• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মার্চ ১৭, ২০২১, ০৮:৩৫ এএম
সর্বশেষ আপডেট : মার্চ ১৭, ২০২১, ০৯:১৩ এএম

আজ মহান নেতার জন্মদিন

আজ মহান নেতার জন্মদিন

জুলিও কুরি পদকে ভূষিত, বিবিসির জরিপে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি, একটি জাতির প্রতিষ্ঠাতা, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট যে মানুষটি বিপথগামী সেনাদের হাতে স্বপরিবারে নিহত হন সেই মহান নেতার জন্মদিন আজ। একই সঙ্গে জাতীয় শিশু দিবস আজ। দিনটিকে সরকারি ছুটিও ঘোষণা করা হয়েছে।

বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম  পরিবারে জন্ম নেন। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। ১৯৪২ সালে গোপালগঞ্জ মিশনারি স্কুল থেকে ম্যাট্রিক, ১৯৪৪ সালে কলকাতার ইসলামিয়া কলেজ থেকে আইএ এবং একই কলেজ থেকে ১৯৪৭ সালে বিএ পাস করেন। এরই মধ্যে ১৯৪৬ সালে ইসলামিয়া কলেজ ছাত্র  সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন বঙ্গবন্ধু।

ভারত বিভাগের পর শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে ১৯৪৯ সালের প্রথম দিকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়।

১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি, পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একজন অন্যতম প্রধান ছাত্র নেতায় পরিণত হন শেখ মুজিব।

হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং মওলানা ভাসানী ১৯৪৯ সালে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠন করার পর শেখ মুজিবুর রহমান মুসলিম লীগ ছেড়ে দিয়ে নতুন দলে যোগ দেন এবং তাঁকে পূর্ব পাকিস্তান অংশের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করা হয়।

পরে যুক্তফ্রন্টের টিকেটে ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে গোপালগঞ্জ আসন থেকে বিজয়ী হয়েছিলেন শেখ মুজিব।

হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুর পর ১৯৬৪ সালে তিনি আওয়ামী লীগকে পুনরুজ্জীবিত করার দায়িত্ব নেন। ১৯৬৬ সালের ৫ ও ৬  ফেব্রুয়ারি লাহোরে অনুষ্ঠিত বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর এক সম্মেলনে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব পাকিস্তানে  পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে "ছয় দফা দাবি" পেশ করেন।

১৯৬৯ সালের ৫ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত জনসভায় শেখ মুজিব ঘোষণা করেন এখন থেকে পূর্ব পাকিস্তানকে "বাংলাদেশ" নামে ডাকা হবে।

১৯৭০ সালের নির্বাচনে তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ জাতীয় এবং প্রাদেশিক আইনসভায় নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে।

১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে এক জনসভায় স্বাধীনতার ডাক দেন মহান এই নেতা এবং জনগণকে সর্বাত্মক অসহযোগ  আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করলেন।

২৫ মার্চ রাতে শেখ মুজিবকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হয় পশ্চিম পাকিস্তানে। ফয়সালাবাদের একটি জেলে কড়া নিরাপত্তায় রাখা হয়। কারাবন্দি থেকেও আত্ম-হুঙ্কারে উজ্জীবিত ছিলেন এই নেতা। 

১৯৭১ সালে ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পায়। কিন্তু প্রিয় নেতাকে ছাড়া স্বাধীন দেশের মানুষের কাছে বিজয় যেন খানিকটা ম্লান হয়ে যায়। মহান নেতা মুক্তিতে প্রহর গুণতে থাকে স্বাধীন বাংলার মানুষ। অবশেষে ১৯৭২ এর ১০ জানুয়ারি, কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীন  বাংলাদেশে ফিরে আসেন শেখ মুজিবুর রহমান। তাই এই দিনটিকে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

এরপর অন্তর্বর্তীকালীন রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেন শেখ মুজিবর রহমান। অল্পদিনের মধ্যেই তিনি স্বাধীন বাংলার প্রধানমন্ত্রী হয়ে দায়িত্ব নেন কোটি বাঙালির।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্মেছেন এই মাটিতে, ভালোবেসেছেন দেশের মানুষকে, যার জন্ম না হলে জন্ম হতো না স্বাধীন বাঙলার, যার জন্ম না হলে দেশের মানুষ স্বাধীনভাবে স্বপ্ন দেখতে পারতেন না। মহান এই বীর নেতার জন্মদিনে তাঁর প্রতি রইল অসংখ্য শ্রদ্ধা।