• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মার্চ ১১, ২০১৯, ০৮:৪৯ এএম

স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে এলাকাবাসী

মুন্সীগঞ্জে তামাক চাষে ঝুঁকছেন কৃষক

মুন্সীগঞ্জে তামাক চাষে ঝুঁকছেন কৃষক

 

মুন্সীগঞ্জে বেপরোয়াভাবে তামাক চাষে ঝুঁকে পড়ছেন কৃষকরা। তামাক চাষ হওয়া এলাকাগুলোতে কৃষকদের পাশাপাশি স্বাস্থ্য ঝুঁকির শঙ্কায় রয়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে তামাক চাষে কৃষকদের নিরোৎসাহিত করা হলেও লাভজনক হওয়ায় তামাক চাষ করে যাচ্ছেন কৃষকরা।  

দিন দিন তামাক চাষ এর পরিমাণ বেড়েই চলছে। কৃষকরা দাবি করছে অন্য ফসলের চেয়ে অল্প বিনিয়োগে চাষ করা যায় তামাক, কেউ দাবি করছে পরিশ্রম কম লাগে। অনেকে আবার ধরে রেখেছে বাপ-দাদার ঐতিহ্য। তবে অসচেতনতার কারণে এসব কৃষক ভাবছে না জনসাধারণের স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়। 

সরেজমিনে জেলার টঙ্গীবাড়ী উপজেলায় দেখা যায়, কাঠাদিয়া-শিমুলিয়া, ধীপুর,যশলং, কামারখাড়া, দিঘিরপাড়সহ অন্যান্য এলাকার বিস্তীর্ণ জমিতে প্রচুর পরিমাণে তামাক চাষ হয়েছে । আলু উৎপাদিত এবং অন্যান্য ফসলি জমিতেও চাষ করা হচ্ছে এ তামাক। কোন কোন জমিতে অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি তামাক চাষ করেছে। গত বছরের তুলনায় টঙ্গীবাড়ীতে অধিক পরিমাণ জমিতে তামাকের চাষ করা হয়েছে। 

কৃষকরা জানান, এ বছর স্থানীয়ভাবে বছর প্রায় ১০ একর জমিতে তামাক চাষ করা হয়েছে। বর্তমানে মৌসুমের শেষ মুহুর্তে কৃষকরা তামাক গাছ থেকে পাতা কেটে জমিতে স্তূপ করছেন । স্তূপ করা এসব তামাক পাতা বিক্রির হওয়া পর্যন্ত জমিতেই রোদে শুকানো হবে। শুকানোর সময় তামাকের ডাস্ট বাতাসে ছড়িয়ে এলাকার পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। 

স্থানীয় কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন, রোদে শুকানোর সময় বাতাসে তামাক পাতার গন্ধ আশপাশে ছড়িয়ে পড়ছে। ছড়িয়ে পরছে রোগ জীবাণু। স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে শিশুরাও। এসময় তাদের মুখে কাপড় দিয়ে চলাচল করতে হয়। রোদে শুকানোর সময় তামাক পাতার গন্ধে পথ দিয়ে হাঁটলে নাক, মুখ বন্ধ হয়ে আসে। নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। 

এ প্রসঙ্গে একাধিক তামাক চাষিদের সঙ্গে কথা বললে তারা তামাকের ক্ষতিকারক বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ক্ষতির বিষয়টি আমরা জানি- তবে অনেক বছর যাবত এসব জমিতে তামাক চাষ করে আসা হচ্ছে, বাজারে এর চাহিদা অনেক বেশি তাই উৎপাদন করছি।

এ ব্যাপারে মূলচর এলাকার কৃষক মো. আলী জানান, ৩০ বছর যাবত তামাক চাষ করি, ক্ষতিকর এই তামাক চাষের বদলে যদি লাভজনক ফসল আবাদ করতে আমি আগ্রহী।

এ ব্যাপারে মুন্সীগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে উপ-পরিচালক মো. হুমায়ূন কবীর বলেন, জেলার শুধুমাত্র টঙ্গীবাড়ী উপজেলায় তামাক চাষ হয়। তামাক চাষ কমানোর জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করার পরও তারা চাষ করে যাচ্ছে। কৃষকদের সরিষা, মিষ্টি আলু অন্যান্য রবি শষ্য আবাদের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি ধীরে ধীরে তামাক চাষ আরো কমে আসবে । 

জেলার সিভিল সার্জন ডা. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, তামাক চাষের ফলে ডাস্টগুলো বাতাসের সঙ্গে মিশবে। ডাস্ট হলে এটা ফুসফুসে জমবে। তাতে যক্ষ্মা, শ্বাসনালীতে সমস্যা হবে। পাশাপাশি অন্যান্য অসুস্থতা আরো বাড়াবে। তাই যত দ্রুত সম্ভব তামাক চাষ বন্ধে জোরালো উদ্যোগ নিতে হবে। 

কেএসটি