অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) দোকান বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে ডিএসসিসির প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ইউসুফ আলী সরদারের বিরুদ্ধে।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি একটি সিন্ডিকেট তৈরি করে অবৈধভাবে নিজেদের লোকদের দোকান বরাদ্দ নিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
জানা গেছে, ২০১৫ সালে ফুলবাড়িয়া মার্কেটে দোকান বরাদ্দ দেয়ার জন্য পত্রিকায় দরপত্র আহবান করা হয়। নিয়ম মাফিক রাজিব ঘরামী ফুলবাড়িয়া মার্কেটে ছয় তলায় দোকান বরাদ্দের জন্য ২ লাখ টাকার পে-অর্ডারসহ যাবতীয় কাগজপত্রসহ মেয়র বরাবরে আবেদন জমা দেন। বিধিবাম ওই সময় আদালতে দোকান বরাদ্দ দেয়ার বিষয়ে বিধিনিষেধ আরোপ করলে বরাদ্দ স্থগিত হয়। পুনরায় পত্রিকায় দরপত্র আহবান করা হয়। রাজিব ঘরামী একই দোকানের জন্য আরও এক লাখ টাকার পে-অর্ডার মেয়র বরাবর জমা দেন। কিন্ত প্রায় ৪ বছর পেরিয়ে গেলেও হলেও তার নামে দোকান বরাদ্দ হয় নি কিংবা ভবিষ্যতে পাবেন কি-না জানা যায়নি।
সংশ্লিষ্ট বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এরই মধ্যে ফুলবাড়িয়া মার্কেটে দোকান বরাদ্দ দেয়া শেষ হয়ে গেছে। রাজিব ঘরামী বরাদ্দ পান নি। কিন্তু তার পে-অর্ডারে কি অবস্থা। আদৌ কি তার নামে কোনও বরাদ্দ দেয়া হবে কি? এ ধরনের এক প্রশ্নে জবাবে রাজস্ব বিভাগের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিবেদককে জানান, যারা বরাদ্দ পান নি তাদের পে-অর্ডার ফেরত দেয়া হয়েছে।
ওই কর্মকর্তা এই প্রতিবেদককে আরও জানান, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ও বরাদ্দ কমিটির প্রধান ইউসুফ আলী সরদারের কারণে যোগ্য ব্যক্তিরা দোকান বরাদ্দ পান নি। তিনি সিন্ডিকেট করে প্রতি দোকানের অনুকূলে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে তার পচ্ছন্দের লোকদের বরাদ্দ দেয়া দিয়েছেন। যারা ঘুষ দিচ্ছে না তাদের নামে বরাদ্দ তো দূরের কথা, কমিটির সভাতেও নাম আসে না।
জানা গেছে, তিনি বিএনপি সরকারের আমলে চাকরিতে যোগ দেন। মেয়র হানিফের সময়কালে তিনি তার কাছের লোক বনে যান। অনুরূপ সাদেক হোসেন খোকার সময়েও খোলস পাল্টে যায় তার। ১/১১ সময় তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির জন্য দুদকে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলা ধামাচাপা দিয়ে রাখা হয়েছে। দুদকের মামলা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য ডিএসসিসির দোকান মালিক সমিতির কাছে ৩ কোটি টাকা আদায় করার চাঞ্চল্যকর তথ্যও ফাঁস হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে মালিক সমিতির একজন নেতা দৈনিক জাগরণকে বলেন, ইউসুফ আলী সরদারের সিন্ডিকেটের কারণে আমরা সাধারণ মানুষ খুবই অসহায়। ঘুষ দিলে বরাদ্দ, না দিলে ফাইল ধামাচাপা দিয়ে রাখা হয়। দোকান বরাদ্দ নিয়ে কথা বলতেও চান না ঘুষ না পেলে।
এ ব্যাপারে প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ও বরাদ্দ কমিটির প্রধান ইউসুফ আলী সরদারের বক্তব্যের জন্য নানা মাধ্যমে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায় নি।
টিএইচ/ এসএমএম