• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ২১, ২০১৯, ০৫:৫২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ২১, ২০১৯, ০৬:১৫ পিএম

বিদায় কালিদাস কর্মকার

বিদায় কালিদাস কর্মকার
শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী-ছবি : জাগরণ

শেষ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে এই নশ্বর থেকে চিরবিদায় নিলেন একুশে পদক প্রাপ্ত ও আন্তর্জাতিকখ্যাতি সম্পন্ন চিত্রশিল্পী কালিদাস কর্মকার। দুপুরে তার শেষকৃৎ সম্পন্ন হয়েছে।

এর আগে সোমবার (২১ অক্টোবর) সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ এবং ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শিল্পীর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।  

শহীদ মিনার থেকে দুপুর সাড়ে ১২টায় শিল্পীর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় রাজধানীর সবুজবাগের শ্মশানঘাটে। সেখানেই তার শেষকৃৎ সম্পন্ন হয়। এ সময় তার পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।  

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের গগন শিরিষের তলে নাগরিক শোকাঞ্জলি পর্বে শিল্পীর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন আওয়ামী লীগ, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, জাতীয় জাদুঘর, শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, জাতীয় কবিতা পরিষদ, সম্প্রীতি বাংলাদেশ, বেঙ্গল ফাউন্ডেশন, ঢাকা গ্যালারি, গ্যালারি কসমসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দ।

শেষ বিদায় জানাতে ছুটে এসেছিলেন তার দীর্ঘদিনের বন্ধু, ভক্ত ও শুভানুধ্যায়ীরা।

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও চারুশিল্পী সংসদের যৌথ উদ্যোগে নাগরিক শোকাঞ্জলিতে অংশ নিয়েছেন কালিদাস কর্মকারের দীর্ঘদিনের শিল্পী বন্ধুরা। তারা এ সময় অশ্রুজলে বিদায় জানান এক মহান চিত্রশিল্পীকে।

শিল্পী জীবনের মূল্যায়ণ করে ভাস্কর হামিদুজ্জামান খান বলেন, সত্যিকার অর্থেই একজন আন্তর্জাতিকমানের শিল্পী ছিলেন কালিদাস কর্মকার। তার সাথে আমার অনেক স্মৃতি আছে। এই মুহূর্তে সব বলতে পারছি না। তবে এটা বলবো তার শিল্পকর্ম নতুন প্রজন্মকে অন্যরকমভাবে উৎসাহিত করে। শিল্পীকর্মের আধুনিকতম আন্দোলনের সূচনা করে গেছেন তিনিই। আশা করি তার দেখানো পথ অনুসরণ করে এদেশের চিত্রকলা আরও বহুদূরে যাবে।

শিল্পী হাশেম খান বলেন, ছবি আঁকা এবং অন্যান্য কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মানুষকে আনন্দ দিতে ভালোবাসতেন কালিদাস কর্মকার। ছবির মাধ্যমে প্রাণবন্ত করে তুলতেন মানুষকে। দেশের চিত্রকলার উন্নয়নে তিনি যে সব কাজ করে গেছেন, তাকে কেউ এসব দায়িত্ব দেয়নি, তিনি নিজে এই দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন।

শিল্পী মনিরুল ইসলাম স্মৃতিচারণ করে বলেন, কালিদাস খুব ফ্রি লাইফ নিয়ে চলতেন। যখন ইচ্ছা আমেরিকা বা স্পেনে চলে গেছেন। কিন্তু তিনি যেখানেই থাকুন না কেন সবসময় বাংলাদেশের খোঁজ রাখতেন। মন পড়ে থাকতো এই সবুজ বাংলায়। তার চিত্রকর্মগুলোতে সে সব বিষয়গুলো বেশ ভালোভাবেই ধরা দিতো অন্যান্য অনুষঙ্গের মতো। 

শিল্পী মোস্তফা আশরাফ বলেন, বারবার করে তিনি বলতেন আমাদের একটা জাতীয় চিত্রশালা হতে হবে, যেখানে আমাদের প্রতিটা আর্টিস্ট যারা এই দেশের ছবি এঁকে গেছেন তাদের ছবিকে সেখানে সংরক্ষণ করা হবে। একটি ন্যাশনাল আর্ট গ্যালারির স্বপ্ন দেখেছিলেন বড় অসময়ে চলে এই বরেণ্য শিল্পী কালিদাস কর্মকার।

শ্রদ্ধা নিবেদন করতে এসেছিলেন ডাকসুর সাবেক ভিপি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আখতারুজ্জামান। তিনি বলেন, শিল্পী কালিদাস চিত্রকর্মের বহুশাখা ও বহুমাত্রা দেশ-বিদেশে তার বিচরণ ঘটিয়েছেন এবং প্রত্যেক জায়গায় বাংলাদেশের মর্যাদাকে তুলে ধরেছেন উঁচুতে। তার চিত্রকর্ম এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা তাকে আগামী প্রজম্মের কাছে বাঁচিয়ে রাখবে প্রত্যাশা করি।

১৮ অক্টোবর (শুক্রবার)  একুশে পদকপ্রাপ্ত চিত্রশিল্পী না ফেরার দেশে পাড়ি জমান কালিদাস কর্মকার।

এসএমএম

আরও পড়ুন