• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মার্চ ৭, ২০১৯, ০৯:৩১ এএম

অনুমোদন ছাড়াই লালমনিরহাটে বিক্রি হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার

অনুমোদন ছাড়াই লালমনিরহাটে বিক্রি হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার

 

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় বিস্ফোরক অধিদফতরের অনুমোদন ছাড়াই এবং আইন কানুনের তোয়াক্কা না করে বিক্রয় হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার, পেট্রোলসহ দাহ্য পদার্থ। তাৎক্ষণিক প্রতিকারের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় জনবহুল এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ এই ব্যবসার কারণে যেকোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।

নীতিমালা লঙ্ঘন করে শুধুমাত্র ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে উপজেলার শতাধিক দোকানে বিক্রি করা হচ্ছে এসব গ্যাস সিলিন্ডার। ফলে যেকোন সময় বিস্ফোরণ ও বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। এলপি গ্যাস প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোর ডিলাররা বিস্ফোরক অধিদফতরের সনদ নিলেও খুচরা ব্যবসায়ীরা সিলিন্ডার মজুদ আইন অনুসরণ করছে না। ব্যবসা পরিচালনার সাধারণ ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করলেও ১০টির বেশি সিলিন্ডারে আবশ্যকীয় সনদ নেই তাদের ।

জানা গেছে, সরকারি বিধি মোতাবেক গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রয়ের জন্য কমপক্ষে পাকা মেঝেসহ আধা পাকা ঘর, ফায়ার সার্ভিসের অগ্নিনির্বাপণ সক্ষমতা সংক্রান্ত লাইলেন্সসহ অগ্নিনির্বাপণ সিলিন্ডার এবং মজবুত ও ঝুঁকিমুক্ত সংরক্ষণাগার থাকতে হবে। একজন ব্যবসায়ী ওই সব শর্ত পূরণ করলেই কেবল বিস্ফোরক দ্রব্য বিক্রয়ের নিবন্ধন পাওয়ার যোগ্য হিসেবে তিনি বিবেচিত হবেন। বিস্ফোরক দ্রব্য বিক্রয়ের লাইসেন্স ছাড়া কোন দোকানে দাহ্য পদার্থ বিক্রয় করা যাবে না। নিয়ম অনুযায়ী এলপি গ্যাস, দাহ্য পদার্থ ব্যবহার, বিপণন ও বাজারজাত করতে হলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসায়ীকে বিস্ফোরক অধিদফতরের লাইসেন্স ও অগ্নিনির্বাপণ গ্যাস সিলিন্ডার বাধ্যতামূলক সংরক্ষণ করার কথা। কিন্তু উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারের প্রায় ব্যবসায়ীর কাছেই এলপি গ্যাস বিক্রির কোনো বৈধ লাইসেন্স নেই। আইনের তোয়াক্কা না করে ব্যবসায়ীরা দোকানে ও গুদামে গ্যাস সিলিন্ডার মজুত রেখে তাদের মতো ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া ব্যবসায়ীরা দোকানের সামনের ফুটপাতে যত্রতত্র গ্যাস সিলিন্ডার ছড়িয়ে ছিটিয়ে রেখে বিক্রি করছেন। এর ফলে যে কোন মুহূর্তে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের মাধ্যমে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলায় মুদি দোকান, শো-রুম, ইলেকট্রনিক, ক্রোকারিজ, টেলিকম ও কসমেটিকসসহ বিভিন্ন দোকান মালিকরা খোলামেলা পরিবেশে পেট্রোলিয়াম জাতীয় দাহ্য পদার্থ ও গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করছেন। এছাড়া ওই সব দোকানে ফায়ার সার্ভিসের অগ্নিনির্বাপণ গ্যাস সিলিন্ডার থাকলেও অধিকাংশ সিলিন্ডারের মেয়াদ উত্তীর্ণ। 

উপজেলার বিভিন্ন খুচরা এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের বেশির ভাগ ব্যবসায়ী আইনগত বাধ্যবাধকতা সম্পর্কে জানেন না। ঝুঁকি জেনেও তারা সনদ ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছাড়াই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। কোন কোন ক্ষেত্রে লাইসেন্স প্রাপ্তির দীর্ঘসূত্রতা এড়াতে এবং বিভিন্ন কোম্পানির ডিলারদের বিপণন কৌশলে প্ররোচিত হয়েও তারা আইন অনুসরণ করছেন না।

হাতীবান্ধা ফায়ার সার্ভিসের অফিসার ইনচার্জ মতিয়ার রহমান জানান, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের ৫২ ধারা অনুযায়ী, সেবা গ্রহীতার জীবন বা নিরাপত্তা বিপন্ন হতে পারে এমন কোনো কাজ করলে ৩ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ২ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এ জ্বালানি সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ না করে লাইসেন্স ছাড়া অবৈধভাবে যারা দাহ্য পদার্থ বিক্রি করছে তাদের বিরুদ্ধে শিগগিরই অমরা অভিযান চালাবো।

এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সামিউল আমিন বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। বিস্ফোরক অধিদফরের নাম মাত্র ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে যেসব গ্যাস সিলিন্ডার ও পেট্রোলের দোকান রয়েছে, খুব শিগগিরই অভিযান চালিয়ে তাদের বিরুদ্ধে আইন গত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এআর/এএস