• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০৯ মে, ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ৩১, ২০১৯, ০৯:৪১ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ৩১, ২০১৯, ০৯:৪২ এএম

দুই সিটির উদ্দেশ্যে হাইকোর্ট

‘কেউ জেগে ঘুমালে তাকে জাগানো যায় না’

‘কেউ জেগে ঘুমালে তাকে জাগানো যায় না’


ডেঙ্গু জ্বরের জীবাণুবাহী এডিস মশা নির্মূলে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের ভূমিকায় আবারো অসন্তোষ প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট। বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ার্দীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে দুই সিটির মশা নিধনের বিষয়ে শুনানির সময় গত মঙ্গলবার এই অসন্তোষ প্রকাশ করে।

আদালত বলেন, কেউ যদি জেগে ঘুমায় তাহলে তাকে জাগানো যায় না। দুই সিটি করপোরেশনের অবস্থা হচ্ছে সেই রকম। মশা নিধনের বিষয়টি আপনারা সিরিয়াসলি নিচ্ছেন না। আপনারা ওষুধ ছিটাচ্ছেন কিন্তু কাজ হচ্ছে না। অবস্থা এমন যে, আপনার রাইফেল আছে, গুলি নেই, এমন রাইফেল থেকে কী লাভ? 

দুই সিটি করপোরেশনের আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে আদালত আরও বলেন, ফেব্রুয়ারি মাস থেকে মশা নিধন কার্যক্রম জোরদার করা উচিত ছিলো। কিন্তু আপনারা তা করেননি। আমাদের (আদালত) রুল জারির পর আপনাদের ঘুম ভেঙ্গেছে। এরপর উল্টা-পাল্টা বলতে লাগলেন, পরে সরকারের ধমক খেয়ে চুপ হলেন।

উল্লেখ্য, গত ২৫ জুলাই ওষুধের ডোজ বাড়িয়ে দিয়ে এডিস মশা নির্মূল করতে দুই সিটি করপোরেশনকে তিনদিন সময় দিয়েছিলেন আদালত।

মঙ্গলবার তিনদিনে উত্তর সিটি করপোরেশনের নেয়া কার্যক্রম আদালতে তুলে ধরেন আইনজীবী তৌফিক ইনাম টিপু। তিনি বলেন, মশা নিধনে প্রতিটি ওয়ার্ডে লোকবল বাড়ানো হয়েছে।

আইনজীবী আরও বলেন, চায়না থেকে ওষুধ আনা হবে। সিটি করপোরেশন সীমাবদ্ধতার মধ্যেও সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে মশা নিধনে।

আদালত বলেন, আপনাদের এই কর্মকাণ্ডে জবাবদিহিতা থাকতে হবে। আইনজীবী বলেন, সারা বছরই মশা নিধন কার্যক্রম চলে। এখন মশার প্রকোপ বেড়েছে। জবাবে আদালত বলেন, যদি সারা বছর কার্যক্রম চলে, তাহলে প্রকোপ বাড়বে কেন?

জবাবে আইনজীবী বলেন, নতুন একটি ওষুধ আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আজ হয়তো লাইসেন্সটা পেয়ে যাবে। ১-২ সপ্তাহের মধ্যে হয়তো ওষুধ চলে আসবে। সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে বিষয়টি মনিটর করা হচ্ছে।

আদালত বলেন, ভারতেও ওষুধ রয়েছে, সেখান থেকে দ্রুত ওষুধ আনা যেতে পারে।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাইনুল হাসানকে আদালত বলেন, ঢাকার বাইরে ডেঙ্গুর বিস্তার লাভ করেছে। এ ব্যাপারে সরকার কী করছে? আমরা কী প্রত্যেক দপ্তরের লোকদের ডেকে এনে তাদের বক্তব্য শুনব?

মাইনুল হাসান আদালতকে বলেন, ডেঙ্গু বর্তমানে যে আকার ধারণ করেছে, তাতে সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে নিয়ন্ত্রণে রাখতে। যদি এই প্রচেষ্টা গ্রহণ করা না হত তাহলে আরো বড় আকার ধারণ করত। তবে পুরনো ওষুধ যথেষ্ট কার্যকর হচ্ছে না। এর পেছনে অনেক কারণ থাকতে পারে।

আদালত বলে, অর্থমন্ত্রী বলছে ঢাকার মশা মারবে সিটি করপোরেশন। তাহলে দেশের মশা কে মারবে? আমরা নতুন ওষুধ ক্রয় নিয়ে কোন দপ্তর বা বিভাগের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি দেখতে চাই না।

দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা বলেন, বর্তমান অবস্থায় সরকার দুই সিটি করপোরেশনকে নতুন ওষুধ এনে দিলে ভালো হয়। তাহলে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা থাকবে না।

আদালত বলেন, ওষুধের ডোজ বাড়ানোয় মশা মরেছে?

আইনজীবী বলেন, মনে হয় কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ফলাফল পেতে আরো সময় লাগবে।

আদালত বলেন, হাসপাতালে যে হারে প্রতিদিন রোগী ভর্তি হচ্ছে, তাতে বোঝা যায় ওষুধ কতটা কার্যকর হচ্ছে।

এরপর আদালত মশা নিধনে নতুন ওষুধ কবে দেশে আনা হবে সেই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য এফিডেভিট আকারে আগামী বৃহস্পতিবার আদালতকে জানাতে নির্দেশ দেন।

এমএ/আরআই 

আরও পড়ুন