• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৮, ২০২০, ০৮:১০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ডিসেম্বর ২০, ২০২০, ১০:৪৪ এএম

জাতীয় পতাকা বিকৃতি

দায়িত্বহীনতা ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ শিক্ষাবিদদের

দায়িত্বহীনতা ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ শিক্ষাবিদদের

বিজয় দিবসে রংপুরে জাতীয় পতাকার বিকৃত উপস্থাপনকে কেন্দ্র করে আলোচনা সমালোচনা চলছে দেশজুড়ে। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষকদের ছবিতে পতাকায় লাল বৃত্তের পরিবর্তে চতুষ্কোণ আকৃতি ব্যবহার করা নিয়ে এই বিতর্কের শুরু। এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রংপুর জেলা প্রশাসন। তবে মূল ঘটনার পেছনে দায়িত্বহীনতা ও গভীর ষড়যন্ত্র দেখছেন শিক্ষাবিদরা। অনেকেই বলছেন, জাতীয় পতাকা অবমাননাকারী হিসেবে তাদের শাস্তি হওয়া উচিত।

লেখক সাংবাদিক আফসান চৌধুরী জাগরণকে বলেন, “একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন কাজ ঘটতে পারে পারে দেখে খুবই বিস্মিত হয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে যে কোন নিয়ম কানুন নাই সেটিই এর মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়। যারা বিকৃত এ পতাকাটি নিয়ে ছবি তুললো আর যারা এটি তৈরি করলো তারা আসলে কি প্রমাণ করতে চায়? আমার তো মনে হচ্ছে এটি পরিকল্পিত। এর মধ্যে গভীর কোন ষড়যন্ত্র লুকিয়ে আছে কি না সেটা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। আগামীতে কেউ যেন এমন ভুল না করে সেটিও নিশ্চিত করতে হবে।”

এ ঘটনায় একাত্তরের ঘাতক দালাল নিমূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, “এগুলো ধারাবাহিক ষড়যন্ত্রের অংশ। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, ইতিহাস, স্বাধীনতা, শহীদ মিনার সংবিধানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। সম্প্রতি বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়েও ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। আমি মনে করি জাতীয় পতাকা অবমাননার দণ্ডবিধি আইনেই এর শাস্তি হওয়া উচিত।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের এমন কাণ্ডে হতাশা প্রকাশ করেছেন কবি অসীম সাহা। তিনি বলেন, “নি:সন্দেহে এটি জঘন্যতম অপরাধ। যারা এ কাজ করেছে এরা মোটেই স্বাধীনতার পক্ষের লোক নয়। এটা ইচ্ছাকৃতভাবেই করা হয়েছে। জাতীয় পতাকাকে বিকৃত করে এরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভুলুণ্ঠিত করতে চায়। এর পরিকল্পনাকারী এবং বাস্তবায়নকারী সকলের বিরুদ্ধেই রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ আনা উচিত। কারণ, জাতীয় পতাকা নুন্যতম বিকৃতি করার অধিকার কারো নেই।”

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বিকৃত জাতীয় পতাকা সঙ্গে শিক্ষকদের ছবি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তীব্র সমালোচনা চলছে। ছবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তাবিউর রহমান প্রধান, বাংলা বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. পরিমল চন্দ্র বর্মন, ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক শামীম হোসাইন, ইতিহাসের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রভাষক সোহাগ আলী, মার্কেটিং বিভাগের সহকারি অধ্যাপক, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মাসুদুল হাসান, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক রাম প্রসাদ, সহকারী অধ্যাপক কাইয়ুম এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বাসক রহমতউল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।

ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে শুক্রবার তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন জেলা প্রশাসক আসিব আহসান। এর তদন্ত প্রতিবেদন তিন কার্যদিবসের মধ্যে দাখিলের জন্য বলা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন