• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৫, ২০১৯, ০৯:৩০ এএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ৫, ২০১৯, ০৯:৩০ এএম

ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ প্রাঙ্গণেই রাম মন্দির!

ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ প্রাঙ্গণেই রাম মন্দির!

সাম্প্রদায়িক মহামিলনের এক ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে পরিণত হতে যাচ্ছে অবতার শ্রী রামচন্দ্রের জন্মভূমিখ্যাত, ভারতের অযোধ্যায় অবস্থিত ঐতিহ্যবাহি বাবরি মসজিদ প্রাঙ্গণ। সকল বিতর্ক এক পাশে ঠেলে মসজিদ প্রাঙ্গণেই অবতার রামচন্দ্রের মন্দির প্রতিষ্ঠায় মুসলিমপক্ষের সম্মতি প্রকাশের মধ্য দিয়ে এই ইতিহাস সৃষ্টির পটভূমি রচিত হলো।

বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) ভারতীয় বার্তাসংস্থা দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া প্রকাশিত এক সংবাদে এই চমকপ্রদ তথ্য উপস্থাপন করা হয়। প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, ‘‘আলোচিত রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ জমি বিতর্ক মামলার ১৯তম দিনের শুনানিকালে এই ঐতিহাসিক প্রস্তাবনার কথা জানান- মামলায় মুসলিমপক্ষ, সুন্নি ওয়াকফা বোর্ডের আইনজীবী রাজিব ধাওয়ান। তার এই মন্তব্যের পর পরই পুরো আদালত প্রাঙ্গণ সরব হয়ে ওঠে। আদলতে নিজের বক্তব্য উপস্থাপনকালে আইনজীবী রাজীব ধাওয়ান বলেন, যৌথভাবে হিন্দু-মুসলিম উভয়ের উপাসনালয় হিসেবে একই প্রাঙ্গণে মন্দির ও মসজিদ প্রতিষ্ঠায় কোনও আপত্তি নেই মুসলিম পক্ষের। বাবরি মসজিদ প্রাঙ্গণ হিসেবে সুন্নি ওয়াকফা বোর্ডের নামে বরাদ্দ পাওয়া এই বিতর্কিত জমিটির নির্ধারিত অংশ বোর্ডের নামে রেখেই সেখানে অবতার রামচন্দ্রের উপসনালয় হিসেবে মন্দির প্রতিষ্ঠা করার পক্ষে সম্মতি প্রকাশ করেছে মুসলমানরা। তিনি বলেন, ‘আমরা একত্রে অবস্থান নিতেই পারি। আর সে ব্যাপারে মুসলিমপক্ষের আপত্তিও নেই।’

‘‘সুদীর্ঘ সময় ধরে যে বিষয়টি উপমহাদেশের বুকে রক্তাক্ত সাম্প্রদায়িক বৈরিতার ঐতিহ্য বয়ে চলছে তার প্রেক্ষিতে একপক্ষের এমন প্রস্তাবনা ইতিবাচক। আর যদি সত্যিই এমন আদর্শ সাম্প্রদায়িক মেলবন্ধন সম্ভব হয়, তবে সেটি বিশ্বের ইতিহাসে অসাম্প্রদায়িক ভ্রাতৃত্বের এক অনন্য ইতিহাস রচনা করবে’

..........................................................

নৃতাত্ত্বিক অনুসন্ধানে এ কথার প্রমাণ পাওয়া গেছে, তৎকালীন বাবরি মসজিদের বহিঃপ্রাঙ্গণে নির্মিত চাবুত্রায় (উপাস্য প্রতিমা স্থাপনের লক্ষ্যে নির্মিত কোঠা) রামচন্দ্রের প্রতিমা স্থাপিত ছিলো। একই জমিতে মসজিদ ও অবতার রামচন্দ্রের মন্দির প্রতিষ্ঠায় মুসলমানদের অনাপত্তি প্রকাশের প্রসঙ্গে আদালতের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘প্রতিমা ছাড়া রামচন্দ্রের উপাসনা সম্ভব নয়। ইসলামিক শরিয়াতি আইনের বিধান অনুসারে যা অগ্রহণযোগ্য। প্রতিমা স্থাপিত হলে কোনও স্থাপনা মসজিদ হিসেবে গণ্য হবে কি-না এ নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। সে ক্ষেত্রে এই যৌথ অবস্থান সম্ভব নয় বলেও জানায় বিচারকদের বেঞ্চ।

এ বিষয়ে আইনজীবী ধাওয়ান বলেন, ‘এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই, কোরআনিক আইন (ইসলামিক শরীয়াহ আইন)- বিধান হিসেবে আদর্শ। তবে ভারতের প্রচলিত আইনের প্রেক্ষিতে কোরআনিক বিধানের আধুনিক ব্যবহার কিভাবে নিশ্চিত করা যায় তা উচ্চ আদালতের এখতিয়ার।

বাবরি মসজিদ জমি বিতর্ক মামলার প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ-এর নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যর সাংবিধানিক বেঞ্চের উপস্থিতে এই শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি সৃষ্টির ক্ষেত্রে সম্ভাব্য প্রস্তাবনাটি যাচাই ও আইন অনুসারে তার রীতি নির্ধারনের কথা বলা হয়।

বিশিষ্টজনরা বলছেন, সুদীর্ঘ সময় ধরে যে বিষয়টি উপমহাদেশের বুকে রক্তাক্ত সাম্প্রদায়িক বৈরিতার ঐতিহ্য বয়ে চলছে তার প্রেক্ষিতে একপক্ষের এমন প্রস্তাবনা ইতিবাচক। আর যদি সত্যিই এমন আদর্শ সাম্প্রদায়িক মেলবন্ধন সম্ভব হয়, তবে সেটি বিশ্বের ইতিহাসে অসাম্প্রদায়িক ভ্রাতৃত্বের এক অনন্য ইতিহাস রচনা করবে।

এসকে/এসএমএম