• ঢাকা
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ২৯, ২০১৯, ১০:১০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ২৯, ২০১৯, ১০:১০ পিএম

৩৫তম দিনে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন প্রত্যাহার

৩৫তম দিনে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন প্রত্যাহার
শিক্ষার্থীদের উল্লাস -ছবি : জাগরণ

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এসএম ইমামুল হকের অপসারণ নতুবা পূর্ণাঙ্গ মেয়াদে ছুটিতে পাঠানোর দাবিতে আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাসের সব থেকে দীর্ঘ মেয়াদী এ আন্দোলনের ৩৫তম দিনে সকল কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী লোকমান হোসেন ও শফিকুল ইসলাম বলেন, উপাচার্যকে ৪৬ দিনের ছুটিতে পাঠানোর খবর পাওয়ার পরপরই শিক্ষার্থীরা উল্লাসে ফেটে পড়েন। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে তাৎক্ষণিক ক্যাম্পাসে একটি বিজয় মিছিলও বের করা হয়। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজয় মিছিল কাল (মঙ্গলবার) করা হবে। 

তারা জানান, শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সংক্ষিপ্ত সভা করেছেন। যেখানে দ্রুত সময়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরে যাওয়ার কথা বলেন এবং ক্যাম্পাসে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর তাগিদ দেয়া হয়। ওই সভার সিদ্বান্ত অনুযায়ী উপাচার্যেরে বিরুদ্ধে চলমান সকল আন্দোলন কর্মসূচি ৩৫তম দিনে প্রত্যাহার করা হয়। 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জহিরুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরু থেকে এ পর্যন্ত শিক্ষক-শিক্ষার্থী কর্মচারীরা বিভিন্ন দাবিতে কর্মসূচি পালন করেছে। তবে টানা এতোদিনের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালনের রেকর্ড এবারই প্রথম। যেখানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির পাশাপাশি শিক্ষকদের সরব উপস্থিতিও লক্ষ করা গেছে।

শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সভা সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে এটাই প্রথম এতো বড় আন্দোলন।  

যে আন্দোলনের সময়কাল যেমন দীর্ঘ ১ মাসের বেশি সময় ধরে চলমান ছিলো, তেমনি আন্দোলনে কোন সহিংসতার ঘটনাও ঘটেনি।  তাই শিক্ষকদের পক্ষ থেকে এ ৩৫ দিনের অহিংস এ আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ দেয়া হয়।  অপরদিকে বিগত দিনে উঠে আসা বিভিন্ন দাবির কথা নতুন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে লিখিত আকারে পেশ করবেন শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির সাথে একমত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল অনিয়ম-অপশাসন ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সুশাসন সৃষ্টির লক্ষে ছাত্রসমাজ এক হয়ে কাজ করার ঘোষণা দেয়া হয় সভায়। এছাড়া উপাচার্যেরে পদে ভবিষ্যতে যিনি আসবেন, তাকে তাদের এসব দাবিগুলোর কথা যেমন জানানো হবে, তেমনি বর্তমান ভিসির ঘনিষ্টজন এবং যারা বিভিন্ন দুর্নীতির সাথে সম্পৃক্ত রয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে।   

সভার শুরুতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি আন্দোলনের সাথে থাকার জন্য বরিশালবাসীকেও ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানো হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মিয়া বলেন, আন্দোলনের সকল কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সম্মিলিতভাবে অতিদ্রুত ক্লাসে ফিরে যাবে। 

গত ২৬ মার্চ (মঙ্গলবার) শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় প্রতিবাদে নামে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এসএম ইমামুল হক শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে উল্লেখ করেন। তারই প্রতিবাদে ২৬ মার্চ থেকেই ভিসির পদত্যাগ অথবা পূর্ণাঙ্গ মেয়াদের ছুটির দাবিতে জোরদার আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা।

এসএমএম