বিজেএমসি কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা ও উদাসীনতার কারণে বাংলাদেশ জুটমিল আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে বলে জানিয়েছেন
মিলের সিবিএ সভাপতি ইউসুফ আলী ও সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামান।
বুধবার (২১ নভেম্বর) সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান।
নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল শিল্প এলাকায় অবস্থিত বাংলাদেশ জুটমিল। এটি বাংলাদেশ পাটকল
করপোরেশন (বিজেএমসি) নিয়ন্ত্রণাধীন।
তবে পাট সঙ্কটের কারণে ছয় সপ্তাহ ধরে বন্ধ রয়েছে শ্রমিক কর্মচারীদের বেতন। মিলে পাট না থাকায় দৈনিক
উৎপাদন ক্ষমতা ৪২ থেকে ১০ টনে নেমে এসেছে।
জানা যায়, মিলের উৎপাদিত প্রায় ৪০ কোটি টাকা মূল্যের অবিক্রিত পাটজাত পণ্য মজুদ রয়েছে মিলের গুদাম ঘরে।
স্থান সংকোলান না হওয়ায় উৎপাদিত ফিনিশিং বিভাগে যত্রতত্র পড়ে আছে এসব পণ্য। ফলে এসব পাটজাত পণ্য
বিনষ্ট হচ্ছে। পণ্য বিক্রি না হওয়ায় অর্থ সংকটে পড়তে হচ্ছে মিল কর্তৃপক্ষকে।
উৎপাদিত পণ্য বিক্রি বাবদ বিজেএমসির কাছে ৭৩ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে বাংলাদেশ জুট মিল কর্তৃপক্ষের। কিন্তু
বিজেএমসি সময়মত টাকা পরিশোধ না করায় শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন ভাতাদি দিতে সমস্যায় পরতে হয়েছে মিল
কর্তৃপক্ষকে।
এদিকে, বেতন-ভাতা না পেয়ে এক প্রকার মানবেতর জীবন-যাপন করতে হচ্ছে মিলের সাড়ে তিন হাজার শ্রমিক
কর্মচারীদের।
মিলের শ্রমিকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তারা সপ্তাহে মাত্র এক হাজার আটশ থেকে দুই হাজার টাকা মজুরি পান।
কিন্তু একাধিক সপ্তাহের মজুরি বকেয়া থাকায় তাদের আর্থিক কষ্টের মধ্যদিয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে। অনেকে মজুরি না
পেয়ে মিলে আসছেন না।
মিলের সিবিএ সভাপতি ইউসুফ আলী ও সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামান সাংবাদিকেদের আরো জানান, ৫২০
তাঁতের এই জুট মিলটিতে প্রায় সাড়ে তিন হাজার শ্রমিক-কর্মচারী কর্মরত আছেন। পাট না থাকায় ৫২০ তাঁতের মধ্যে
চালু আছে মাত্র ১০০ তাঁত করছেন। বিজেএমসি টাকা না দেয়ায় মিল কর্তৃপক্ষ চলতি সপ্তাহসহ ছয় সপ্তাহ ধরে
শ্রমিকদের মজুরি ও চলতি মাসসহ দুই মাস ধরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ভাতাদি দিতে পারছেন না।
এসব বিষয়ে বাংলাদেশ জুটমিলের মহাব্যবস্থাপক মো. গোলাম রব্বানী জানান, এতো বড় একটি কারখানা
পরিচালনা করতে গিয়ে দেনা-পাওনা থাকতেই পারে। আর কর্তৃপক্ষ কিছু কিছু কর টাকা দিচ্ছে তা থেকে আমরা কিছু
কিছু করে পরিশোধও করছি। পাট ব্যবসায়ীদের কিছু টাকা বকেয়া রয়েছে। এছাড়া বিজেএমসি উৎপাদিত পণ্য বিক্রি
করতে না পারার কারণে বেশি সমস্যা হয়েছে।
টিএফ/বিএস