হানাদার পাকসেনাদের গণহত্যার লোমহর্ষক স্মৃতি বিজড়িত স্থানগুলো ৪৮ বছর পরেও অযন্ত-অবহেলায় পড়ে আছে । অযন্ত-অবহেলায় ঝোপঝাড়ের আড়ালে ঢাকা পড়া ছাড়াও নদীতে দিন দিন বিলীন হয়ে যাচ্ছে  গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধে পাকহানাদার বাহিনীর গণহত্যার কালের স্বাক্ষী হয়ে থাকা বধ্যভূমি গুলো।
 
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পৌরশহরের ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে নীলকরদের ঘাটলা (যা পরবর্তী কালে লঞ্চঘাটা বধ্যভূমি), কাওরাইদ-গয়েশপুর রেলব্রিজ, ফরচুঙ্গি-শিলা রেলব্রিজ, নিগুয়ারী সাইদুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয় সেনাবাহিনীর ক্যাম্প, সুতার চাপর বাজার, প্রসাদপুর, গন্ডগ্রাম, ভারইল, রসুলপুর, বারইগাঁও, পৌরশহরের ইমামবাড়া এলাকা সহ সর্বমোট ১১টি বধ্যভূমির অবস্থানের কথা জানা গেছে। এর মধ্যে লঞ্চঘাটা বধ্যভূমিতে ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের অর্থায়নে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়েছে । বাকী ১০টি বধ্যভূমি রক্ষণাবেক্ষণ তো দূরের কথা আজও সেগুলো চিহ্নিত করা হয়নি। 

এসব বধ্যভূমিতে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ৯মাসের বিভিন্ন সময়ে পাকবাহিনী মুক্তিকামী বাঙালিদের পৈশাচিকভাবে হত্যা করেছে। স্বাধীনতার পরে এসব বধ্যভূমি থেকে অসংখ্য মানুষের মাথার খুলি ও হাড় উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতার দীর্ঘ সময় পরেও বধ্যভূমি গুলো চিহ্নিত ও রক্ষণাবেক্ষণ না করায় মুক্তিযুদ্ধের চাক্ষুষ নিদর্শন ও ইতিহাস থেকে বঞ্চিত হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী প্রজন্ম।
 
উপজেলা সদর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ফরচুঙ্গী-শিলা রেলব্রিজের বধ্যভূমিতে গিয়ে দেখা গেছে রেলব্রিজের উপর দাঁড় করিয়ে গুলি করে মুক্তিকামী বাঙালিদের হত্যা করে লাশগুলো যেখানে ফেলা হতো সেখানে একটি স্লুইস গেট নির্মাণ করা হয়েছে। এর উপর দিয়ে প্রতিদিন হাজারও পথচারী যাতায়াত করলেও ৭১এর সে নিষ্ঠুরতম হত্যাযজ্ঞ সম্পর্কে জানার সুযোগ নেই তা চিহ্নিত হয়নি বিধায়।
 
এ ব্যাপারে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার সেলিম আহমেদ বলেন, পরবর্তী প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানাতে হলে অবিলম্বে বধ্যভূমিগুলো সংরক্ষণ করে সেখানে স্মৃতিসৌধ করা উচিত।

বিএস